Thikana News
১৮ অক্টোবর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪


 

নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপিকে রাখার কৌশল

নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপিকে রাখার কৌশল


গত জানুয়ারিতে কী উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু, তা আজও অনুদ্ঘাটিত রয়ে গেছে। সংগতভাবেই বাংলাদেশ সরকার ও মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর একান্ত রাষ্ট্রীয় গোপনীয় বিষয় সম্পর্কে কোনো কথা বলেনি। বাগবিলাসী, আধিপত্য, কর্তৃত্ব জানান দিতে আগ্রহী ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূতও অস্বাভাবিক রকম নীরবতা পালন করে আসছেন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় সম্পর্কে কোনো রকম মন্তব্য করা হতে বিরত থাকাটা কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের কাছে অনেকটা অভাবিত, বিস্ময়কর ঠেকেছে। কারণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ঢাকাস্থ মার্কিন ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত একাধিকবারই কূটনৈতিক শিষ্টাচার-বহির্ভূত আচরণ, মন্তব্য করেছেন।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে চলমান বিরোধের পারস্পরিক সম্মানজনক ও গ্রহণযোগ্য সমাধানসূত্র দিয়ে গেছেন মার্কিন মন্ত্রী। এ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে তার অর্থপূর্ণ আলোচনাও হয়েছে। অপর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় জোটে চীনকে অন্তর্ভুক্ত করতে বাংলাদেশের কার্যকর ভূমিকা রাখার অনুরোধ-সংক্রান্ত। চীনের নেতা মি. শি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীরভাবে শ্রদ্ধাশীল। চীনের সঙ্গে ভারতের বিরোধ বড় আকারে দেখা দেওয়ার উপক্রম হলে ভারতের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বল্প সময়ের ব্যবধানে চীন সফরে যান। ভারতের বিদেশ সচিব দেশটির প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বার্তা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। চীনের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে কথা বলে চীন-ভারত সম্পর্কে বিরোধ কমিয়ে উচ্চতা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় জোট নিয়ে মার্কিন দুশ্চিন্তার মূল কারণ চীনের সম্ভাব্য আপত্তি। চীন এতে অনাগ্রহী থাকলে এই জোটের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যাবে। এই জোট শেষাবধি সামরিক জোটে রূপ নেয় কি না দেখার অপেক্ষায় চীন। একে মার্কিন স্বার্থ রক্ষাকারী সামরিক জোটে পরিণত করা হলে চীন বিকল্প জোট গড়ে তুলবে, যার প্রাথমিক প্রস্তুতিও চলমান ছিল।
অন্যদিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আস্থাশীল। মার্কিন সহকারী মন্ত্রী বাংলাদেশ আসার আগে থেকেই বিএনপি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিল। দলটির মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টুর নামও দেওয়া হয়। ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে স্বল্পতম সময়ের জন্য হলেও সাক্ষাতের ব্যবস্থা করার একান্ত অনুরোধ জানানো হয়েছিল। মন্ত্রী ঢাকায় আসার পরও অনুরূপ অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু সময়স্বল্পতার অজুহাতের কথা বলে তাদের অনুরোধ বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এ নিয়ে বিএনপি ও মার্কিন দূতাবাস থেকেও কোনো মন্তব্য দেওয়া হয়নি। যতদূর জানা যায়, আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির ব্যাপারে আশাবাদী হতে পারছে না। তাদের দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত নেতৃত্ব এবং বর্তমান দুর্বল নেতৃত্বের প্রতি তাদের আস্থারও ঘাটতি রয়েছে। মার্কিন মনোভাব স্পষ্ট হওয়ার পরই সরকার ও সরকারি দল হামলা-মামলার আক্রমণাত্মক পথে না গিয়ে রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে মোকাবিলা ও শক্তি প্রদর্শনের কৌশল নিয়েছে। তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দুর্নীতির দায়ে তারা উভয়েই ইতিপূর্বে দণ্ডিত হয়েছেন।
আগামী নির্বাচনে ব্যাপকসংখ্যক রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের উল্লেখযোগ্য হারে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায় সরকার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর মনোভাব অনুযায়ী সরকার এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। সংসদে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব এখন না থাকার পরও নির্বাচনকালীন সরকারে তাদের দুই থেকে তিনজনের প্রতিনিধিত্ব রাখা হবে। তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।
 

কমেন্ট বক্স