Thikana News
২২ নভেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
প্যারেডে খরচ ৮০ হাজার, লোকসান ৪০ হাজার ডলার

গ্র্যান্ড মার্শাল ২৫ হাজারে সমঝোতা

গ্র্যান্ড মার্শাল ২৫ হাজারে সমঝোতা
বাংলাদেশ ডে প্যারেডে খরচ হয়েছে ৮০ হাজার ডলার। সংগঠন, ব্যক্তি অনুদান খাত থেকে তোলা হয়েছে ৪০ হাজার ডলার। এখনো দেনা আছে ৪০ হাজার। এই ৪০ হাজার ডলার আগামী প্যারেডের বাজেট থেকে তোলা হবে বলে পরিকল্পনা করেছেন প্যারেডের আয়োজক শাহ শহিদুল হক। তিনি বলেন, এবারের প্যারেডে মোট খরচ হয়েছে ৮০ হাজার ডলার। এর মধ্যে ৪০ হাজার ডলার খরচ ওঠাতে পেরেছি। বাকি ৪০ হাজার ওঠাতে পারিনি। মানুষ অর্থ দেয়নি। এই ৪০ হাজার ডলা আমার পকেট থেকে খরচ করেছি। এই লোকসান তো তুলতে হবে। সে কারণে পরিকল্পনা করেছি, আগামী বছর প্যারেডের জন্য বাজেট ধরা হবে এক লাখ ডলার। সেই প্যারেড থেকে এই অর্থ তুলতে হবে। ঠিকানার সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন শাহ শহিদুল হক।
তিনি আরও বলেন, এই প্যারেড করতে গিয়ে যেভাবে সবার সহযোগিতা পাওয়া দরকার ছিল, সেভাবে পাইনি। অনেককেই আগের দিন রাতে এসএমএস দিয়ে প্যারেডে যাওয়ার জন্য নিষেধ করা হয়েছে। ফলে অনেকেই আসেননি। বিশেষ করে, ব্রুকলিন, ব্রঙ্কসে বসবাসরত বাংলাদেশিরা। পাশাপাশি কুইন্স ও অন্যান্য বরোতেও এমনটা হয়েছে। এই প্যারেড যাতে না হয়, সেই চেষ্টাও অনেকেই করেছেন।
বাংলাদেশ ডে প্যারেডের বিরোধিতা মানুষ কেন করবে, আপনারা প্যারেডকে সর্বজনীন করার চেষ্টা করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে, সমাজের অনেক বিশিষ্টজন ও গণমান্য ব্যক্তিকেও ডাকেননি, আবার সব সংগঠনকেও অংশগ্রহণ করাতে পারেননি, এটা কেন? এ বিষয়ে শাহ শহিদুল বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি, সবাই আসেননি। আমাদের কমিউনিটির কেউ সফল কিছু করতে গেলে কিছু কিছু মানুষ এর বিরোধিতা করে। নিজেদের স্বার্থ, বিরোধিতা, ক্ষমতা, আধিপত্য বিভিন্ন কারণে অনেকেই সবার সঙ্গে থাকতে পারেন না। আমরা তো তবু উদ্যোগ নিয়েছি, প্যারেড করেছি। এত দিন তো কেউ করল না।
অনেকেই বলেছেন প্যারেড সাকসেসফুল হয়নি। তাহলে আগামী বছর আবার প্যারেড করার পরিকল্পনা করছেন, তখনো তো একই অবস্থা হতে পারে, সবাই সহযোগিতা নাও করতে পারে- এ ব্যাপারে শাহ শহিদুল হক বলেন, আগামী বছর ম্যানহাটনে প্যারেড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য আবেদনও করেছি। কত তারিখের জন্য আবেদন করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্যারেড আগামী বছর ২৬ মে করব কি না এখনো বলতে পারছি না। ডেট আগে-পরে হতে পারে, আবার একই ডেটেই হতে পারে।
কার কাছে আবেদন করেছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তায় প্যারেড করার জন্য এনওয়াইডির অনুমোদন লাগে। সে হিসেবে সেখানেই আবেদন করেছি।
গ্র্যান্ড মার্শাল নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেছেন, আসলে গ্র্যান্ড মার্শাল নিয়ে কী হয়েছে? শোনা যায়, এটি স্পন্সর নিয়ে করেছেন, কত ডলারে স্পন্সর নিয়েছেন? শাহ শহিদুল হক বলেন, গ্র্যান্ড মার্শাল নিয়ে অনেক কথা হয়েছে, এটা ঠিক। যে যার মতো করে বলার চেষ্টা করেছেন। তবে আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, গ্র্যান্ড মার্শালের জন্য স্পন্সর নেওয়া হয়েছে। এই স্পন্সর দিয়েছেন শাহনেওয়াজ। এর পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ডলার। গ্র্যান্ড মার্শালের জন্য স্পন্সর নেওয়া যাবে না, এটা তো কোথাও বলা নেই।
