নাটকীয়ভাবে ডেমোক্র্যাট দলের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার পর প্রথম টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে কমলা হ্যারিস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে তৈরি হওয়া ইতিহাসের পাতা উল্টানোর জন্য তৈরি হয়ে আছে। পাশাপাশি দেশের নাগরিকরা নতুন পথে যাত্রার জন্যও প্রস্তুত বলে উল্লেখ করেন তিনি। খবর এএফপির।
আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএনে ২৯ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) দেওয়া সাক্ষাৎকারে কমলা হ্যারিস ছিলেন মধ্যমণি। বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান অবৈধ অভিবাসনের প্রসঙ্গে তিনি কঠোর হবেন এবং তেল-গ্যাস উত্তোলনের জন্য বিতর্কিত ‘ফ্র্যাকিং’ পদ্ধতির প্রতি তার সমর্থন থাকবে। তবে তিনি এটাও বলেন, দীর্ঘদিনের উদারপন্থি মূল্যবোধকে তিনি ত্যাগ করতে পারবেন না।
প্রথম নারী, কৃষ্ণাঙ্গ ও দক্ষিণ এশিয়ার বংশোদ্ভূত বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস অভিযোগ করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি এজেন্ডা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন এবং এর মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের গুণাগুণ ও শক্তিমত্তাকে খাটো করছেন, সত্যিকার অর্থে তিনি জাতিকে বিভক্ত করছেন।
এ প্রসঙ্গে কমলা হ্যারিস বলেন, ‘আমি মনে করি, এ বিষয়ে জনগণ ইতিহাসের পাতা উল্টে দেবে। জনগণ সামনের নতুন পথে যাত্রার জন্য প্রস্তুত।’
রানিং মেট টিম ওয়াল্টজকে সঙ্গে নিয়ে সিএনএনের ওই অনুষ্ঠানে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস জানান, তিনি নির্বাচিত হলে তার মন্ত্রিসভায় একজন রিপাবলিকান সদস্যকে দায়িত্ব দেবেন।
এদিকে স্যুইং স্টেট মিশিগানে এক সমাবেশে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বক্তব্যে কমলা হ্যারিসকে সবচেয়ে বড় ‘ডিগবাজি’ দেওয়া লোক হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘আমার কাছে তাকে কোনো নেতাই মনে হয় না।’
কমলা হ্যারিস edin তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও সমালোচনাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। যদিও তিনি একসময় ফ্র্যাকিং পদ্ধতির বিরুদ্ধে তার অবস্থান তুলে ধরেছিলেন। তবে উচ্চ চাপে তরল পদার্থ নিঃসরণের মাধ্যমে খনি থেকে তেল-গ্যাস উত্তোলন প্রক্রিয়া বা ফ্র্যাকিংয়ের পক্ষে এখন তিনি তার অবস্থান তুলে ধরছেন। পাশাপাশি মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে তিনি এখন কঠোর হওয়ার কথা বলছেন।
কমলা হ্যারিস বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে আমি ফ্র্যাকিং বন্ধ করবো না।’ এর মাধ্যমে জীবাশ্ম জ্বালানি সমৃদ্ধ অঙ্গরাজ্য পেনসিলভানিয়ার খনিজ উত্তোলন প্রসঙ্গে তিনি তার অবস্থান তুলে ধরেন। এই অঙ্গরাজ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাসও ইতোমধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের অনুপ্রবেশ রোধে কমলা হারিস কঠোর আইন প্রণয়নের পক্ষে তার অবস্থান তুলে ধরেন।
এ ছাড়া সিএনএনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কমলা হ্যারিস গাজায় অতিদ্রুত যুদ্ধবিরতি কামনা করেন। তবে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন ও অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে তিনি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতি অনুসরণ করবেন বলেও জানান।
ঠিকানা/এসআর