বিজয় মিছিলে বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ যশোরে পাঁচ তারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর করতে যায়। দুই শতাধিক আন্দোলনকারী হোটেলটির বেজমেন্টে ঢুকেই সিঁড়ি বেয়ে ১৪ তলা পর্যন্ত উঠে যায়। একপর্যায়ে নিচে থাকা বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজন যুবক পেট্রল দিয়ে আগুন দিতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে তারা কয়েকটি তলায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে দাউদাউ করে পুরো ১৪ তলাই কয়েক মিনিটের মধ্যে জ্বলতে থাকে।
এতে ওপরে থাকা বেশির ভাগ আন্দোলনকারী বের হতে পারেননি। ফলে আগুনের ধোঁয়ায় নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আটকে থেকে তারা মারা গেছেন। হোটেলের ভেতর প্রবেশ করা আন্দোলনকারী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এই অঞ্চলের একমাত্র পাঁচ তারকা হোটেলটির মালিক যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার।
সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগের পর হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বিজয় মিছিলে থাকা বিক্ষুব্ধ জনতা। এদিন বিকেল ৪টার দিকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনেন সাড়ে ৯টার দিকে।
এই ঘটনায় রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন ১৮ জন। আহত হয়েছেন অত্যন্ত ৩০ জন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। এখনো কয়েকটি তলা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, আহতরে মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে সময় যতই গড়াচেছ মর্গে মৃতদেহের সংখ্যা ততই বাড়ছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স যশোরের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘কী দিয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে, সেটা তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ১৮ জন মরদেহ উদ্ধার করেছি। উদ্ধারকাজ চলমান রয়েছে। তবে তিনি আর কিছু বলতে চাননি।’
যশোর সিটি কলেজ থেকে আন্দোলনে অংশ নেওয়া এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও হোটেলে প্রবেশ করা মারুফ হোসেন বলেন, আমাদের আন্দোলনে কিছু উগ্র ছেলে ছিল। বিজয় মিছিলে তারা জাবির হোটেলে ঢুকে পড়ে। তাদের সঙ্গে অনেক সাধারণ আন্দোলনকারীরাও ঢুকে পড়ে। তারা জাবির হোটেল মূলত দেখতে গিয়েছিল। সিঁড়িতে উঠতে উঠতে তারা হোটেলের বিভিন্ন তলায় উঠে যায়।’
ঠিকানা/এনআই