অনেকে বলছেন, আপনি প্যারেড করার কারণেই মানুষ আসেনি। সর্বজনীনভাবে করলে আরও অনেক মানুষ আসত। এ বিষয়ে শাহ শহিদুল হক বলেন, কত মানুষ অসহযোগিতা করেছেন, সে কথা বলে শেষ করা যাবে না। একটি উদাহরণ দিই। আমি প্যারেডের জন্য চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেট নিউইয়র্কের কাছে একটি বড় পতাকা চেয়েছিলাম। সেই পতাকা তারা দেবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু পরে তারা আর দেয়নি। তাদের মতো অনেকেই অসহযোগিতা করেছেন। সবার জন্য এটি উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল। কিন্তু সবাই আসেননি।
প্যারেডের মূল পতাকা তো আপনাদেরই ম্যানেজ করার কথা, এটি কনস্যুলেট দেবে কেন? এত বড় প্যারেডের জন্য ছয় মাস থেকে এক বছর আগেই পতাকা তৈরি করে রাখার কথা, সেটি আপনারা করেননি কেন? এ ব্যাপারে শহিদুল বলেন, আমাদের অনেক বড় একটি পতাকা দরকার ছিল, যা আমাদের নেই। তাই ভেবেছিলাম কনস্যুলেটের কাছ থেকে পতাকা নেব। কিন্তু তারা দেয়নি। পরে দেশ থেকে আমরা পতাকা এনেছি।
অনেকেই চাইছেন না আপনারা আবার প্যারেড করুন। বাপার উদ্যোগে আগামী বছর প্যারেড হতে পারে। তারা আয়োজন করলে আপনি থাকবেন তো? এ ব্যাপারে শাহ শহিদুল হক বলেন, আমরাই প্যারেড করব। এ জন্য অনুমতি চেয়েছি। অনুমতি পেলে আমরাই করব। আর আমাদেরকে করতে না দিয়ে যদি বাপাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে আমরা বাপার উদ্যোগেই প্যারেডে অংশ নেব।
আপনি বলছেন, এ বছর ৪০ হাজার ডলার লোকসান করেছেন, তাহলে আগামী বছরের জন্য আবারও কেন এক লাখ ডলারের বাজেটের ঝুঁকি নিচ্ছেন? এ বিষয়ে শাহ শহিদুল বলেন, যারা মনে করছেন আমরা সফলভাবে অনুষ্ঠানটি করতে পেরেছি, তারা আগামী প্যারেডের জন্য অর্থ দিতে চাইছেন। এবার প্যারেড করার আগে অনেকেই মনে করেছিলেন, আমরা প্যারেড করতে পারব না। প্যারেড করার পর তারা দেখেছেন যে আমরা করতে পারব। ফলে এখন অনেকেই বলছেন আগামী বছর প্যারেড করতে। তারা অর্থও দেবেন। তাই আমার মনে হয়, আগামী প্যারেডের জন্য অর্থের সমস্যা হবে না। আমরা এক লাখ ডলার বাজেট করেই এগোব।
এদিকে বাংলাদেশ ডে প্যারেডের আনন্দ উৎসব ও পুরস্কার বিতরণীর আয়োজন করা হচ্ছে ২৭ জুন বৃহস্পতিবার। ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট ইউএসএ, বাংলাদেশ ডে প্যারেডের কার্যকরী কমিটি ও আয়োজকবৃন্দ বাংলাদেশ ডে প্যারেডের উৎসবপূর্তি উপলক্ষে সমাজসেবক, বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন (বাপা), বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, কমান্ডিং কাউন্সিল, বরেণ্য শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, মূলধারার রাজনীতিবিদসহ সকল গুণীজনের সংবর্ধনার আয়োজন করতে যাচ্ছে। ২৭ জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটায় কুইন্স প্যালেসের পার্টি হলে এক জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণী সভায় নিউইয়র্ক সিটি মেয়র, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলসহ মূলধারার রাজনীতিক, সম্মানিত ব্যক্তি, গণমাধ্যম কর্মকর্তা, উচ্চ পর্যায়ের সমাজহিতৈষীগণকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানান শাহ শহিদুল ও তরিকুল হোসাইন বাদল। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য সবার প্রতি তারা আহ্বান জানিয়েছেন।
 

কমেন্ট বক্স