বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যেকোনো দুর্যোগে দেশের মানুষের পাশে আওয়ামী লীগ ছিল এবং অবদান রেখেছে। সংকটের মধ্যেও দেশ এগিয়ে গেছে; যা বিশ্বনেতারা তাদের মন্তব্যে তুলে ধরেছেন। তাই বিএনপি নামক দলটির অন্তর্জ্বালা। এজেন্যে প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে। নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই, বিদেশিরা আমাদের বন্ধু।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আজ ২৮ মে (রবিবার) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের এক যৌথসভায় ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
নেত্রীর নির্দেশ, সকল জেলা, মহানগর, ইউনিয়ন, প্রয়োজনে ওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। আপনাদেরকে আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, যেহেতু আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, সেজন্য এই শান্তি সমাবেশ। কারো সাথে পাল্টা-পাল্টি মিটিং, সমাবেশ করা আমাদের রাজনীতি নয়।
সেতুমন্ত্রী বলেন, কোনো অবস্থায় বিএনপির নেতাদের ওপর আক্রমণ করা যাবে না। তবে তারা করলে আর ছাড় নয়। কোনো নিষেধাজ্ঞায় নির্বাচন বন্ধ হবে না। নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই, বিদেশিরা আমাদের বন্ধু। বিএনপি অসুস্থ রাজনীতি করে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিএনপির পরাজয় হবে। নোংরা ও নষ্ট রাজনীতি করে বিএনপি। এদের কাছে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ নিরাপদ নয়। তাই শপথ নিতে হবে, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক এই অপশক্তি বিএনপিকে প্রতিহত করতে হবে।
আওয়ামী লীগ অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। কিন্তু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি। দেশের সংবিধানে যেহেতু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপার উল্লেখ নেই, তাই এ বিষয়ে কথা বললে বিএনপি ভিসানীতিতে আক্রান্ত হবে। এখন যারা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে তাদের ব্যাপারে আমেরিকার পদক্ষেপ কী হবে, সেটাই দেখার বিষয়।
গাজীপুরে আমরা কিছু ভোটে হেরে গেছি, কিন্তু নির্বাচন গণতান্ত্রিক ও অবাধ হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে দেশে বিদেশে কেউ কিছু বলতে পারেনি। আমরা আমাদের গণতন্ত্রকে জয়ী করেছি, সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচন করে। সামনেও বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহীতে ইলেকশন আছে, এই নির্বাচনগুলোও অবাধ এবং সুষ্ঠু হবে। শেখ হাসিনা সরকারের নীতি হচ্ছে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন করতে হবে। জনগণ ভোট দিলে আছি, ভোট না দিলে নেই। আমরা আমাদের এই নীতিতে অটল থাকব। গতকাল বাড্ডায় বিশাল সমাবেশ হয়েছে, তার আগে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে হয়েছে। সারা দেশে আমরা এখন শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য শান্তি সমাবেশ করব।
সহযোগী সংগঠনগুলোকে আওয়ামী লীগের সমাবেশে অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, এখন সবার ইউনাইটেডলি মুভ করতে হবে, কোনো ছাড় নেই। আমরা আক্রমণ করবো না, কিন্তু আক্রমণ করলে আমরা ছেড়ে দিবো না।
আমরা অনেক সহ্য করেছি, অনেক মারামারি করেছি। এই অফিসের সামনে ২১ ফেব্রুয়ারির আলোচনা আমাদেরকে করতে দেওয়া নি। এই অফিসের সামনে মতিয়া চৌধুরীকে, মোহাম্মদ নাসিমকে পেটানো হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদেরকে বারবার নির্যাতন-অত্যাচার করা হয়েছে। অনেককে অ্যারেস্ট করা হয়েছে, সাবের হোসেন চৌধুরীকে প্লেট চুরির অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই নোংরা রাজনীতি তারাই করে, যাদের রাজনীতিই নোংরা। নষ্ট কথা তারাই বলে, যাদের রাজনীতিই নষ্ট। এরা নষ্ট-অসুস্থ রাজনীতি করে। এদের হাতে স্বাধীন-গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। এই অপশক্তির হাতে এত রক্তের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে আমরা তুলে দিতে পারি না। এরা আসা মানে গণতন্ত্র শেষ, আবার ভোট চুরি, হাওয়া ভবন, অর্থ পাচার, বাংলাদেশ দুর্নীতিতে আবার চ্যাম্পিয়ন। এই অপশক্তির হাতে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশকে তুলে দিতে পারি না।
আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকবে। নিজেরা নিজেদের সাথে লড়াই করলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চায়ের দোকানে বসে নিজের দলের লোকের নামে গিবত করবেন, এটা আওয়ামী লীগ নয়। আওয়ামী লীগের কোনো কর্মী-নেতা তা করতে পারে না। যারা প্রার্থী আছেন, একসঙ্গে জনসংযোগ করে নৌকার পক্ষে ভোট চাইবেন। আমাদের নেত্রী, মনোনয়ন বোর্ড যাকে মনোনয়ন দিবে, তার পক্ষে কাজ করবেন। আমরা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী রাখব, নিজেরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে শেখ হাসিনা শক্তিশালী হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর প্রমুখ।
এসআর