Thikana News
২৮ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
টাইমস অব ইসরাইলের রিপোর্ট

গাজাজুড়ে ইহুদি বসতি নির্মাণের দাবি, ক্ষিপ্ত যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্স  

গাজাজুড়ে ইহুদি বসতি নির্মাণের দাবি, ক্ষিপ্ত যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্স  



 
দখল করে নেয়া গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি ইহুদি বসতি পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মিত্ররা। এর মধ্যে আছেন কয়েকজন মন্ত্রীও। বিশেষ করে এক্ষেত্রে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উগ্র ডানপন্থি মন্ত্রী ইতামার বেন গাভির-এর নাম উল্লেখ করা যায়। এমন মন্তব্যে ক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইসরাইল। 

বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের নিয়ে একে ভয়াবহ উস্কানি সৃষ্টির ইস্যু হিসেবে মনে করছে হোয়াইট হাউস। তারা বলছে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের যে পলিসি, ওই মন্ত্রীদের বক্তব্য তার বিরুদ্ধে যায়। রোববার রাতে জেরুজালেমে এক সম্মেলনে ওই মন্তব্য করেন কয়েকজন মন্ত্রী ও এমপি। সম্মেলনে যোগ দেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মন্ত্রিপরিষদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। সেখান থেকে গাজা উপত্যকায় নতুন করে ইহুদি বসতি স্থাপনে উৎসাহিত করা হয়। 
 
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্রের দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই সম্মেলন নিয়ে বিরক্ত যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, সেখান থেকে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে। 

তারা গাজার জনগোষ্ঠীকে বাস্তুচ্যুত করে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। হোয়াইট হাউস বলেছে, গাজার বাইরে ফিলিস্তিনিদের জোর করে পুনর্বাসন করার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, অব্যাহত এবং দ্ব্যর্থহীন অবস্থান আমাদের। তারা যে বক্তব্য দিয়েছেন তা উস্কানিমূলক এবং দায়িত্বহীনের। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কথা আমরা শুনেছি। তিনি বলেছেন, গাজা পুনরায় দখল করে নেয়ার ইচ্ছা নেই ইসরাইলের। এই বিবৃতিতে নিজের জোটসঙ্গীদের এমন আহ্বান দমন করার জন্য নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র। 

ওদিকে নেতানিয়াহু বলেছেন, ওই সম্মেলনের এজেন্ডা তার সরকারের নীতি নয়। কিন্তু এতে যোগ দেন ১১ জন মন্ত্রী এবং জোটের ১৫ জন পার্লামেন্ট সদস্য। ফলে এ নিয়ে ইসরাইলে এবং বিশ্বের অন্য স্থানগুলোতে মানুষের ভ্রু উত্থিত হয়েছে। শুরুতে ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) জোর দিয়ে বলেছিল, যাতে লোকজন ক্রসফায়ারে না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে তারা গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে তাদেরকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু গাজায় ইহুদি বসতি স্থাপনের জন্য এমন আহ্বান যখন মন্ত্রিপরিষদের ভিতর থেকে ওঠে, তখন ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের প্রসঙ্গ সামনে আসে। অর্থাৎ গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্য কোথাও সরিয়ে দিয়ে সেখানে ইহুদি বসতি নির্মাণ করতে চায় তারা। কিছুদিন আগেও এমন একটি রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, গাজার ফিলিস্তিনিদের উগান্ডাসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে জোরপূর্বক পাঠিয়ে দেয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। 

রোববারের ওই সম্মেলনের নিন্দা জানিয়েছে ফ্রান্সও। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে বলা হয়, ওই সমাবেশে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তার নিন্দা জানিয়ে ইসরাইল সরকার পরিষ্কার বার্তা দেবে বলে আশা করে ফ্রান্স। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, সম্প্রতি ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) যে মামলা হয়েছে, আদালত তার ক্ষমতাকে ব্যবহার করে এমন সম্মেলনের বিরুদ্ধে সব ব্যবস্থা নেবে এবং এ ধরনের জ্বালাময়ী অবস্থানের জন্য শাস্তি দেবে বলে আশা করে ফ্রান্স। ফ্রান্স আরও বলেছে, ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূখণ্ডে বসবাস করাই উচিত। তারা কোথায় বসবাস করবেন, সেটা ইসরাইল সরকারের সিদ্ধান্ত দেয়ার বিষয় নয়। গাজা উপত্যকা এবং সেখানে বসবাসকারী জনগণ একীভূত একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অধীনে ইসরাইলের পাশাপাশি শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে বসবাস করবেন। 

উল্লেখ্য, রোববারের ওই সম্মেলনে জায়নবাদী সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছিল। এতে বক্তব্য রাখে বেশ কয়েকজন এমপি। এর মধ্যে আছে উগ্র ডানপন্থি এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন গাভির। তিনি গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদেরকে স্বেচ্ছায় চলে যাওয়াকে উৎসাহিত করার বিষয়ে বক্তব্য রাখেন। একই সঙ্গে গাজা উপত্যকায় নতুন করে ইসরাইলিদের বসতি স্থাপনের আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা গান পরিবেশন করে এবং নাচে। তাতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিল বেন গাভির। উপস্থিত ছিল যোগাযোগ বিষয়ক মন্ত্রী স্লোমো কারহি। তিনি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ক্ষমতাসীন দল লিকুদ পার্টির সদস্য। তিনি বলেন, যুদ্ধ চলাকালীন স্বেচ্ছায় অভিবাসী হতে উদ্বুদ্ধ করা যাবে না। রোববারের এই ইভেন্টে সরকারের সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকলেও তার নিন্দা জানাননি নেতানিয়াহু। তবে নিন্দা জানিয়েছেন ন্যাশনাল পার্টির মন্ত্রীরা। তারা এই সম্মেলনকে বিভক্তি সৃষ্টিকারী এবং দেশের যুদ্ধে ক্ষতিকর বলে সমালোচনা করেছেন। 

ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। তিনি বলেছেন, তার নজরে এমন কোনো পুনর্বাসন বা নতুন বসতি নির্মাণ অনুমোদন দেবেন না।

ঠিকানা/এসআর
 

কমেন্ট বক্স