Thikana News
০৪ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪
মার্কিনি অ্যাজেন্ডার ফের : সরকার-বিএনপি দুদিকেই ফুরফুরে

নাভালনির পরিণতি আতঙ্কে ইউনূস!

নাভালনির পরিণতি আতঙ্কে ইউনূস!
অবিরাম দুর্গতির মাঝে কথা বলতে শুরু করেছেন বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী মিতভাষী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে দেশীয় গণমাধ্যমে নয়, বাছাই করা বিদেশি গণমাধ্যমে। প্রচুর কথা বলছেন। আবেগপ্রবণও হয়ে উঠছেন। দম ধরে থাকা বৈশিষ্ট্যের ড. ইউনূসকে আগে কখনো এভাবে কথা বলতে বা ভাবাবেগে দেখেননি তার নিকটজনেরাও। তিনি বিশাল সাক্ষাৎকার দিয়েছেন 
ডয়চে ভেলেকে। বলেছেন প্রচুর কথা। জার্মানির সাপ্তাহিক ডি সাইট পত্রিকাকেও দেশ-সরকার নিয়ে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। বলেছেন, ‘তারা (সরকার) আমাকে জেলে পাঠাতে পারে। জেলে পাঠানোর পর কী হবে বা হতে পারে- এ প্রশ্নের জবাবে একপর্যায়ে চলে আসে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের শক্ত প্রতিপক্ষ নাভালনির কারাগারে মৃত্যুর প্রসঙ্গ। পুতিনের যাবতীয় আয়োজনেই নাভালনিকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রচার আছে। ড. ইউনূস বলেন, ‘মানুষ এখন তাদের চোখে এই প্রশ্ন নিয়ে আমার দিকে তাকায়। তাদের আশঙ্কা, আমার সঙ্গেও একই বিষয় ঘটতে পারে। শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ড. ইউনূসকে। এখন তিনি জামিনে। এরই মধ্যে তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান গ্রামীণে পড়েছে নানা থাবা। তাদের আটটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল হয়ে গেছে। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং এবং পাচারের অভিযোগও আনা হয়েছে। দেশীয় গণমাধ্যমকে ডেকে ড. ইউনূস বলেছেন, এসবের উদ্দেশ্য তাকে নিঃশেষ করে দেওয়া। কারও নাম মুখে না নিয়ে বলেছেন, এসব কে, কারা করছে, মানুষ জানে-বোঝে। বিদেশি গণমাধ্যমে এ নিয়ে এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কী শত্রুতা, কেন তিনি তাকে পদ্মা সেতুতে চুবানি দিতে চান- এমন প্রশ্নে সাইট অনলাইনকে ড. ইউনূস বলেন, কেউ বলে এটা ব্যক্তিগত, কেউ বলে এটা রাজনৈতিক। কিছু মানুষ বলেন, শেখ হাসিনা তার (ইউনূসের) জনপ্রিয়তায় শঙ্কিত এবং তিনি (ইউনূস) হয়তো প্রধানমন্ত্রী হতে চানÑসাইট অনলাইনের সাংবাদিকদের এমন কথার প্রতিক্রিয়ায় ড. ইউনূস বলেন, ‘দ্যাটস দ্য লাস্ট থিং আই ওয়ান্ট।’ বিভিন্ন সময় নিজেকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতিবাচক মন্তব্যের কারণ হিসেবে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমার মনে হয়, উনি মনে করেন, আমি দেশের সর্বোচ্চ ডাকু, সন্ত্রাসী কিংবা অপরাধী; আমি সেরা চোর।’ উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেন, ‘আমি সুদখোর, আমি ঘুষখোর।’ এমন সব কটু শব্দ ব্যবহারে কষ্টের কথা জানান ডয়চে ভেলেকে। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার না থাকলে জাতি হিসেবে আমরা টিকে থাকব না বলে ভবিষ্যদ্বাণীও করেন তিনি। ড. ইউনূসের এমন দুর্দিনে তার বিদেশি বন্ধু, বিশেষ করে মার্কিন বন্ধুরা কি সটকে পড়েছে-এমন জিজ্ঞাসাও আছে বাজারে। ড. ইউনূস বলেন, তার অনেক বন্ধু তাকে তাদের দেশে থাকতে বলেছেন, ‘আমাকে নাগরিকত্ব, বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করার সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমি বাংলাদেশ ছাড়তে চাই না।’
