মাস্ক ও কন্ডিশনার দুটোই চুল মসৃণ করলেও উপকারিতা আলাদা। চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে আর পুষ্টি যোগাতে ডিপ কন্ডিশনার এবং হেয়ার মাস্ক দুই ধরনের কাজ করে।
ডিপ কন্ডিশনার বলতে যা বোঝায়
ডিপ কন্ডিশনারে থাকে চুল মসৃণ করার মতো উপাদান। “এটা ঘন এবং সাধারণ কন্ডিশনারের তুলনায় বেশি আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে” বলেন ভারতের সৌন্দর্যবিদ ও হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্সট সার্জন ডা. এলিনা রেহমান।
হেল্থশটস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদেন তিনি ব্যাখ্যা করেন, “ডিপ কন্ডিশনার প্রধানত তেল, প্রোটিন ও ভিটামিনের সংমিশ্রণ যা চুল মজবুত করে এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।”
এটা সাধারণত শ্যাম্পুর পরে ব্যবহার করে কয়েক মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হয়।
এটা চুল আর্দ্র রাখে, মসৃণ করে ও রং নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।
ডিপ কন্ডিশনার চুলের ক্ষয় পূরণ করে ও শুষ্কভাব কমায়, রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের ফলে হওয়া চুলের ক্ষতি পূরণ করে এবং আগা ফাটা ও ভাঙা রোধ করে।
এটা চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। খসখসেভাব কমায়।
ফলে মাথার ত্বক সুস্থ থাকে, চুল পড়া কমে ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
হেয়ার মাস্ক হল
শ্যাম্পুর পরে ব্যবহার করতে হয় এমন একটা ক্রিম ধর্মী উপাদান।
“এতে থাকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যা চুল আর্দ্র ও পুষ্ট রাখে এবং পুনর্গঠনে সহায়তা করে”- বলেন এই বিশেষজ্ঞ।
হেয়ার মাস্কের উপকারিতা
চুলকে গভীর থেকে মসৃণ করা ছাড়াও চুলের নানান রকম উপকার করে মাস্ক।
হেয়ার মাস্ক চুলকে মসৃণ করে তাই সহজে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
চুলের ক্ষয় পূরণ করে, আগা ফাটা ও ভেঙে যাওয়া কমায়।
এতে চুল থাকে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর।
চুলে জট পড়ার সমস্যা কমে এবং নির্বিঘ্নে আঁচড়ানো যায়।
চুলের বৃদ্ধি ও মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
ডিপ কন্ডিশনিং এবং হেয়ার মাস্কের পার্থক্য
ডিপ কন্ডিশনার ও চুলের মাস্ক- দুটোই মাথার ত্বকে পুষ্টি যোগায়, আর্দ্রতা রক্ষা করে। তবে পার্থক্যও রয়েছে।
উদ্দেশ্য: “ডিপ কন্ডিশনার ও মাস্কের প্রধান পার্থক্য হল- ডিপ কন্ডিশনার চুল মসৃণ করে। অন্যদিকে চুলের মাস্ক মাথার ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখার পাশাপাশি ক্ষয় পূরণে সহায়তা করে”- বলেন ডা. রেহমান।
ব্যবহার: সাধারণত, ডিপ কন্ডিশনার চুলে শ্যাম্পু করার পরে ব্যবহার করে কয়েক মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হয়।
মাস্ক, চুলে পুষ্টি যোগানোর জন্য ব্যবহারের পরে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।
উপকরণ: ডিপ কন্ডিশনারে মৃদু আর্দ্রতা রক্ষাকারী উপাদান যেমন - বিভিন্ন ধরনের তেল ও ‘হিউম্যাকটেন্টস’ থাকে। পক্ষান্তরে চুলের মাস্কে থাকে ভারী উপাদান।
কার্যকারিতা: ডিপ কন্ডীশনার মূলত প্রধানত কিউটিকেল উদ্দেশ্য করে বানানো হয়। এটা চুলের বাইরের অংশে প্রলেপের মতো সৃষ্টি কর।
হেয়ার মাস্ক চুলের গভীরে প্রবেশ করে পুষ্টি যোগায়, মসৃণ রাখে এবং স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে সহায়তা করে।
ব্যবহারের পরিমাণ: ডিপ কন্ডিশনার সপ্তাহে দুয়েকবার ব্যবহার করা যায়। এতে চুল যথেষ্ট আর্দ্র ও মসৃণ থাকবে।
অন্যদিকে হেয়ার মাস্ক চুলের ক্ষয় পূরণে ব্যবহার করা হয়। তবে কন্ডিশনারের তুলনায় হেয়ার মাস্ক কম ব্যবহার করতে হয়।
ফলাফল: ডিপ কন্ডিশনার চুলকে কম সময়ে আর্দ্র ও কোমল করে তোলে আর নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।
হেয়ার মাস্ক চুলকে গভীর থেকে পুষ্টি যুগিয়ে ক্ষয় পূরণ ও মজবুত করে।
কোনটা ব্যবহার করা উচিত?
চুলের ধরন বুঝে মাস্ক অথবা কন্ডিশনার বাছাই করতে হবে। ডিপ কন্ডিশনার ক্ষতিগ্রস্ত, শুষ্ক ও রুক্ষ চুলের জন্য উপকারী। এতে চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং পুষ্টি পায়।
চুল নির্জীব বা বিবর্ণ হলে হেয়ার মাস্ক ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়। এতে চুল মজবুত হয় এবং ঘনত্ব বাড়ে।
তাই কেমন ফলাফল চাচ্ছেন সেটার ভিত্তিতে কন্ডিশনার বা মাস্ক বাছাই করতে হবে।
ঠিকানা/এসআর