দলিলুর রহমান
সামনে ‘শহীদ কাদরীর কবিতা’
বইগুলি নিয়ে ঠের বসে আছেন
দিশেহারা নাবিকের মতো
ভেবেছিলাম শহীদ কাদরী ঝকমকে ঝলমলে
উজ্জ্বল উদ্দীপ্ত চেহারায় রেক্সের আড্ডার মতো
চায়ের কাপে একখণ্ড উজ্জ্বল আকাশ দেখব।
না, বুঝে উঠতে পারছি না
তিনি কেন মেঘভরা বিকেলের আকাশের মতো নিষ্প্রভ?
একটা বইয়ে নাম সই করে তাকালেন
এ যেন অন্ধকার আকাশে দুটি বিলুপ্ত চোখ
কোন বিধ্বস্ত নগরীর ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাসাদের মলিন রূপ দেখছেন।
বললেন, ‘কী হবে এসব কবিতা লিখে?’
চমকে গিয়ে ভাবি, একি কথা?
যার কবিতার বই হাতে কবিরা ভাবেন, পরেছি কাশ্মীরি শাল
দাঁড়িয়েছি পারস্য লাল গালিচায়
যত বিলীন স্বপ্নসাধ ছায়াঘন পল্লব
রঙিন হৃদয়ের হিরণ্য নারীরা
বেদনাময় রেখা ভেদ করে নীলিমা ভরা গভীর চোখ মেলে বলবে, এবার কবিতা শুনব।
তিনি কেন আজ শীতের কুয়াশায় ডুবে
চৈত্রের খর বাতাসে বিবর্ণ?
‘কী যে বলেন!
আপনার এই বইটি তো আমি
বাইবেলের মতো আজীবন পড়ব।’
সত্যিই পড়বে?
শহীদ কাদরী-সেই থেকে ত্রিশ বছর পর
আমি এখনো পড়ি।