চার দিনব্যাপী নিউইয়র্ক বইমেলার সরস আড্ডা সত্যিই বশ উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল বইপ্রেমী ও সংস্কৃতিমনাদের কাছে। এই মেলা যদি আরো ক’দিন চলতো তাহলে তাদের খুশীর জোয়ার বয়ে যেত। কিন্তু চোখের পলকে কেটে গেল চারটি দিন। বইমেলা ক্ষণিকের হলেও মেলার ব্যাপ্তি রয়ে যাবে আগামী মেলা পর্যন্ত, তেমনই উপাদান ছিল ৩২তম বইমেলায়।
নিউইয়র্ক বইমেলার প্রান্তর জ্যামাইকা পারফরমিং আর্টস সেন্টার বইপ্রেমীদের যে নির্মল আনন্দ দিয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বহিরাঙ্গণ যখন বৃষ্টিস্নাত, তখনো সবুজ খোলা প্রান্তরের চারপাশে শুভ্র সাদা তাবু টাঙানো স্টলে বইপ্রেমীরা মলাট উল্টে দেখছেন প্রিয় লেখকের গল্প-উপন্যাস, প্রিয় কবির কবিতা। বাইরের নির্মল পরিবেশ তাদের কাছে দারুণ উপভোগ্য ছিল।
জ্যামাইকা পারফরমিং আর্টস সেন্টারের সুবিশাল অডিটরিয়ামে যত মানুষ মঞ্চের পরিবেশনা উপভোগ করছিলেন, তার চেয়ে কয়েকগুণ মানুষ ছিলেন বাইরের সবুজ প্রান্তরে। শুধু স্টলে নয়, নানাভাবে সবাই ব্যতিব্যস্ত ছিলেন। কেউ মেতেছিলেন খোশগল্পে। কেউ মেতেছিলেন দলবদ্ধ আড্ডায়। অনেকে ফিরে গিয়েছিলেন স্মৃতিচারণে, নস্টালজিতে।
১৫ জুলাই শনিবার বইমেলার দ্বিতীয় দিনে বইমেলার সবুজ প্রান্তরে সরব উপস্থিতি দেখা গেছে নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে। তিনি সারাক্ষণই হেঁটে বেরিয়েছেন। সরস আড্ডা দিয়েছেন ভক্তদের সঙ্গে। ভক্তরা ছবি তুলেছেন তার সাথে। তসলিমা নাসরিনের উপস্থিতিতে বইমেলা প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠে। কোন প্রবাসীকেই তাঁকে এড়িয়ে যেতে দেখা যায়নি। বরঞ্চ যারা, তলিমা নাসরিনের সমালোচনা করেছেন বিভিন্ন সময়, তাদেরও দেখা গেছে তসলিমা নাসরিনের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে। অসংখ্য ভক্ত ও শুভাকাক্সিক্ষ তসলিমা নাসরিনের বই কিনে অটোগ্রাফ নেন,তার সংগে ছবি ও সেলফি তোলেন। সময় যত বাড়তে থাকে, তসলিমা নাসরিনের চারপাশে তার ভক্তদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে।
চার দিনব্যাপী বইমেলা শুরু হয় ১৪ জুলাই শুক্রবার থেকে। শেষ হয় ১৭ জুলাই সোমবার। এই চারদিনই মেলাপ্রেমীদের কাছে দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল জ্যামাইকা পারফরমিং আর্টস সেন্টার প্রাঙ্গণ। সেখানে স্টল ছাড়াও ছিল তারুণ্য চত্ত্বর। আরো ছিল নিয়মিত গানের আসর, যেখানে মেতেছিল নতুন প্রজন্ম।