Thikana News
০৬ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪

  বিএনপি নীরব কেন

  বিএনপি নীরব কেন
মার্কিন নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর রিয়ার অ্যাডমিশন আইমিরাল আইলিন লাউবেচারের নেতৃত্বাধীন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধিদের বাংলাদেশ সফর বাংলাদেশ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুদূরপ্রসারী প্রভাব সৃষ্টিকারী সম্পর্কের  সূচনা করেছে। ইউএসএআইডির সহকারী প্রশাসন মাইকেল ফিফার এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার এই সম্পর্কের ভিত রচনা ও তা শক্তিশালী করার ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিত করে তা বাস্তবায়নের নীতি ও কৌশল নির্ধারণী ভূমিকা রেখেছেন।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অধিকতর বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, জলবায়ু সমস্যা নিরসনে ব্যাপকতর সহায়তা, গার্মেন্টসামগ্রী আমদানি ও এর মূল্যবৃদ্ধিসহ কাক্সিক্ষত বাণিজ্য-সুবিধা প্রদানে মার্কিন সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ। মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় ১২ লক্ষাধিক শরণার্থী সমস্যা, এতে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা ছাড়া আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা হুমকির বিষয় উল্লেখ করে মার্কিন কার্যকর সহযোগিতা প্রত্যাশা করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে গ্যাস তেল প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান, আহরণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মার্কিন উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানা যায়। কূটনৈতিক সূত্রে আরও জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে ঘাঁটি করতে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ দীর্ঘ মেয়াদে লিজ দেওয়ার দাবি থেকে আপাতত সরে এসে যুক্তরাষ্ট্র ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় জোটে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একযোগে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। এতে বাংলাদেশ ও ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করা হয় বলে জানা যায়। বিএনপি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নবতর সম্পর্কের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য অনুধাবন করতে পারলেও পরবর্তী করণীয় নিয়ে সংকটে পড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক কূটনৈতিক ও অন্যবিধ স্বার্থ থেকে নিবৃত্ত রাখতে পারছে না। ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে মার্কিন স্বার্থবিরোধী কোনো পদক্ষেপই নেবে না বলে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শতভাগ আস্থাশীল প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ তো ভবিষ্যতের বিষয়। খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের মুক্ত জীবন, বিএনপির ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন তো বিশাল দূরের বিষয়। তাদের টিকে থাকাই যেখানে কঠিন সেখানে আধিপত্যবাদী শক্তির স্বার্থ সে অপেক্ষায় রাখার সুযোগ নেই। চীনকে মোকাবিলাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। কেবল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, এশিয়া নয়, গোটা বিশ্বে চীন তার অর্থনৈতিক-সামরিক শক্তির নেতৃত্ব, কর্তৃত্ব যেভাবে প্রতিষ্ঠা করছে, তা মোকাবিলা ও দমিত করাই তাদের আশু করণীয় বলেই বিবেচিত হচ্ছে।
জানা যায়, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ছয়টি সামুদ্রিক স্থাপনা নির্মাণ করছে ভারত। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর্থিক, কারিগরি ও সামরিক সহযোগিতা দিচ্ছে। নির্মাণাধীন স্থাপনাসমূহে ভারতের পাশাপাশি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন অবস্থান করতে পারবে। সমুদ্রবন্দরে, ভারতীয় সামুদ্রিক জলসীমায় মার্কিন সাবমেরিনসহ সব ধরনের অত্যাধুনিক সামরিক যুদ্ধজাহাজ অবস্থান করতে এবং সেখানে থেকে তৃতীয় কোনো দেশের গন্তব্যে চলাচলের অনুমতি দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক, যোগাযোগ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত। নৌ সামরিক শক্তিতে চীন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে সংখ্যা ও শক্তির দিক থেকে উন্নত অবস্থায় রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রশান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরকে তার একান্ত নিজস্ব শক্তিবলয়ে রাখতে সচেষ্ট। ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর হয়ে চীন সাগর, দক্ষিণ চীন সাগর, জাপান সাগর, তাইওয়ান, হংকংসহ সমগ্র সমুদ্র এলাকায় যুক্তরাষ্ট্র সাবমেরিনসহ যুদ্ধজাহাজগুলোর নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে চায়। সামরিক ক্ষেত্রে ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের গভীরতা ও বিস্তৃতিতে বাংলাদেশকে অনেক ভেবেচিন্তেই অগ্রসর হতে হচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে সরকারের পক্ষে ভারতের ভূমিকা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রভাবিত করার বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়াও সম্ভব হচ্ছে না।
বিএনপির নেতারা সরকারবিরোধী তীব্র আন্দোলন নতুন করে শুরু করার সদম্ভ ঘোষণা যতই দিক, তাদের সীমাবদ্ধতার কথাও দলটির সদ্য কারামুক্ত নেতারা জানেন। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে উৎখাতে এক দফার আন্দোলনের কথা খুব কমই বলবেন তারা। একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধেই নেতাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের যে অশান্তি-অস্থিতিশীলতা প্রত্যাশা করে না, তার সতর্কবার্তা বিএনপির নেতাদের এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে।
 
 

কমেন্ট বক্স