ইউক্রেনে আগ্রাসন এবং বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনিও তার দেশ রাশিয়া ছাড়তে চাননি। তার মৃত্যুর ঘটনায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে ৫০০টিরও বেশি নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ রকম সময়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল ঢাকা ঘুরে গেছে। দলটির প্রতিনিধিরা হলেন প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনএসসি) ডিরেক্টর এলিন লাউবাকের, ইউএসএআইডির এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর মাইকেল শিফার এবং ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলেছেন এ টিমের সদস্যরা। বলেছেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে আছেন। অবদান রাখবেন বাংলাদেশের উন্নয়নে। তবে সরকারের দিক থেকে বলা হচ্ছে, মার্কিন প্রতিনিধিদল সরকারের সঙ্গে আছে বলে জানিয়েছে। আবার গুরুত্বের সঙ্গে বিরোধী দল বিএনপির নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন মার্কিন প্রতিনিধিরা। সদ্য কারামুক্তির পর লাঠি ভর দিয়ে বিএনপি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন দূতাবাসের এক্স (সাবেক টুইটার) বার্তায় বলা হয়েছে, বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীর কারাবন্দী থাকা ও বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। ভবিষ্যতেও বিএনপির সঙ্গে তাদের যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে।
ঢাকায় ২৪ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি অবস্থানকারী এ দলটি সিভিল সোসাইটির সঙ্গেও কথা বলেছে। কয়েকজন শ্রম সংগঠক ও তরুণ অ্যাক্টিভিস্টের সঙ্গেও কথা বলেছে। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, সাক্ষাৎকারীদের কেউই জানাননি কোন বিষয়ে কী কথা হয়েছে তাদের সঙ্গে। যা বলার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েবসাইটেই বলা হয়েছে দ্রুত সময়ের মধ্যে। বিএনপির নেতাদের স্বাগত জানিয়ে মার্কিন দূতাবাসের ফেসবুকে বলা হয় : ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিকে বোঝা এবং স্বীকৃত সমাধান খুঁজে বের করার মূল চাবিকাঠি হলো গঠনমূলক সংলাপ। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কারাগারে বন্দী হাজার হাজার বিরোধীদলীয় সদস্যের বিষয়ে এক ফলপ্রসূ আলোচনায় আমরা স্বাগত জানিয়েছি বিএনপির মহাসচিবকে। অব্যাহত সম্পর্কের অপেক্ষায়! আরেক পোস্টে বলা হয়েছে, মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিকে এগিয়ে নেওয়া, মানবাধিকারকে সমর্থন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, আন্তর্জাতিক হুমকির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক সহনশীলতার শক্তিকে এগিয়ে নিতে এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রচারে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আরেকটি পোস্ট দিয়ে মার্কিন দূতাবাস বলেছে, বাংলাদেশের মানুষ যেন সংগঠিত হতে এবং সম্মিলিতভাবে তাদের দর-কষাকষির অধিকারের উন্নয়ন করতে পারে, তার সমর্থন জানায় যুক্তরাষ্ট্র। শ্রম অধিকার নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে আমরা আনন্দিত, কারণ তারা সাহসিকতার সঙ্গে বাংলাদেশের শ্রমিকদের সংগঠনের স্বাধীনতা, সম্মিলিত দর-কষাকষির অধিকার এবং মানসম্মত মজুরির জন্য চাপ অব্যাহত রেখেছে।

কমেন্ট বক্স