গিনেজ বুক অব রেকর্ডে নাম উঠানোর জন্য মানুষ কত কিছুই না করে। তাই বলে কেঁদে বিশ্ব রেকর্ড! তাও এক নয়, দুই নয়, কাঁদলেন একটানা ৭ দিন। করলেন কাঁদার রেকর্ড। কিন্তু বিধি বাম। হারালেন দুই চোখের আলো। হয়ে গেলেন অন্ধ। ঘটনাটি ঘটেছে নাইজেরিয়ায়। যুবকের নাম টেম্বু এবেরে।
নিউইয়র্ক পোস্ট এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাইজেরিয়ান ওই যুবক কেঁদে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে চেয়েছিলেন। এজন্য তিনি টানা ৭দিন কেঁদে দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন। কেঁদে রেকর্ড করার আগে টেম্বু এবেরে তার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে নিজেকে একজন কৌতুক অভিনেতা পরিচয় দেন। তিনি টিকটকে তার অনুসাসীদের মাঝে প্রচার করেছিলেন, ‘আপনার কষ্ট আমাকে জানান, আমি আপনার জন্য কাঁদব।’
তার কাঁদার ভিডিওটিও টিকটকে আপলোড করা হয়। সেখানে দেখা যায়, তিনি একটি লাইভ টাইমারের পাশে বসে কাঁদছিলেন, যা ২ ঘণ্টা এবং ৭ মিনিট দেখায়। সারা বিশ্বের টিকটকাররা এবেরের ভিডিও ৫.৩ মিলিয়ন বার দেখেছে। কেউ কেউ দাঁড়িয়ে তাকে অভিবাদনও দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে রসিকতা করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাইজেরিয়ান যুবক টেম্বু ইবিরি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে নিজেকে এক সপ্তাহ ধরে কাঁদতে বাধ্য করেছিলেন তিনি। চ্যালেঞ্জের সময় সাময়িকভাবে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। এছাড়া তার মাথাব্যথা, ফোলা চোখ এবং ফোলা মুখের সমস্যা হয়েছিল। তবে ভালো খবর হলো তিনি স্থায়ীভাবে অন্ধ হয়ে যায়নি। টানা ৭দিন কাঁদার ফলে তিনি ৪৫ মিনিট ধরে অন্ধ ছিলেন। তিনি কীভাবে সাময়িকভাবে অন্ধ হয়েছিলেন তা কোন গণমাধ্যম প্রকাশ করেনি।
যাই হোক, মাথা ব্যথা এবং চোখে চাপ বৃদ্ধির কারণে সংবেদন ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শুধু টেম্বু নন। তার মতো অনেক নাইজেরিয়ান বিশ্ব রেকর্ড গড়ে চান। গত মে মাসে ২৬ বছর বয়সী রাঁধুনি হিলদা বেচি টানা ৯৩ ঘণ্টা ১১ মিনিট রান্নার জন্য একটি রেস্টুরেন্টের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। হিলদা বেচির এমন রেকর্ড প্রায় ২০ কোটি মানুষকে উৎফুল্ল করে।
দেশটির একজন স্কুল শিক্ষক জন ওবট বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি বিশ্ব রেকর্ড গড়তে টানা ১৪০ ঘণ্টা সাহিত্য পাঠ করেন। অন্যকে দেখে উৎসাহিত হওয়ার প্রবণতা নাইজেরিয়ান লোকদের মাঝে একটি সাধারণ ঘটনা।
এর আগে স্কুল শিক্ষক ওবট নিউইয়র্ক পোস্টকে বলেন, বিশ্ব রেকর্ড গড়ার জন্য দাঁত দিয়ে নারিকেল ছুলে ফেলার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন তিনি। এদিকে বাদ সেজেছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বোর্ড। তারা ওই নাইজেরিয়ান যুবকের এমন কর্মকাণ্ডে সতর্কতা জারি করেছেন। প্রতিষ্ঠানটি এক নির্দেশনা জানায়, এ ধরনের চ্যালেঞ্জিং কাজ করার আগে অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। তা না হলে এ ধরনের চ্যালেঞ্জের কোনো মূল্য আমাদের কাছে নেই।
টেম্বু এবরে নিজেই বলেন, কেঁদে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে আমি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে আবেদন করিনি। এজন্য আমার কর্মকাণ্ড রেকর্ড হিসেবে বিবেচিত হবে না। সূত্র : নিউইয়র্ক পোস্ট