Thikana News
০৪ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪

বাংলা নতুন বছর বাঙালিদের জন্য বয়ে আনুক শান্তি ও সমৃদ্ধি 

বাংলা নতুন বছর বাঙালিদের জন্য বয়ে আনুক শান্তি ও সমৃদ্ধি 
আর কদিন বাদেই বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ সাল। প্রবাসে, স্বদেশে এবং যেখানেই বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপন হবে, সেখানেই শত-সহস্র কণ্ঠে গীত হবে, 'এসো হে বৈশাখ এসো এসো...'। একই সঙ্গে শোনা যাবে, 'জীর্ণ পুরাতন যাক ভেসে যাক...।' বাঙালি জীবনে এ চিরায়ত প্রার্থনা। সবাই জানে, মানুষের সব চাওয়া, সব প্রার্থনা কখনো পূরণ হয় না। তবু মানুষ সর্বাত্মক আগ্রহ নিয়েই নিজের এবং বিশ্বজাহানের সব মানুষের জন্য কল্যাণ এবং সুখ ও সম্পদ কামনা করেন। সেই প্রার্থনা নিয়েই সবাই গেয়ে উঠবে, 'এসো হে বৈশাখ।' দিনপঞ্জিকার হিসাবমতে, এবার পহেলা বৈশাখ হবে আগামী ১৪ এপ্রিল, আর সন হবে ১৪৩১। ১২ মাসে এক বর্ষ পূরণ হবে। বাংলা বর্ষ ছয়টি ঋতু নিয়ে। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত। মানবজীবনও এভাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চক্রাকারে ঘুরতে জীবনের শেষবেলায় এসে পড়ে এবং একদিন জীবনের এপার ছেড়ে পরপারে চলে যায়। যেখান থেকে আর কেউ ফিরে আসে না। নববর্ষকে বরণ করে নিতে কত যে আয়োজন, কত যে উদ্যাপন ব্যবস্থা, সবাই আনন্দে শরিক হতে চায় হয়তো এ ভেবে যে কে জানে আরেকটি নতুন বছর পাওয়া যাবে কি না। বৈশাখ মানেই নতুন করে আরেকটি বছর পাওয়া। জীবন মানেই জীবনের আরেকটি হালখাতা খোলা। যে খাতায় লেখা হবে জীবনের কর্মফল। জীবনের হিসাব-নিকাশ। যারা ওপারের জীবনে বিশ্বাস করেন, তারা খুব ভালো করে জানেন, ওপারের জীবনে সবাইকেই স্রষ্টার কাছে হিসাব দিতে হবে। যেমন এপারের জীবনে অর্থাৎ ইহলৌকিক জীবনের খেরোখাতায় লেখা হবে এ জীবনের হিসাব-নিকাশ। একটি নতুন বছর আমরা সৌভাগ্যের, সম্পদ ও শান্তির কামনা দিয়ে শুরু করে জীবনব্যাপী কত আনন্দ-বেদনা, দুঃখ-কষ্ট, কত ঝড়-ঝাপটা বয়ে যায়। সবই মেনে নিতে হয়। সবাই পরিবারের সবার সুখ, শান্তি, সম্পদের জন্য প্রার্থনা করে। জীবনে অতীতের ব্যর্থতার হিসাবই ভবিষ্যতে ব্যর্থতার যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে সাহায্য করে। মানুষের জীবনে কত বিভ্রাট, কত ঝড়, ঝঞ্ঝা, মহামারি, দুর্ঘটনা, কতভাবে মৃত্যুর আঘাত-সবই মানুষ মেনে নিতে বাধ্য হয়। আর যা ঘটে, তা এ জীবনেই ঘটে। একসময় বাংলা পঞ্জিকা ছিল না। সম্রাট আকবর প্রথম কৃষকদের খাজনা দেওয়ার সু-বিধার্থে ফসল উৎপাদনের সঙ্গে তাল রেখে বাংলা পঞ্জিকার প্রচলন করেন। তবে সময়প্রবাহের ধারায় বাংলা নববর্ষ বাঙালিদের অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির এক অনিবার্য অনুষঙ্গে পরিণত হয় এবং একসময় বৈশাখের নগরায়ণের ফলে এর ব্যবহারিক ও বাণিজ্যিক গুরুত্ব যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি এর চরিত্রেও পরিবর্তন ঘটে। শহরে বৈশাখ বরণে আতিশায্য এবং চমক যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, পাশাপাশি বৃদ্ধি পেয়েছে বাণিজ্যিক গুরুত্ব। বাংলাদেশ, কলকাতা এবং দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিরা এখন ঈদ ও পূজার মতো বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন করেন। এ জন্য বৈশাখী ব্র্যান্ড প্রবর্তন করে ব্যবসায়ীরা এখন শত শত কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন। পোশাকের পাশাপাশি ইলিশের বাণিজ্যও কম হয় না। এ খাতে বহু কোটি টাকার ব্যবসা হচ্ছে বলে শোনা যায়। ব্যবসা-বাণিজ্য, আনন্দ-উচ্ছ্বাস যা-ই হোক, নববর্ষ সব মানুষের জীবনে স্বস্তি ও শান্তি নিয়ে আসুক। সেই সঙ্গে গেল বছরের অশান্তি, অপ্রাপ্তি ভুলিয়ে দিতে নিয়ে আসুক দুঃখ-বেদনা ভোলার সবাইকে মহৌষধ। 
বাংলা নববর্ষ ১৪৩১-এর শুভেচ্ছা, অনাবিল ভালোবাসা।

কমেন্ট বক্স