Thikana News
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

২৪৮তম স্বাধীনতা দিবসে আমেরিকানদের প্রত্যাশা

২৪৮তম স্বাধীনতা দিবসে আমেরিকানদের প্রত্যাশা


১৭৭৬ সালের ২ জুলাই দ্য কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস আমেরিকার স্বাধীনতার পক্ষে ভোট প্রদান করায় ওই তারিখে ডিক্লারেশন অব ইন্ডিপেন্ডেন্স (স্বাধীনতার ঘোষণা) আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয় এবং ৪ জুলাই ডিক্লারেশন অব ইন্ডিপেন্ডেন্স কংগ্রেসে পাস হয়। এরই ভিত্তিতে জন অ্যাডামস ২ জুলাই স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের প্রস্তাব করলেও গোটা জাতি তা নাকচ করে দিয়ে ৪ জুলাই বর্ণাঢ্য আয়োজনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা দিবস উদ্্যাপন শুরু করে। সেই নিরিখে আগামী ৪ জুলাই প্রায় ৩৪ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত এবং সর্বমোট ৩৮ লাখ বর্গমাইল বা ৯৮ লাখ ৪১ হাজার ৪৫৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনবিশিষ্ট আধুনিক বিশে^র তিলোত্তমা যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দারা স্বদেশে ও বিদেশে ব্যাপক আয়োজনে ২৪৮তম স্বাধীনতা দিবস উদ্্যাপন করতে যাচ্ছেন। আলাস্কা ও হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত স্টেট দুটিসহ সর্বমোট ছোট-বড় ৫০টি ফেডারেল রিপাবলিক স্টেট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গঠিত। এর উত্তরে রয়েছে কানাডা, পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগর, দক্ষিণে মেক্সিকো উপসাগর ও মেক্সিকো এবং পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগর। আকার-আয়তনের বিচারে সমগ্র বিশ্বেরাশিয়া, কানাডা ও চীনের পর চতুর্থ বৃহত্তম রাষ্ট্রের স্থান দখল করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ১৭৯০ সালের ডিস্ট্রিক্ট কলম্বিয়ার সম্প্রসারিত অংশসহ ফেডারেল ক্যাপিটল অঞ্চল ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় রাজধানী অবস্থিত।
ভূ-প্রকৃতি : সুমেরু বা উত্তর মেরু থেকে প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চল; আর্দ্র বনভূমি থেকে শুষ্ক-ঊষর মরুভূমি অঞ্চল; সুউচ্চ পর্বত চূড়া থেকে সুউচ্চ মালভূমি অঞ্চল নিয়ে অনন্য বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-প্রকৃতি গঠিত। বিচিত্র বর্ণ-ধর্ম-সংস্কৃতি-গাত্রবর্ণ-ভাষা-কৃষ্টি আমেরিকার জনগোষ্ঠীর অতুলনীয় বৈশিষ্ট্য। মূলত ন্যাটিভ আমেরিকানস (আমেরিকান ইন্ডিয়ানস, এলিউটস এবং এস্কিমো) ছাড়াও বিশে^র সকল নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী, ভাষাভাষী, ধর্মাবলম্বী, সংস্কৃতির অনুসারী এবং গাত্রবর্ণবিচিত্র জনগোষ্ঠী নিয়ে আমেরিকা বিশ^ অভিবাসীর দেশ হিসেবে স্বীকৃত। আমেরিকার মোট জনসংখ্যার বৃহত্তর অংশ শে^তাঙ্গ হলেও আফ্রিকান আমেরিকান, হিস্পানিক, এশিয়ান আমেরিকানসহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত অভিবাসী-আমেরিকানের সংখ্যা বর্তমানে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিকট ভবিষ্যতে শে^তাঙ্গ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর আশঙ্কায় উগ্রবাদী আমেরিকানরা মনে মনে শঙ্কিত। যাহোক, আকার-আয়তনের তুলনায় সামগ্রিকভাবে অদ্যাবধি আমেরিকার জনসংখ্যা অত্যন্ত কম এবং সমগ্র আমেরিকায় জনবসতিশূন্য অসংখ্য বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড রয়েছে। এমনকি কোনো কোনো জনবসতিশূন্য ঘন জঙ্গলাকীর্ণ ভূখণ্ডের আয়তন বাংলাদেশের আকার-আয়তনের চেয়ে বেশি বললে সত্যের অপলাপ হবে না।
