গত ৫০ বছরের মধ্যে চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণকারী প্রথম মার্কিন মহাকাশযানটি অবশেষে এর প্রকৌশলীদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। মার্কিন প্রাইভেট রকেট কোম্পানি ‘ইনটুইটিভ মেশিনস’-এর তৈরি ‘ওডিসিয়াস’ ল্যান্ডার চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি চাঁদে অবতরণ করে। তবে অবতরণের সময় ল্যান্ডারটির পা চাঁদের মাটিতে আটকে যাওয়ায় এটি এক পাশে হেলে পড়ে।
মুন ল্যান্ডারটি প্রত্যাশা অনুযায়ী শক্তি সংগ্রহ করতে পারেনি। পাশাপাশি, পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগের সময়ও অসুবিধার মধ্যে পড়ে এটি। তবে এর পরও ভূপৃষ্ঠের নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছিল ওডিসিয়াস।
বৃহস্পতিবার মহাকাশযানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ল্যান্ডারটি শেষবারের মতো একটি ছবি পাঠায়, এর পরপরই একে ‘ওয়েটিং মোডে’ পাঠানো হয়।
তবে মহাকাশযানটির এই পথ চলা শেষ নাও হতে পারে— এ আশায় ল্যান্ডারটিকে ‘ওয়েটিং মোডে’ পাঠানো হয়। প্রকৌশলীরা ধারণা করেছিলেন, যদি চন্দ্রপৃষ্ঠে রাতের ঠাণ্ডায় এটি বেঁচে ফিরতে পারে তবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পুনরায় যোগাযোগ করতে সক্ষম হবে ওডিসিয়াস।
ইনটুইটিভ মেশিনসের মুখপাত্র জশ মার্শাল বলেছেন, এই চূড়ান্ত পদক্ষেপগুলো ল্যান্ডারের ব্যাটারির ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ওডিসিয়াসকে ‘দীর্ঘদিনের জন্য ঘুমে পাঠিয়েছে’।
“শুভ রাত্রি, ওডি। আমরা আশা করি, তোমার সঙ্গে আবার যোগাযোগ করতে পারব,” এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ দেওয়া পোস্টে বলেছে কোম্পানিটি।
ল্যান্ডারটির মূলত চাঁদের পৃষ্ঠে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কাজ করার কথা ছিল। ২২ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে চাঁদের পৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করার কৃতিত্ব অর্জন করে হিউস্টনভিত্তিক কোম্পানি ইন্টুইটিভ মেশিনস। ১৯৬০-এর দশক থেকে মাত্র পাঁচটি দেশ এই মাইলফলক অর্জন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে জাপান, যারা গত মাসেই চাঁদে ‘স্লিম’ নামের একটি মহাকাশযান পাঠিয়েছিল।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র জন্য ছয়টি পরীক্ষা চালিয়েছে ওডিসিয়াস মহাকাশযানটি। এ যাত্রায় কোম্পানিটির খরচ পড়েছে ১১ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
নাসার বাণিজ্যিকভাবে চাঁদে যাওয়ার প্রকল্পে অংশ নেওয়া প্রথম কোম্পানিটি এর আগে কখনওই চাঁদে পৌঁছায়নি; বরং জানুয়ারিতে এর একটি ল্যান্ডার পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছিল। নাসার লক্ষ্য হল, চাঁদের পৃষ্ঠে বিভিন্ন ল্যান্ডার পাঠিয়ে কয়েক বছরের মধ্যে নভোচারীদের চাঁদে পাঠানোর পথ সুগম করা।
ওডিসিয়াসের যাত্রার আগ পর্যন্ত, চাঁদে অবতরণ করা সর্বশেষ নভোযান ছিল ‘অ্যাপোলো ১৭’। ১৯৭২ সালের ওই যাত্রাটি পরিচালনা করেছিলেন নভোচারী জিন সারনান ও হ্যারিসন স্মিট।
ঠিকানা/এসআর