Thikana News
২৩ অক্টোবর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪


 

বিখ্যাত ঔপন্যাসিক মিলান কুন্ডেরা আর নেই

বিখ্যাত ঔপন্যাসিক মিলান কুন্ডেরা আর নেই ছবি সংগৃহীত


রসিকতা, যৌনতা, দর্শন আর ইতিহাসের নানা উত্থান-পতনকে কেন্দ্র করে ‘দ্য আনবেয়ারেবল লাইটনেস অব বিয়িং’ উপন্যাস লিখে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পাওয়া চেক-বংশোদ্ভূত লেখক মিলান কুন্ডেরা মারা গেছেন। প্রায় পাঁচ দশক ধরে প্যারিসে বসবাস করে আসা এই ঔপন্যাসিক ১১ জুলাই মঙ্গলবার ৯৪ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন।

১২ জুলাই বুধবার মিলান কুন্ডেরার লাইব্রেরি তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলে বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

কুন্ডেরার ব্যক্তিগত সংগ্রহ নিয়ে গড়ে তোলা দ্য মোরাভিয়ান লাইব্রেরি (এমজেডকে) বলেছে, দীর্ঘদিনের অসুস্থতার পর মঙ্গলবার প্যারিসে নিজ বাসভবনে মারা গেছেন তিনি।

কুন্ডেরা তার গল্প কিংবা উপন্যাসের চরিত্রগুলোকে যেভাবে লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেন, তা মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা। গল্পের মোড়কে তিনি পাঠককে টেনে নিয়ে যান গভীর অন্তর্দৃষ্টির সামনে, যেন দাঁড় করিয়ে দেন আয়নার মুখোমুখি।

চেক প্রধানমন্ত্রী পিটার ফিয়ালা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মিলান কুন্ডেরা এমন একজন লেখক ছিলেন; যিনি সব মহাদেশের পাঠকদের পুরো প্রজন্মের কাছে পৌঁছেছিলেন এবং বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি কেবল কথাসাহিত্যই নয়, উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ রচনাও করে গেছেন।’

১৯২৯ সালে চেক প্রজাতন্ত্রের ব্রনো শহরে জন্মগ্রহণ করেন কুন্ডেরা। ১৯৬৮ সালে প্রাগ বসন্তের উদারবাদী সংস্কার আন্দোলন দমনে চেকোশ্লোভাকিয়ায় আগ্রাসন চালায় সোভিয়েত। এই আগ্রাসনের সমালোচনা করায় ১৯৭৫ সালে পরিবারসহ ফ্রান্সে নির্বাসিত হন তিনি।

গণমাধ্যমের সঙ্গে একেবারে কথা বলতে চাইতেন না এই লেখক। তিনি বিশ্বাস করতেন, বিশ্বাসী লেখকরা কাজের মাধ্যমে কথা বলেন। নির্বাসিত হওয়ার পর নিজ দেশের সাথে তার সম্পর্ক আরও বৈরী হয়ে ওঠে।

তার প্রথম উপন্যাস ‘দ্য জোক’ ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত হয়। এতে চেকোশ্লোভাকিয়ার কমিউনিস্ট শাসনের ভয়ংকর চিত্রনাট্য হাজির করেছিলেন তিনি। একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করে লিখেছিলেন হিউমারধর্মী প্রথম এই উপন্যাস। পরবর্তীতে উপন্যাসটি চেকোশ্লোভাকিয়ার কমিউনিস্ট সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

কমিউনিস্টপন্থী এই লেখক দলে সংস্কারের আশা করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা না হওয়ায় কমিউনিস্ট পার্টি ত্যাগ করেন তিনি। ১৯৭৫ সালে ফ্রান্সে পাড়ি জমানোর চার বছর পর চেকোশ্লোভাকিয়ার নাগরিকত্ব ছেড়ে দেন তিনি।

১৯৭৬ সালে ফরাসি দৈনিক লি মন্ডে-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কুন্ডেরা বলেছিলেন, তার লেখাকে রাজনৈতিক আখ্যা দেওয়াটা একেবারে অতি-সরলীকরণ। এভাবে অতি-সরলীকরণের ফলে লেখার প্রকৃত তাৎপর্য হারিয়ে যায়। তবে তার বইগুলোতে গভীর রাজনৈতিক দ্যোতনা ছিল।

১৯৮৪ সালে তার সবচেয়ে বিখ্যাত কাজ ‘দ্য আনবেয়ারেবল লাইটনেস অব বিয়িং’ প্রাগ বসন্ত ও এর পরবর্তী ঘটনাকে উপজীব্য করে লেখা। এই উপন্যাস নিয়ে ১৯৮৮ সালে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়। ড্যানিয়েল ডে-লুইস অভিনীত এই চলচ্চিত্র দুটি একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন পেয়েছিল।

২০১৯ সালে বিখ্যাত এই লেখককে পুনরায় চেক প্রজাতন্ত্রের নাগরিক করা হয়েছিল।

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স