১৭ হাজার ১৮৭ জন প্রবাসী বাংলাদেশি বাংলাদেশ সোসাইটির সদস্য হয়েছেন। কিন্তু স্বেচ্ছায় সদস্য হয়েছেন বা নবায়ন করেছেন, এমন সংখ্যা একেবারেই হাতেগোনা। নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের অর্থ খরচ করে সদস্য সংগ্রহ করছেন। এই কার্যক্রমকে অনেকে ‘অসুস্থ চর্চা’ বলে মন্তব্য করেছেন। ফলে প্রতিষ্ঠার অর্ধ শতাব্দিতেও প্রবাসীদের পরিপূর্ণ একটি আমব্রেলা সংগঠনে পরিণত হতে পারেনি বাংলাদেশ সোসাইটি।
৩০ জুন রোববার ছিল সদস্য হওয়ার শেষ দিন। এদিন পর্যন্ত ১৭ হাজার ১৮৭ জন সস্য পদের জন্য আবেদন করেছেন। আর এতে সোসাইটির আয় হয়েছে ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৭৪০ ডলার। প্রাথমিক হিসাবে সোসাইটির মোট সদস্য দাঁড়ালো ১৮ হাজার ৩৩০ জন। তাদের মধ্যে আজীবন সদস্য রয়েছেন ৮৫৩ জন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী অক্টোবরে বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের দ্বি-বার্ষিক (২০২৪-২০২৫) নির্বাচন হবে। যারা চূড়ান্ত সদস্য হবেন, তারাই অক্টোবরের নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন।
বাংলাদেশ সোসাইটির সদস্যপদ গ্রহণ সহজ করার দাবি দীর্ঘদিনের। অনলাইনের মাধ্যমে সদস্য হওয়া যাবে, এমন প্রতিশ্রুতিও ছিল। কিন্তু মামলাসহ নানান জটিলতার কারণে এই প্রক্রিয়াটি শুরু হয়নি। বরং যারা সদস্য হয়েছেন, নির্বাচন শেষে তারা আর সদস্যই থাকেন না। অথচ দাবি ছিল, সবার সদস্য পদ থাকবে এবং যারা নবায়ন করবেন তারাই ভোট দিতে পারবেন। অথচ প্রতিবার নতুন করে সদস্য হতে হয় প্রবাসীদের। নিজ অর্থে সদস্য না হওয়ায় নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না প্রবাসীরা।
এদিকে ৩০ জুন রোববার দিনব্যাপী উৎসবমুখর পরিবেশে সোসাইটির সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলে। এদিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত যারা সোসাইটি অফিসে উপস্থিত ছিলেন, শুধু তারাই সদস্য হতে পেরেছেন। এজন্য রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। এসময় প্রবাসীরা ব্যক্তিগতভাবে এবং প্যানেলগতভাবেও কেউ কেউ সদস্য পদ ফরম জমা দেন। উত্তর বঙ্গের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ৯৫০টি সদস্য ফরম জমা দেয়া হয় বলে জানা যায়। এরপর নবায়নকৃত সদস্য ফরম গণনার পাশাপাশি ফরম পূরণ বাবদ জনপ্রতি ২০ ডলার হিসাব করতে মধ্যরাত পেরিয়ে যায়।
সদস্য ফরম গণনা শেষে মধ্যরাত আড়াইটার দিকে ঘোষিত প্রাথমিক হিসেবে সোসাইটির কর্মকর্তারা জানান, এবার ১৭ হাজার ১৮৭ জন প্রবাসী তাদের সদস্য পদ নবায়ন করেছেন। এ থেকে সোসাইটির আয় হয়েছে ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৭৪০ ডলার। ৮৫৩ জন আজীবন সব মিলিয়ে সোসাইটির ভোটার হচ্ছেন ১৮ হাজার ৩৩০ জন। তবে চুড়ান্ত যাছাই-বাছাইয়ে এই হিসাব কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে বলে সংশ্লিস্টরা জানান।
এদিকে সকলের সার্বিক সহযোগিতায় সোসাইটির আগামী নির্বাচন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে প্রত্যাশা প্রবাসীদের। অপরদিকে সুন্দর পরিবেশে সোসাইটির সদস্য নবায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় সন্তুষ্ট কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকী বলেন, উৎসবমুখর আর সুন্দর পরিবেশে প্রবাসীরা সোসাইটির সদস্য হয়েছে। আমরা সবাইকে নিয়ে সুন্দর নির্বাচন উপহার দেবো।
সম্ভাব্য সভাপতি পদপ্রার্থী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম বলেন, সোসাইটির নির্বাচন ঘিরে সদস্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলো। এখন নির্বাচনের পালা। আমরা সবাকে নিয়ে সোসাইটির যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা কাজী আজম বলেন, অনেক দিন ধরে সোসাইটির কর্মকান্ডের সাথে জড়িত নেই। এবার অনেকের আহ্বানে সোসাইটিতে এসে ভালো লাগছে। আমরা আশা করি প্রবাসীরা নির্বাচনের মাধ্যমে সোসাইটিতে যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করবেন।
আগামী অক্টোবরে নির্বাচন পরিচালনার জন্য ইতিমধ্যেই অ্যাডভোকেট জামাল আহমেদ জনিকে পুনরায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- আব্দুল হাকিম মিয়া, মোঃ আনোয়ার হোসেন, আব্দুল মান্নান, মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান বাদল ও আহবাব চৌধুরী খোকন। চুড়ান্ত ভোটার তালিকা হতে পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করবেন।