Thikana News
০৪ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল

ভারতের সঙ্গে চুক্তি দেশকে আজীবন গোলামে পরিণত করবে

ভারতের সঙ্গে চুক্তি দেশকে আজীবন গোলামে পরিণত করবে ছবি সংগৃহীত
গত ২২ জুন ভারতের সঙ্গে যেসব সমঝোতা-চুক্তি হয়েছে, সেগুলোকে প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। সেই সঙ্গে এসব চুক্তি দেশকে আজীবনের জন্য ভারতের গোলামে পরিণত করবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (৩০ জুন) গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের সম্পাদিত চুক্তি ও সমঝোতার নানা দিক তুলে ধরে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই করেছেন, তা গোলামির নবতর সংস্করণ। সমঝোতার আড়ালে যেসব চুক্তি করা হলো, তা বাংলাদেশকে আজীবনের জন্য ভারতের গোলামে পরিণত করবে। এর ফলে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আমরা পুনর্ব্যক্ত করতে চাই, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তা-বিরোধী এসব চুক্তি জনগণ কখনো মেনে নেবে না। বিএনপি এই সকল দেশবিরোধী চুক্তি-সমঝোতা প্রত্যাখ্যান করছে।

ভারতের সঙ্গে করা সমঝোতা-চুক্তিগুলো দেশের স্বার্থের সম্পূর্ণ বিরোধী উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব চুক্তি-সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে আমাদের দেশের প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি ভারতের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার অংশে পরিণত করা হয়েছে, যা খুবই বিপজ্জনক এবং দেশের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি। এটি শান্তির সহাবস্থান ও জোট নিরপেক্ষ নীতির পরিপন্থী।

এসব সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে নিরাপত্তার কৌশলগত ‘বাফার স্টেট’ হিসেবে ভারতকে ব্যবহারের সুযোগ দিতে চান বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা। ফখরুল বলেন, এর ফলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার জটিলতার মধ্যে জড়িয়ে পড়বে। যে ৭টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, সেগুলোর প্রায় সবগুলোই দেশের উত্তরাঞ্চলকেন্দ্রিক।

প্রয়োজনের সময়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ডকে ভারতের সামরিক ও বেসামরিক পণ্য পরিবহনের জন্য কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘চিকেন নেক’কে বাইপাস করে ব্যবহার করার সুদূরপ্রসারী মহাপরিকল্পনা থেকেই এসব চুক্তি করা হয়েছে বলে মনে করে বিএনপি। মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে জলাঞ্জলি দিয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদে ভারতের গোলামি চুক্তির গভীর ফাঁদে ফেলার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।

সম্পাদিত চুক্তি-সমঝোতায় দেশের প্রাপ্তি শূন্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, নানা নাম দিয়ে যে ১০টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলো, তাতে বাংলাদেশের প্রাপ্তি শূন্য। দেশের স্বার্থ সংরক্ষণের চাইতে ভারতের কাছে শেখ হাসিনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দায়বদ্ধতা থেকে এসব স্মারক সই হয়েছে, তা জনগণের কাছে স্পষ্ট। এগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণের ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা নেই। সে কারণেই বহু পূর্বে ভারতঘোষিত সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলারের ভারতীয় চুক্তি (লাইন অব ক্রেডিট-এলওসি) বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার বিষয়ে এই সফর (শেখ হাসিনার সফর) ছিল নীরব।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএসএফের গুলিতে প্রতিবছর রেকর্ড পরিমাণ সীমান্ত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পরও প্রধানমন্ত্রীর সফরে এ বিষয়টিতে বাংলাদেশ সরকার চূড়ান্তভাবে নির্লিপ্ত থেকেছে। ভারত-নেপাল, ভারত-চীন ও ভারত-পাকিস্তান সীমান্তেও এই পরিমাণ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেখা যায় না। কিন্তু বাংলাদেশে অহরহ সীমান্তে হত্যা হচ্ছে।

শেখ হাসিনার সফরসহ ভারতের সঙ্গে ইতোপূর্বে স্বাক্ষরিত সকল চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বায়ন ও মুক্তবাজার অর্থনীতির এই যুগে সব বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অংশীদারিত্ব বাড়াতে নানাভাবে কানেক্টিভিটি তৈরি করার পক্ষেই বিএনপির অবস্থান। কিন্তু সড়কপথ, নৌপথ বা রেলপথে যেভাবে কানেক্টিভিটি বাড়ানো হোক না কেন, তাতে জাতীয় স্বার্থকে বিবেচনা করতে হবে সর্বাগ্রে। কোনোভাবেই সার্বভৌমত্বের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করা যাবে না। কিন্তু বর্তমান অবৈধ সরকার অবৈধ ক্ষমতা অটুট রাখার হীন স্বার্থে জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স