Thikana News
০৪ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪
মঈনে হাসের পুলক : কাদেরে ধোঁয়াশা

বাইডেনের বার্মা অ্যাক্টে ফয়সালার চাক্কি

বাইডেনের বার্মা অ্যাক্টে ফয়সালার চাক্কি
হঠাৎ ম্রিয়মাণ সরকার। সুর বদল সরকার ও সরকারি দলের স্পোকসম্যান, মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের। পরিস্থিতি কখন কী হয় বলা যায় না বলে মন্তব্য তার। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে কী হয় বলা যায় না মন্তব্য করে বাড়তি হিসেবে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিরাগভাজন হয়ে রাশিয়ার  সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা সম্ভব নয়। সরকারপক্ষের এমন ভাবলেশের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র অনেকটা প্রতিক্রিয়াহীন। তাদের প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস কি হাল ছেড়ে দিয়েছেন? এ প্রশ্নের ঘুরপাকের মাঝেই ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের পোস্ট। পিটার হাসের সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খানের একান্ত বৈঠকের ছবি। বৈঠকটি হয়েছে ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে। দ্রুত তা জানান দেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশস্থ দূতাবাসের ফেসবুকের মাধ্যমে। কূটনৈতিক ভাষায় ঠাসা পোস্টটিতে বলা হয় : ‘ঢাকা দূতাবাস গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা, সহনশীলতা, সুশাসন এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গণতন্ত্র তখনই বিকশিত হয়, যখন সবার কণ্ঠস্বর শোনা যায়।’ রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ‘দূতাবাসে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ড. আব্দুল মঈন খানের সঙ্গে দেখা করে আমি আনন্দিত।’ এমন এক সময়ে বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এ কূটনীতি, যখন এ অঞ্চলে একটি ‘প্রক্সি ওয়ার’ চলছে। যুদ্ধের দামামাটি অদূরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে। কিন্তু শেল-বারুদ পড়ছে বাংলাদেশে। মিয়ানমার নিয়ে ত্রিশঙ্কু অবস্থায় পড়ে গেছে বাংলাদেশ। দায়ও চাপছে। অনেক কিছু পরিবর্তন করা গেলেও প্রতিবেশী পাল্টানো যায় না। এর মাঝেও সম্ভাব্য সমাধান অত্যাসন্ন কারও কারও দৃষ্টিতে। যেই সমাধানে পাল্টে যেতে পারে রাজনীতির দৃশ্যপটও। এমনিতেই মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গার ভারে কাবু বাংলাদেশ। এ বোঝা কেবল ভারীই হচ্ছে। চীন এতে দ্বিমুখী-ত্রিমুখী খেলে চলছে। বাংলাদেশকে পাশে আছে বলে পিঠ মোছা দিচ্ছে। আবার মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে আছে। বিদ্রোহীদেরও সমর্থন দিচ্ছে। সঙ্গে অস্ত্রও। মিয়ানমারের এ পরিস্থিতির জের ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশেও। বিশেষ করে, বাংলাদেশ ও ভারতে। রাখাইনসহ দেশটির বড় অংশ এরই মধ্যে চলে গেছে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। তাদের দমনে চীনের সহায়তায় সেখানে চলছে মিয়ানমারের জান্তাদের অভিযান। হামলার তীব্রতায় টিকতে না পেরে জান্তা সেনারা এদিক-ওদিক পালাচ্ছে। আছড়ে পড়ছে বাংলাদেশেও। পরাজিত সেনা, বিদ্রোহী বা নাগরিকদের ঢল এ দেশে যেন না নামে, সেই চেষ্টা থাকলেও সেভাবে ফলপ্রসূ নয়। মিয়ানমারের সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তিদের অনুপ্রবেশ কেবল ঘটনা নয়, বাড়তি উদ্বেগেরও। উখিয়ার রহমতবিল সীমান্ত দিয়ে দেশটির সেনা, শুল্ক কর্মকর্তা ও অন্য সংস্থার সদস্যরাও ঢুকেছে বলে প্রচারণা রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশকারীদের কাছে রাইফেল-এসএমজি ছিল। এর সত্য-মিথ্যা এখনো নির্ণয় হয়নি। সত্য হয়ে থাকলে সেই অস্ত্রগুলো কোথায়? তাদের মধ্যে পরাজিত সেনাসদস্য ছাড়াও বিদ্রোহী গ্রুপ আরসা ও আরএস কর্মী থাকতে পারে। সেনাদলের আড়ালে আরসা বা আরএস সদস্যরাও ঢুকছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার হলেও তা করা হচ্ছে না। তাদের শনাক্ত করাও হচ্ছে না। অভ্যন্তরীণ সংঘাতে অনুপ্রবেশ করা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীÑবিজিপি সদস্যদের ফিরিয়ে দেওয়ার আলোচনা এখন পর্যন্ত চালিয়ে নিচ্ছে দ্বিপক্ষীয়তায়। ২০১৭ সালে সীমান্ত খুলে দেওয়ার ঘটনায় জাতিসংঘসহ সারা পৃথিবী বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রীর মানবতার প্রশংসা করেছে। এবারের গোটা বাস্তবতাই ভিন্ন। এরই মধ্যে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পালিয়ে আসা সদস্যদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনাও চলছে। আকাশপথে না পোর্টের মাধ্যমে পাঠানো হবে, সেই আলোচনাও চলছে। এই বিজিপিসহ পুরো বাহিনীটাই বার্মিজ সামরিক জান্তা দ্বারা পরিচালিত। এরা সম্মিলিতভাবেই অংশ নিয়েছিল রোহিঙ্গা নিধনে। সেই সঙ্গে চালিয়েছিল গণহত্যা। তাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে বার্মিজ সামরিক জান্তার গুপ্তচরও। যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন কাজ করে আসছে। তা খতিয়ে দেখার প্রশ্ন থাকলেও আমল পাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত তাদের কোনো ইন্টারোগেশন করা হয়েছে কি না, করে থাকলে কী তথ্য মিলেছে, তা জানার বাইরে। ২০১৭-তে তাদের ক্রিয়াকর্মের জেরেই বাংলাদেশের ঘাড়ে চেপে আছে ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। নিরীহ বলা হলেও সেই রোহিঙ্গারা কতটা নিরীহ, মাঝেমধ্যেই ক্যাম্পে ও ক্যাম্পের আশপাশে তারা তা দেখিয়ে দিচ্ছে। মিয়ানমারে গণমাধ্যম বলতে কার্যকরভাবে কিছু নেই। দেশটির অভ্যন্তরে কী হচ্ছে, এ-বিষয়ক আপডেট তথ্য নেই। বিচ্ছিন্ন বা খণ্ডিত কিছু তথ্যই ভরসা। এর মাঝেই ইতিহাসের এক নতুন বাঁকে মিয়ানমার। যার চাবি চীন-ভারতে নয়; আটলান্টিকের ওপারে। ২০২২ সাল থেকে সেখানে ঘুরছে যুক্তরাষ্ট্রের বহুল আলোচিত বার্মা অ্যাক্ট। বাইডেনের বার্মা অ্যাক্ট নামে পরিচিত এটি। ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের স্বাক্ষরের পর এটি আইনে পরিণত হয়। যার মাধ্যমে কেবল মিয়ানমার নয়, এ অঞ্চলেরও একটি নতুন চিত্রের কানাঘুষা বেশ জোরদার।

কমেন্ট বক্স