সম্পদ ও প্রাচুর্য : অভ্যন্তরীণ স্থূল উৎপাদনের (গ্রস ডোমেস্টিক প্রডাক্ট) বিচারে আমেরিকা বিশে^র সেরা অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে স্বীকৃত। অঢেল প্রাকৃতিক সম্পদ, রাশি রাশি কৃষিজাত পণ্য এবং শিল্প-কারখানায় সমৃদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রকে বিশে^র অন্যতম অর্থনৈতিক নিয়ামক শক্তি হিসেবে স্বীকার করা হয়। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা ও সমৃদ্ধি সত্ত্বেও বিশ^ আমদানি-রপ্তানির বাজারেও আমেরিকা গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রয়েছে। বৈশি^ক অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার খাতিরে গঠিত বৈশি^ক অর্থনৈতিক মূলধন তহবিলে আমেরিকার উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ একে মোড়লের মর্যাদা দিয়েছে। বস্তুত, ইউরোপীয় কলোনিগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম আমেরিকাই নিজস্ব মাতৃভূমিকে পরাধীনতার লৌহশৃঙ্খল সাফল্যের সঙ্গে ছিন্ন করে এবং সরকার নয় বরং নাগরিকদের ওপরই দেশের সার্বভৌমত্ব নির্ভর করে নীতিমালার ভিত্তিতে নিজ ভূখণ্ডে  প্রথম স্বাধীন ন্যাশন গঠন করে।
যুদ্ধবিগ্রহ ও সিভিল ওয়ার : স্বাধীনতা অর্জনের কয়েক দশক পরও আমেরিকা একাধিক দফা বহিঃশত্রুর সশস্ত্র হামলার শিকার হয়েছিল। আমেরিকান রিভল্যুশনারি ওয়ারের সময় ব্রিটিশ বাহিনী ঝটিকা হামলা চালিয়ে নামমাত্র প্রতিরোধের মুখে একবার ফিলাডেলফিয়ার রাজধানী দখল করে নিয়েছিল এবং মূল্যবান স্থাপনাগুলো নিশ্চিহ্ন ও সহায়-সম্পদের বর্ণনাতীত ক্ষতিসাধন করেছিল। পরবর্তী সময়ে ১৮১২ সালে মেক্সিকান-আমেরিকান যুদ্ধ চলাকালে ব্রিটিশ বাহিনী প্রথম এবং একমাত্র যুদ্ধে ১৮১৪ সালে আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি দখল করে নিয়ে সবকিছু পুড়িয়ে ভস্মীভূত করে দিয়েছিল। এদিকে স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকেই একশ্রেণির উগ্র র‌্যাসিস্ট বা বর্ণবাদী সম্প্রদায় আফ্রিকান-আমেরিকান, ল্যাটিনো, এশিয়ান-আমেরিকানসহ তাবৎ জনগোষ্ঠীকে নিম্নশ্রেণির আমেরিকান জ্ঞানে তাদেরকে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ রাখার পাঁয়তারা শুরু করেছিল। ফলে সর্বশ্রেণির আমেরিকানের শ্রমে-ঘামে গড়ে ওঠা আমেরিকায় রাতারাতি বর্ণবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল এবং সমগ্র আমেরিকা রেড স্টেট এবং ব্লু স্টেটÑএ দুটি বলয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। আমেরিকাকে সেই ভয়াবহ বর্ণবাদ ও দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তিদানের লক্ষ্যে ষোড়শ প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কনের নেতৃত্বে ১৮৬০ সালে সংঘটিত হয় সিভিল ওয়ার বা গৃহযুদ্ধ। সেই গৃহযুদ্ধকালে কনফেডারেট এবং ইউনিয়ন আর্মিরা একাধিক দফা পারস্পরিক যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং সহায়-সম্পদের অবর্ণনীয় ক্ষতি সাধিত হয়। অবশ্য গৃহযুদ্ধের অবসানে দাসমুক্তি সনদ প্রণীত হয় এবং ১৮৬৫ সালের ১৯ জুন তা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়ায় আফ্রিকান-আমেরিকানরা দাসত্বের অভিশাপমুক্ত হয়। তাই প্রতিবছর ১৯ জুনকে আফ্রিকান-আমেরিকানরা প্রকৃত স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উদযাপন করে থাকে।
