Thikana News
০৪ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪

রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেও তালিকায় নাম নেই আনোয়ার রহমানের

রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেও তালিকায় নাম নেই আনোয়ার রহমানের আনোয়ার রহমান আনু
ঠিকানা রিপোর্ট : নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার রহমান আনু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক মহম্মদ আতাউল গণি ওসমানী স্বাক্ষরিত সনদ রয়েছে তাঁর। যার নম্বর ১৩০২৪০। কিন্তু তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে রাষ্ট্রের কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না। এমনকি তালিকায়ও তার নাম নেই। তিনি আক্ষেপ করে বলেছেন, দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করলাম। অথচ আজ আমি সবকিছু থেকে বঞ্চিত। সম্প্রতি ঠিকানা’র সঙ্গে আলাপকালে এ আক্ষেপ করেন মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার রহমান অনু।
ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা ও তৎকালীন ঢাকা মিউজিক কলেজের ছাত্র আনোয়ার রহমান আনু ১৯৮৫ সালে সন্তানদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হয়েছেন। বর্তমানে নিউইয়র্কের বিংহ্যামটনে নিজ বাড়িতে সস্ত্রীক বসবাস করছেন।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে আনোয়ার রহমান আনু জানান, তাঁর বাবা সরকারি চাকরি করতেন। ৫ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে জীবনকে তুচ্ছ করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এর আগে ভারতের আগরতলায় তিন মাস সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে ঢাকায় গেরিলা যোদ্ধা আনোয়ার রহমান আনু পিলখানা অপারেশনে অংশ নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক এমপি, ঢাকা উত্তর মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধকালীন কমান্ডার নাসির উদ্দিন ইউসুফ, সেক্টর-২ রিইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল আলম বীর প্রতীক এবং ২ নং সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা ও ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ প্রকাশক শহীদুল্লাহ খান তাঁর সহযোদ্ধা ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর আনোয়ার রহমান আনু মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক মহম্মদ আতাউল গণি ওসমানী স্বাক্ষরিত সনদ পেয়েছেন। কিন্তু কখনো ভাবেননি বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক মেরুকরণে তার নামটি মুক্তিযুদ্ধের তালিকা থেকে বাদ পড়বে। এই আক্ষেপ করে তিনি বলেন, আমার সহযোদ্ধারা আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তারা আমাকে প্রত্যায়ন করেছেন। সবগুলো প্রত্যায়নপত্র এ প্রতিবেদককে দিয়ে তিনি বলেন, এতকিছুর পরও তার নাম নেই। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে এর চেয়ে বড় দুঃখ আর কী হতে পারে?
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এক প্রত্যায়নপত্রে উল্লেখ করেছেন, ‘আনোয়ার রহমান আনু আমার সাথে ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গেরিলা অপারেশনে অংশগ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে তার উজ্জ্বল অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক এমপি এক প্রত্যয়ন পত্রে উল্লেখ করেন, আনোয়ার রহমান আনু বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন বীর সৈনিক এবং একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে আমরা প্রথমে ত্রিপুরার মতিনগরে এবং পরে মেলাঘরে একসাথে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনীর ২ নং সেক্টরের ক্র্যাক প্লাটুনের অধীনে ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আমরা একসাথে গেরিলা অপারেশন করেছি, যা মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন বই-পুস্তকে উল্লেখ আছে।
ঢাকা উত্তর মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধকালীন কমান্ডার নাসির উদ্দিন ইউসুফ, সেক্টর-২ রিইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল আলম বীর প্রতীক এবং ২ নং সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা ও ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ প্রকাশক শহীদুল্লাহ খান আনোয়ার রহমান আনুকে তাদের সহযোদ্ধা হিসাবে বলছেন। অথচ কী কারণে আনোয়ার রহমান আনু সব কিছু থেকে বঞ্চিত তা বলতে পারেন না। জীবন সায়াহ্নে এসে দৌঁড়াতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন তিনি।

কমেন্ট বক্স