Thikana News
০৬ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪

উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে জাপা-জামায়াত

উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে জাপা-জামায়াত
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে জাতীয় পার্টি (জাপা) ও জামায়াতে ইসলামী। জাপা প্রকাশ্যে উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিলেও জামায়াত অনেকটা কৌশলে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল জাতীয় পার্টি। জাতীয় সংসদের বিরোধী দলটি এবার উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি শুরু করেছে। শুধু তা-ই নয়, দলটি সম্ভাব্য কিছু প্রার্থীকে গ্রিন সিগন্যালও দিয়ে রেখেছে। দেশে এবারের উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সংসদে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নতুন কৌশলে এগোচ্ছে। এই নির্বাচনে তারা কোনো প্রার্থীকেই দলীয় প্রতীক নৌকা দেবে না। বিষয়টিকে সুযোগ ধরে নিয়েই নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টি। 
অন্যদিকে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলো উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে জামায়াতের স্থানীয় প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। দলটির দায়িত্বশীল নেতারা এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা বললেও মাঠপর্যায়ের নেতারা পুরোদমে নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছেন। রমজানের ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আড়ালে স্থানীয় জামায়াতকে নির্বাচনী কাজ গুছিয়ে নিতে দেখা গেছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। দলটির পদধারী অনেক নেতাই এখন নির্বাচনের মাঠে সক্রিয়।
জাপা সূত্র জানায়, উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে এরই মধ্যে সারা দেশের তৃণমূল নেতারা কেন্দ্রে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। যেহেতু পার্টি দলীয় প্রতীকে অংশ নেবে, তাই কেন্দ্রের মনোনয়ন গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় পার্টির জি এম কাদের অংশের কয়েকজন নেতা জানান, উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে এরই মধ্যে সারা দেশের জেলা-উপজেলার নেতাদের কাছে কেন্দ্র থেকে বার্তা পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচনে আগ্রহী নেতাদের মাঠপর্যায়ে সার্বিক প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা পেয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন দলটির অনেক নেতাকর্মী। রমজানে ইফতার মাহফিলসহ সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে নিজেদের মধ্যে মতবিনিময় করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনে নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করলেও জাতীয় পার্টি দলীয় প্রতীকেই নির্বাচনে অংশ নেবে। ওইদিন তিনি বলেন, আমরা জানি, সরকার-নিয়ন্ত্রিত ভোট হবে। তার পরও উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেব। এর মাধ্যমে ভোটে সরকারের নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি জনগণের কাছে তুলে ধরব।
সম্প্রতি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে জি এম কাদের ও রওশন এরশাদ- এই দুই পক্ষে ভাগ হয়ে গেছে জাপা। জাতীয় পার্টির রওশনপন্থী অংশও উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে নেতারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক নেতাদের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে বিভিন্ন এলাকার জামায়াতের স্থানীয় অনেক নেতা আগ্রহ প্রকাশ করছেন। জামায়াত নেতারা বলছেন, নির্বাচন কমিশন তাদের দলের নিবন্ধন বাতিল করেছে। সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব নেই, স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়েও প্রতিনিধিত্ব নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় দলের অবস্থান শক্ত করতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ দরকার। এ ছাড়া এ নির্বাচনে যেহেতু দলীয় প্রতীক থাকবে না, তাই সরকারেরও খুব একটা হস্তক্ষেপ থাকবে না। নির্বাচন নিরপেক্ষ হলে ভালো ফল আনতে পারবে জামায়াত। তবে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা তা মনে করছেন না। তাদের মত, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে না। এ ছাড়া গত ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য তারা জনগণকে যে আহ্বান জানিয়েছিলেন, এখন এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে জনগণের সঙ্গে আবার প্রতারণা করা হবে বলে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করেন।
জামায়াতের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে যারা আগ্রহী, তাদের প্রার্থী করা হবে। কাউকে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য দল থেকে চাপ দেওয়া হবে না। দলের নেতারা জানান, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করে দলীয় প্রার্থীদের অনেকে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, দলের কেউ যদি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে চান, তাদের প্রার্থী করার ব্যাপারে দলের স্থানীয় দায়িত্বশীলদের বলা হয়েছে। দলটির জেলা কমিটি নির্বাচনের সার্বিক বিষয় সমন্বয় করছে। দলীয় সূত্র বলছে, আগে যারা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন কিংবা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের অনেকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। সামাজিকভাবে যারা প্রতিষ্ঠিত এবং যাদের দল ও দলের বাইরে গ্রহণযোগ্যতা আছে, এমন নেতাদের প্রার্থী হতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেহেতু উচ্চ আদালত জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছে, তাই দলের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জাতীয় পার্টির (জি এম কাদের) মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি, এটা চূড়ান্ত। এরই মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আমাদের সার্বিক প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা প্রতীক (লাঙ্গল) নিয়েই অংশ নেব। যেহেতু আইন আছে প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার, তাই প্রতীক নিয়েই নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত এটিই জাতীয় পার্টির সিদ্ধান্ত।
সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত না হলেও আমরা স্থানীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরই মধ্যে জেলায় পাঁচজন প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। আমাদের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন। আমাদের প্রচুর জনসমর্থন রয়েছে। নির্বাচনের ব্যাপারে ভোটার ও সমর্থকদের ব্যাপক সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে আমাদের প্রার্থীরা বিজয়ী হবেন।
তবে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না, এটা প্রমাণিত। তাই এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে জামায়াত অংশগ্রহণ করবে না।
 

কমেন্ট বক্স