বিশে^র সেরা পরাশক্তি : বেশ কয়েকটি অভ্যন্তরীণ এবং বহিঃশত্রুর হামলা সার্থকভাবে মোকাবিলা করার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভের প্রথম দেড় শ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সমরশক্তিতে বিশে^ শীর্ষস্থান দখল করে। এমনতর বাস্তবতায় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি গোটা বিশ্বে প্রভুত্ব বিস্তারের নতুন উন্মাদনাবশে যুক্তরাষ্ট্র বিশে^র বিভিন্ন দেশে সামরিক অভিযান চালিয়ে সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। অধিকন্তু বিংশ শতাব্দীতে আমেরিকা বিশে^র অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করায় প্রথম এবং পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধে জাপান-জার্মানি ও হিটলারের নাৎসি বাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণের লক্ষ্যস্থলে পরিণত হয়। এদিকে ১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর রোববার ৩৫৩টি ইমপেরিয়াল জাপানিজ এয়ারক্রাফট হাওয়াই এবং অপারেশন ওয়ান ও অপারেশন জেডের আওতায় হনলুলুতে আঘাত হানে। পার্ল হারবার নামে সমধিক খ্যাত ওই হামলায় আমেরিকার ব্যাপক ক্ষতি হয়। পরবর্তী সময়ে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৫ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চোখের নিমিষে কয়েক লাখ লোককে খুন করে এবং পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র সমৃদ্ধ বিশে^র অপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-মহাকাশ অভিযান ইত্যাদির উন্নয়ন ও উৎকর্ষ সাধনের মুখরোচক বুলির আড়ালে সমরাস্ত্র তৈরির পেছনে রাশি রাশি অর্থ ব্যয় শুরু করে। স্নায়ুযুদ্ধ পর্যন্ত সোভিয়েত রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ থাকলেও বর্তমানে বিভক্ত রাশিয়া, চীন, ভারত কিংবা পারমাণবিক অস্ত্রসমৃদ্ধ কোনো রাষ্ট্রই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার সামর্থ্য রাখে না। তাই পারমাণবিক শক্তি-চিকিৎসা তথা বিজ্ঞান ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সর্ববিধ ক্ষেত্রে অদ্যাবধি যুক্তরাষ্ট্র অপ্রতিদ্বন্দ্বী বললে সত্যের তেমন অপলাপ হবে না।
বিভিন্ন অসামঞ্জস্য : গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রের নামে গোটা বিশে^ ছড়ি ঘোরালেও মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষত বাস্তুহারা ফিলিস্তিনসহ বিশে^র অনেক দেশের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কঠোর সমালোচনার দাবি রাখে। ধনতান্ত্রিক আমেরিকা স্বদেশের জনগণকেও ব্যক্তিগত অগ্রগতি এবং আর্থিক সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে বর্ণনাতীত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে। তাই সতী মায়ের সতী কন্যা দাবিদার আমেরিকায় ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান হু হু করে বেড়েছে এবং বর্তমানে রাষ্ট্রীয় মোট সম্পদের ৯৯%ই উচ্চবিত্তশালীদের কুক্ষিগত রয়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নেও ২৪৮ বছর বয়সী যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা তীব্র সমালোচনার দাবি রাখে। অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র লাখ লাখ নিরীহ আমেরিকানের প্রাণবায়ু ছিনিয়ে নিলেও প্রকৃত প্রস্তাবে প্রভাবশালী রাইফেলস অ্যাসোসিয়েশনের লবিংয়ের মুখে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে অদ্যাবধি কোনো কঠোর আইন প্রণয়ন এবং কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। ফলে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ঝনঝনানি এবং নিরীহ আমেরিকানের প্রাণহানিও বন্ধ হচ্ছে না। আবার কর্মক্ষেত্র-অফিস-আদালতে পুরুষ ও মহিলা এবং বৈধ ও অবৈধ শ্রমিকদের মজুরি-বৈষম্য যুক্তরাষ্ট্রের মূল নীতিমালাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োগ, আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন সন্দেহজনক অপরাধীদের গ্রেপ্তার, পুলিশের গুলিতে প্রাণহানি ইত্যাদি ক্ষেত্রে আইনের সুষম প্রয়োগের অভাব সামগ্রিকভাবে বিচারব্যবস্থাকেও মাঝে মাঝে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তদুপরি উগ্র জাতীয়তাবাদের দোহাই এবং বৈধ-অবৈধের মৌলিক বৈষম্য ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের হয়রানি, হামলা, গ্রেপ্তার ইত্যাদি প্রসঙ্গে সর্বত্র বর্ণবৈষম্যের তাপ এখনো কম-বেশি আঁচ করা যায়।
দেশবাসীর প্রত্যাশা : বলার অপেক্ষা রাখে না, বৈশ্বিক পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা, বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধি, মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নির্গমন, মেরু অঞ্চলে বরফগলার পরিমাণ বৃদ্ধি এবং গোলাবারুদের বিষক্রিয়ায় বিশে^র আকাশ-বাতাস ভারাক্রান্ত হচ্ছে। আর এই অকথিত পাপের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে গোটা বিশে^ আঘাত হেনেছিল শতাব্দীর ভয়াবহ মহামারি প্যান্ডামিক কোভিড-১৯। আক্রান্ত এবং প্রাণহানির বিচারে করোনা বিশে^র সর্বসেরা পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রকে বর্ণনাতীত নাকানি-চুবানি খাইয়েছে এবং সর্বত্র ব্যাপক ছন্দপতন ঘটিয়েছে এই প্যান্ডামিক, যার ধকল আজও কাটেনি। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের বর্ণনা অনুসারে, মেরু অঞ্চলে বরফগলার বর্তমান হার অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ এশিয়া মহাদেশের মতো ভূখণ্ড পানির নিচে তলিয়ে যাবে। তাই ধরাপৃষ্ঠে মানুষের অস্তিত্ব বজায় রাখা এবং মানবসভ্যতার বৃহত্তর খাতিরেই বিশ^জুড়ে অভিনব পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র প্রস্তুতি ও বিক্রির প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে এবং এ কাজে যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। শ্রুতিকটু শোনালেও উল্লেখের দাবি রাখে যে একুশ শতকের আমেরিকান জনগণ ইরাক ও আফগান যুদ্ধের ঘোর বিরোধিতা করেছেন এবং শান্তির সপক্ষে দেশজুড়ে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করেছিলেন। বর্তমানেও আমেরিকার শান্তিপ্রিয় জনগণের বৃহত্তর অংশ ইসরায়েলি আগ্রাসনের তীব্র বিরোধিতা এবং বাস্তুহারা ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকে জোরালো সমর্থন জানাচ্ছেন। স্মর্তব্য, নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ইতিমধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বাড়িভাড়ার দৌরাত্ম্য, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, বেকারত্বের অভিশাপে স্বল্প আয়ের লোকজন ও ছাপোষা ধরনের কর্মচারীদের হিতাহিতজ্ঞান লোপ পাওয়ার দশা। পরিবারের সদস্যদের ভরণ-পোষণের ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে তাদের উল্লেখযোগ্য অংশই খেতে পাচ্ছেন না বিষ, পালানোর পাচ্ছেন না দিশ। তাই যুদ্ধবিগ্রহ নয়, অবক্ষয় ও বৈষম্যমুক্ত সমাজব্যবস্থা এবং গ্লোবাল বিশে^ টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠাই আমেরিকানদের দাবি। ২৪৮তম স্বাধীনতা দিবসে আমেরিকার শান্তিপ্রিয় জনগণের সঙ্গে আমরাও বিশ^জুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমেরিকার অর্থবহ ভূমিকা পালনের প্রত্যাশা করছি।
লেখক : সহযোগী সম্পাদক, ঠিকানা, নিউইয়র্ক।
২৫ জুন ২০২৪।

কমেন্ট বক্স