আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। আর এ নিয়ে মাঠে নেমেছেন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডেমোক্র্যাট নেত্রী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান নেতা সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যেই গুঞ্জন উঠেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গোপনে হস্তক্ষেপ করতে চেষ্টা শুরু করেছে রাশিয়া।
গত ৬ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ভোটারদের ওপর প্রভাব ফেলতে চাইছে রাশিয়া। এ জন্য তারা এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের কাজে লাগানো শুরু করেছে। এটি রাশিয়ার বহুল প্রচলিত পন্থা।
জ্যেষ্ঠ ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে মনস্তাত্ত্বিক একটা খেলা খেলে রাশিয়া। বিভিন্ন বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এতে মার্কিনদের মধ্যে ক্ষোভ বেড়ে যায়, সামাজিক ভাঙন শুরু হয় এবং সরকারের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা ইস্যুতে বিভিন্ন প্রশ্ন আসতে থাকে।
এর আগে গত জুলাইয়েও এমন কথাই বলেছিলেন আরেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তিনি তখন রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা এ ধরনের কৌশল দমাতে কাজ করছি। আমাদের দেশের মানুষদের বুঝতে হবে, তারা অনলাইনে যা পড়ছে তা বাইরের দেশের প্রচারণা হতে পারে। এসব প্রচারণায় শুধু বিদেশিরা যুক্ত থাকবেন এমন নয়। এতে মার্কিন নাগরিকও জড়িত থাকতে পারেন।’
ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর (বুধবার) বাইডেন প্রশাসন রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাবিত করার ব্যাপক প্রচেষ্টার অভিযোগ এনেছে। দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড বলেন, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া ব্যবহার করে আমেরিকান ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে ভুয়া তথ্য এবং প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর প্রচেষ্টার পটভূমিতে বিভিন্ন পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।
পদক্ষেপগুলোর মধ্যে আছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় চ্যানেল আরটির (রাশিয়া টুডে) শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা। আরটিকে আগে ‘বিদেশি এজেন্ট’ হিসেবে রেজিস্টার করতে হয়েছিল এবং তাদের ওপর ভিসা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।
একটি ফৌজদারি মামলায় আরটির দুজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আমেরিকার টেনেসি-ভিত্তিক একটি কন্টেন্ট তৈরির কোম্পানিকে রুশ প্রোপাগান্ডামূলক দুই হাজার ভিডিও প্রকাশ করার জন্য গোপনে অর্থায়ন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, এ জন্য লরেন চেন ও লিয়াম দনোভান নামের দুজন মিডিয়া ব্যবসায়ীকে ১ কোটি মার্কিন ডলারও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ দুজন পরে মার্কিন কনজারভেটিভ ইনফ্লুয়েন্সারদের টাকা দিতেন। আর বলা হতো ভিডিও ও পোস্টে যেন তাদের মতো করে কথা বলা হয়। এ ব্যাপারে দুজনের কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে, এসব ব্যাপারে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এর আগে বেশ কয়েকবার মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ২০১৬ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হন। এবারও তিনি নির্বাচনে লড়ছেন।
ঠিকানা/এসআর