সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ এবং গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় মুমূর্ষু ও অচেতন অবস্থায় অনেককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক অনেককেই মৃত ঘোষণা করেন। তাদের মধ্যে ১৯টি মরদেহের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। ফলে অজ্ঞাত হিসেবে মরদেহগুলো ঢামেক মর্গের হিমাগারের রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের মর্গের হিমাগারে এখন পর্যন্ত ১১টি অজ্ঞাত মরদেহ রয়েছে। এদের মধ্যে আজকে চারটি মরদেহ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। বাকিগুলো আমরা মর্গে রেখেছি যদি নিহতদের পরিবারের কেউ স্বজনদের খোঁজ পায় সে আশায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে পক্ষ থেকে শনাক্তের জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। আমরা এখন পুলিশের সহযোগিতায় এই অজানা ১১ টি মরদেহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন কিনা সে বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিতের চেষ্টা করছি। তবে এ বিষয়ে আমাদেরকে আরো কিছুদিন সময় নিতে হবে।’
অপরদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ সহকারী শ্রী রামু চন্দ্র জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় আমাদের কলেজ মর্গে অজ্ঞাত পরিচয়ের ৮টি মরদেহ রয়েছে। আমরা মর্গে দেখে অপেক্ষায় আছি যদি মরদের খোঁজে কেউ আসেন এবং পরিচয় শনাক্ত করেন সেই অপেক্ষায়। ইতিমধ্যেই কয়েকজন স্বজনদের খোঁজে এসেছিলেন কিন্তু মরদেহ গুলো দেখে তারা শনাক্ত করতে পারেনি।
তিনি বলেন, পুলিশের আইনি প্রক্রিয়ার শেষে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন আমাদের কাছে দিলে তখন আমরা মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে পারব। এরপরও যদি ময়নাতদন্তের পর স্বজনরা শনাক্ত করতে না পারেন সে ক্ষেত্রে আমরা মরদেহ গুলো দাফনের জন্য আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করব।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছাত্র-জনতার তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে তার টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবরে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিসহ অন্যান্য নেতারা গা ঢাকা দেন।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর টানা তিন দিন দেশে কার্যত কোনো সরকার ছিল না। পরে ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
ঠিকানা/এএস