নিউইয়র্কের কুইন্সের জ্যামাইকায় মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার। জামাইকার খলিল বিরিয়ানি পার্টি হলে ‘স্টপ ড্রাগস এন্ড ক্রাইমস’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা মাদকাসক্তির জন্য পারিবারিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ও পরকীয়াকে অন্যতম কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেন।
সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করেন কমিউনিটি লিডার নাসির খান পল, সৈয়দ আল আমিন রাসেল, আহসান হাবিব ও আহনাফ আলম। এছাড়া সেমিনারটি স্পন্সর করেন রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর আনোয়ার হোসেন ও নুরুল আজিম।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বর্তমানে সবাই তার অভীষ্ট লক্ষ্য পূরনে ব্যস্ত। নিজ নিজ কাজে সবাই এতটাই ব্যস্ত যে পরিবারকে ঠিকমতো সময় দেওয়া হয়ে উঠে না। আর এই সুযোগে পরিবারের উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েরা ধীরে ধীরে খারাপ সঙ্গের সংস্পর্শে আসে। একপর্যায়ে তারা ধীরে ধীরে মাদকাসক্ত হয়ে ওঠে। এর সাথে রয়েছে পারিবারিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়।
বক্তারা বলেন, বর্তমান সমাজে অনেক বিবাহিত ছেলেমেয়ে পরকীয়ায় লিপ্ত। যারা নিজেরা সন্তান-সন্ততির পিতামাতা। কিন্তু পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে যাওয়ায় তারা ঠিকঠাক মতো ছেলেমেয়েকে সময় দিতে পারেন না। আর এতে করে তাদের ছেলেমেয়েরা মাদকাসক্ত ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যায়।
সেমিনারে একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বক্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে গত চার বছরে ৮৪ জন মাদকাসক্ত হয়ে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে শুধু নিউইয়র্কে মারা গেছেন ৪২ জন। যাদের বয়স ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। এই ৮৪ জনের মধ্যে বাঙালিও কয়েকজন রয়েছেন। তবে সামাজিক অবস্থানের কারনে তারা মাদকাসক্তির বিষয়টি স্বীকার করেন না। মৃত্যুর কারণকে তারা হার্ট অ্যাটাক বলে চালিয়ে দেন। যদিও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অতিরিক্ত মাদক সেবনের ফলে হার্ট ফেইল হয়ে যাওয়া।
মাদকাসক্তি থেকে উত্তরন পেতে পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, ছেলেমেয়েদের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। তাদের সাথে নিয়মিত মিশতে হবে। তারা কাদের সাথে চলাফেরা করে তা খোঁজ খবর রাখতে হবে।
সেমিনারে পুলিশের সাবেক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, মাদকদ্রব্য কোন স্থানে বিক্রি হয় তা চিহ্নিত করতে হবে। ক্ষেত্রবিশেষে এসব জায়গা এড়িয়ে চলতে হবে।
আয়োজকরা এই ধরনের সেমিনার যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ভবিষ্যতে আরও আয়োজন করা হবে বলে জানান।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন- মোরশেদ আলম, মনজুর আহমেদ, ফখরুল আলম, ফাহাদ সোলায়মান, মোহাম্মদ আলী, সালেহ আহমদ, ফরিদ আলম, আকাশ রহমান, রিনা সাহা, সালমা ফেরদৌস, আজিজুল হক, রমিজ উদ্দিন প্রমুখ।



ঠিকানা রিপোর্ট


