আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠেয় সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কার্যত পানসে করে দিয়েছে বর্তমান মেয়র আরিফুল হকের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা। ফলে গত ২৩ মে ঢাকঢোল পিটিয়ে মনোনয়ন জমাদান শেষ হলেও মেয়র পদে নির্বাচন অনেকটাই জৌলুস হারিয়েছে বলে মনে করছেন সিলেটের সচেতন নাগরিকেরা। যদিও মেয়র পদে ১১ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আর কাউন্সিলর পদে জমা দিয়েছেন ৩৭৬ প্রার্থী।
সিলেট সিটি নির্বাচনকে ঘিরে প্রথম ঝড় ওঠে মূলত আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচনের পরপরই। সিলেট আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পেছনে ফেলে নৌকা প্রতীক পান যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এরপর দলীয় প্রার্থীর পক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ মাঠে নামলেও একের পর এক রহস্য তৈরি হয় বিএনপি নেতা এবং বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর প্রার্থীতা নিয়ে। প্রায় একমাস নানা সভা, সমাবেশে প্রার্থী হবেন কি, হবেন না বিষয়টি ধোঁয়াশায় রেখে অবশেষে গত ২০ মে সমাবেশ ডেকে নির্বাচন না করার ঘোষণা দেন তিনি। সেদিন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আরিফুল হকের প্রার্থী না হওয়ায় ‘কষ্ট’ পেয়েছেন বলে ‘সিদ্ধান্ত’ পুনর্বিবেচনার দাবি জানান। কিন্তু সিলেটের রাজনৈতিক মহলের মতে, আরিফের সেই ঘোষণার পর আনোয়ারুজ্জামানের পথ অনেকটাই মসৃন হয়ে গেছে।
এদিকে পথ কণ্টকমুক্ত জেনেও ঘরে বসে নেই আনোয়ারুজ্জামান। অন্য প্রার্থীদের প্রচারণা খুব একটা চোখে না পড়লেও কর্মী, সমর্থক নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। নির্বাচিত হলে নগর উন্নয়নে তাঁর ভাবনা বিনিময় করছেন ভোটারদের সাথে। সামাজিক-সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের সাথে সভা করছেন প্রতিদিন।
আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইভিএমে হবে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৫ মে, প্রত্যাহারের শেষ সময় ১ জুন।
উল্লেখ্য, সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে। ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই নগরে ওয়ার্ড আছে ৪২টি। মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬৩ জন এবং নারী ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪২ জন। মোট কেন্দ্র ১৯০টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ৩৬৪টি। আগামী ২১ জুন পঞ্চমবারের মতো সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।