দীর্ঘ পাঁচ বছর পর এক টেবিলে বসে ইফতার করলেন বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতারা। এ সময় একই টেবিলে পাশাপাশি বসেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতের আমির মাওলানা শফিকুর রহমান। পাশেই বসেছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিসে ক্লাবে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সম্মানে এই ইফতার পার্টির আয়োজন করে বিএনপি। ইফতার পার্টিতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ইফতারের আগে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বক্তব্য দেন। বক্তব্য শেষে ইফতারের আগে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক টেবিলে পাশাপাশি চেয়ারে বসেন এবং দুজনের মধ্যে তখন একান্ত আলাপচারিতা হতে দেখা যায়।
ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা একটা কঠিন সময় অতিক্রম করছি। একটা দুঃসময় অতিক্রম করছি। এ সময় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শক্তি গোটা জাতির ওপর চেপে বসে আছে। আমাদের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ করে দিয়ে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেছি।’
অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘১৮ কোটি মানুষের দেশে মানুষ আজ মজলুম। পুরো দেশের মানুষ আজ জুলুমের শিকার। লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। বিজয় আমাদের হবেই, ইনশা আল্লাহ।’
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে দীর্ঘদিনের মিত্র ও জোটসঙ্গী জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে বিএনপির। এরপর নানা সময়ে এ দুই দলের শীর্ষ নেতারা পারস্পরিক বাগ্যুদ্ধে জড়ান। একপর্যায়ে ভাঙন ধরে ২০ দলীয় জোটে। এর পর থেকে দল দুটির নেতাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কাছাকাছি হতে দেখা যায়নি।
সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে সরকারবিরোধী আন্দোলনেও বিএনপি ও জামায়াতের প্ল্যাটফর্ম ছিল ভিন্ন। পৃথক অবস্থান থেকে যুগপৎ আন্দোলন করেন দুই দলের নেতাকর্মীরা। অবশেষে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর একমঞ্চে দেখা গেল বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের।
অনুষ্ঠানে জামায়াত নেতাদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া মো. গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের প্রমুখ।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ মাহমুদ চৌধুরী, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত সেলিম, জাগপা একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।
ঠিকানা/এনআই


ঠিকানা অনলাইন


