যুক্তরাষ্ট্রে ভোটার হতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রাইজ আপ নিউইয়র্ক সিটি। সম্প্রতি নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত ভোটার ক্যাম্পেইনে সংগঠনের কর্মকর্তারা এ আহ্বান জানান। তারা বলেন, বাংলাদেশি-অ্যামেরিকান কণ্ঠকে বলিষ্ঠকরণ ও পছন্দের প্রার্থীকে জনপ্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত করে বাংলাদেশি আমেরিকান কমিউনিটির অনন্য সেবার সুযোগ প্রদানে আজই আপনার নাম ভোটার তালিকায় নিবন্ধন করুন এবং আসন্ন নির্বাচনে আপনার মূল্যবান ভোট দিয়ে কমিউনিটির সার্বিক উন্নয়নে সহযোগিতা করুন।
নিউইয়র্ক শহরের বৈচিত্র্যময় দৃশ্যচিত্রে গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশি-অ্যামেরিকান কমিউনিটি তার অনন্য রঙ দিয়ে নিজেদেরকে ফুটিয়ে তুলেছে। কিন্তু আমাদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং জনপরিবহন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মত প্রধান খাতগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের পরেও সরকারের উচ্চতর পর্যায়ে আমাদের প্রতিনিধিত্বের দৃশ্যমান একটি অভাব রয়েছে। এই অভাব কেবল প্রতীকী নয়; এটা প্রমাণ করে যে আমাদের কমিউনিটির প্রয়োজনগুলো সাধারণত উপেক্ষিত হয়ে আসছে। এর একটি প্রধান কারণ হলো অন্যান্য কমিউনিটির তুলনায় আমাদের কমিউনিটি মানুষদের মধ্যে ভোটার রেজিস্ট্রেশনের আগ্রহ কম। স্বতঃস্ফূর্তভাবে দলবেঁধে বিপুল ভোট প্রদানের মাধ্যমে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করার জন্য ভোটার রেজিস্ট্রেশনের বিকল্প নেই। এজন্য কমিউনিটির মানুষদের মধ্যে ভোটার রেজিস্ট্রেশনে জনমত সৃষ্টি করাই আমেরিকায় বসবাসরত প্রতিটি বাংলাদেশি আমেরিকানদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার এখনই সময়।
যখন নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষ থেকে সামাজিক সংগঠনগুলোর জন্য প্রায় অর্ধেক বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়, তখন বাংলাদেশি-অ্যামেরিকান সমাজ তুলনামূলকভাবে অনেক কম অনুদান পায়। রাজনীতিবিদেরা নির্বাচনী কারণে সাধারণত যেসব কমিউনিটি থেকে ভোট বেশি দেওয়া হয়, তাদেরকে প্রাধান্য দেন এবং আমাদেরকে অবহেলা করেন।
এছাড়াও এনওয়াইপিডি, এমটিএ, টিএলসিসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থাগুলোর সবচেয়ে প্রভাবশালী পদগুলোতে বাংলাদেশি-আমেরিকানদের অভাব এই সমস্যাকে আরও গুরুতর করেছে। এই খাতগুলিতে আমাদের অনেকেই কাজ করলেও উচ্চতর অবস্থানগুলোতে প্রতিনিধিত্বের অভাব আমাদের কমিউনিটির জন্য কাজ করার সুযোগকে সীমিত করে রেখেছে।
এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে এবং আমাদের সামগ্রিক কন্ঠস্বর জোরালো করতে অবশ্যই ভোটার নিবন্ধন ও ভোটপ্রদানকে প্রাধান্য দিতে হবে। এর মধ্যে ভোটার নিবন্ধন হলো শক্তিশালীকরণের প্রথম ধাপ, যা আমাদেরকে নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরকে জবাবদিহি করার এবং আমাদের প্রাপ্য সম্পদ দাবি করার শক্তি দেবে। অধিক সংখ্যায় ভোটার নিবন্ধন ও অংশগ্রহণের মাধ্যমেই আমরা রাজনীতিবিদদেরকে একটা পরিষ্কার বার্তা পাঠাতে পারবো যে আমাদের সমাজও সক্রিয় এবং আমরা তাদের মনোযোগ দাবি করছি। এছাড়াও, ভোটার নিবন্ধন বাড়াতে পারলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমাদের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি পাবে। আমাদের সমাজের মানুষদেরকে সরকারি চাকরি করতে ও সেখানে উন্নতি করতে যদি আমরা উদ্বুদ্ধ করি, তাহলে আমাদেরকে শুধু গুরুত্বই দেওয়া হবে না, সিদ্ধান্তগ্রহণেও তার প্রতিফলন হবে।
পরিশেষে, একটি ন্যায্য এবং সম্মিলিত নিউইয়র্ক শহরের শুরু হবে আমাদের সবার নিজ নিজ নাগরিক অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে। ভোটার নিবন্ধন ও অংশগ্রহণ করা শুধু আমাদের অধিকারই না, এগুলো আমাদের কমিউনিটির ভবিষ্যৎ উন্নত করার শক্তিশালী হাতিয়ার। নেতৃবন্দ বলেন, আসুন সবাই একসাথে এগিয়ে আসি, বিপুলসংখ্যায় ভোটার নিবন্ধন করি, এবং ব্যালট বক্সে আমাদের উপস্থিতি জানান দেই! এর মাধ্যমেই আমরা নিউ ইয়র্ক শহরে এবং এর বাইরে আরও সফল ও উন্নত একটা বাংলাদেশি-অ্যামেরিকান সমাজ গড়তে পারব। ভোটার রেটিস্ট্রেশন ক্যাম্পেইনে অংশ নেন রাইজ আপ নিউইয়র্ক সিটির কর্মকর্তারা লে. কমান্ডার শামসুল হক, বাপা’র এসডিএস প্রেসিডেন্ট এরশাদুর সিদ্দিক, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্যাপ্টেন প্রিন্স আলম, সেক্রেটারি ডিটেকটিভ রাসেকুর মালিক, মিডিয়া লিয়াজোঁ ডিটেকটিভ জামিল সারোয়ার।
বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মূলধারার রাজনীতিক অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, মোহাম্মদ আলী, বদরুন্নাহার খান মিতা।