যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে যাদের অ্যাসাইলাম কেসের আবেদন গ্র্যান্ট হয়নি কিংবা হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তাদের উচিত কেসটি ডিসমিসাল করা। তাহলে তারা পরবর্তী সময়ে নতুন করে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। তখন আবার আবেদন গ্র্যান্ট হওয়ার একটি সুযোগ তৈরি হবে। এসব কথা বলেছেন অ্যাটর্নি জান্নাতুল রুমা।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়লাভের প্রার্থনা করে দিনের পর দিন অপেক্ষা করছেন কিন্তু কোনো সুরাহা হচ্ছে না, রিমুভাল প্রসেডিংস রয়েছে, এমন অবস্থা হলে মামলা আর না এগোনোই ভালো। যারা নিয়মিত ট্যাক্স ফাইল করে থাকেন, যাদের বিরুদ্ধে কোনো ক্রিমিনাল হিস্ট্রি নেই এবং কেসে জয়ী হওয়ার ভালো ব্যাকগ্রাউন্ড রয়েছে, তারা পুরোনো কেস না চালিয়ে নতুন করে কেস ফাইল করতে পারবেন। নিয়ম হচ্ছে এখানে আসার এক বছরের মধ্যে অ্যাসাইলাম কেস ফাইল করতে হবে। যখন অ্যাসাইলাম কেস ডিসমিসাল হয়ে যায় এবং ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়, তখন সেটি আবার নবায়ন করার সুযোগ থাকে না। কারণ ইমিগ্রেশনে কোনো কেস পেন্ডিং না থাকলে ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সেটি আর নবায়ন করার সুযোগ থাকে না। এ কারণে কেউ যদি কেস ডিনাই হবে মনে করে কেস ডিসমিসাল করেন, সে ক্ষেত্রে তাকে তার ওয়ার্ক পারমিট নবায়ন করার পর করা উচিত; যাতে করে পরবর্তী সময়ে তার ঝামেলা না হয় এবং চাকরি করার সুযোগটি বন্ধ হয়ে না যায়। কেউ কেস ডিসমিসাল করার পর যদি আবার অ্যাসাইলাম কেসের জন্য আবেদন করেন, তাহলে তাকে কমপক্ষে ১৫০ দিন অপেক্ষা করতে হবে। এরপর ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন করতে পারবেন। সেই ক্ষেত্রে ওয়ার্ক পারমিট না থাকলে কাজ করতে পারবেন না। তখন আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে। তবে যারা একবার কেস ডিসমিসাল করেন, তারা নতুন করে আবেদন করার পর তাদেরকে বলতে হবে কেন তিনি আবার নতুন করে ফাইল করছেন এবং কী হয়েছিল। সবকিছু শোনার পর কোর্ট কেসটি মঞ্জুর করতে পারে, আবার না-ও করতে পারে।
অ্যাটর্নি রুমা আরও বলেন, তিনিই কেস ডিসমিসাল করতে পারেন, যার বাবা-মা তার জন্য আবেদন করেছেন, তিনি ১২ বছর ধরে এখানে আছেন। অথবা তার সিটিজেন ছেলে কিংবা মেয়ে তার জন্য কোনো আবেদন করেছেন। হাজব্যান্ড অথবা স্ত্রী তার জন্য আবেদন করেছেন। তার একটি কেস ইমিগ্রেশনে পেন্ডিং আছে। এ ধরনের ক্ষেত্রে অ্যাসালাইম কেস ডিসমিসাল করলে অন্য কেসটির সুবিধা নেওয়া যায়। ১২ বছর থাকার পরও যাদের অ্যাসাইলাম কেস অ্যাপ্রুভ হয়নি, তার বিরুদ্ধে রিমুভাল অর্ডার রয়েছে এমনটা হলে ওই ব্যক্তির স্বামী অথবা স্ত্রী, বাবা-মা কেউ যদি এখানকার সিটিজেন হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি তার হার্ডশিপ দেখিয়ে আবেদন করতে পারেন। এ ক্ষেত্রেও একটি সুবিধা পাওয়া যায়। কেউ যদি ভিকটিম হন ও ইউ ভিসার আবেদন করেন আবার তার অ্যাসাইলাম কেস আছে, তিনি চাইলে তার অ্যাসালাইম কেসটি ডিসমিসাল করতে পারেন। এ ছাড়া কারও অ্যাসাইলাম কেসে কোনো ভুল হয়ে থাকলে সেই ভুল তথ্য সংশোধন করার জন্য কেউ চাইলে কেস ডিসমিসাল করতে পারেন।
অ্যাটর্নি রুমা বলেন, অনেকে বি১, বি২ ভিসা নিয়ে এখানে আসে। তাদের কেউ অ্যাসাইলাম কেস করতে চাইলে এক বছরের মধ্যে করতে হবে। অনেকে এক বছর পার হওয়ার পর ফাইল করেন। ফলে প্রথম শর্তটি মানা হচ্ছে না। নিয়ম ও শর্ত মানা না হলে কেস গ্র্যান্ট হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। এ ধরনের পরিস্থিতি হলে কেস ডিসমিস করাই ভালো। কারণ কেস ডিসমিস করলে নরমালি হেয়ারিং শুরু হয়। কেউ ডিসমিস করলে দেশে ফিরে যেতে পারে। অনেকেই হেয়ারিং করতে চায় না। সময় চায়। এ ক্ষেত্রে আমার মনে হয় যাদের পরিস্থিতি এমন তারা চাইলে ডিসমিস করতে পারবে। এ জন্য এগ্রি করেই ডিসমিস করতে হয়। তখন সরকার ক্রিমিনাল কোনো রেকর্ড আছে কি না তা দেখে। কারও কেস যদি ডিনাই হয়ে যায়, রিওপেন করতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে। এসব ক্ষেত্রে সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই। আমি বলব, আপনি সত্যিই দেশে নির্যাতিত হয়ে থাকলে ফাইল করুন। কারণ সত্যিকার অর্র্থে অ্যাসাইলাম পাওয়ার মতো কোনো গ্রাউন্ড না থাকলে ফাইল না করাই ভালো। এমনও দেখা যায়, কেউ ভিজিট ভিসা নিয়ে একাধিকবার এখানে বেড়াতে আসছেন। ঘুরছেন বেড়াচ্ছেন। এরপর ফিরে যাচ্ছেন। আবার এসে তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অ্যাসাইলাম ফাইল করছেন। এ ধরনের কেস কীভাবে অ্যাপ্রুভ হবে? সন্দেহজনক তথ্য দেওয়া হলে কেসের ভিত শক্ত হয় না। অনুমোদনেরও সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। আবার কখনো কখনো এমনও হয়, একজনের ঘটনার সঙ্গে আরেকজনের ঘটনার কাহিনি মিলে যায়। কাহিনি মিলে যাওয়াটাও সন্দেহজনক। আসলে অনেক কিছুই সন্দেহ হতে পারে। এ জন্য আমি বলব, কখনো মিথ্যা তথ্য দিয়ে ইমিগ্রেশনে ফাইল করবেন না।