আবেদনের পর যথাসময়ে পাসপোর্ট না পাওয়ায় ভিসা জটিলতায় ভুগছেন প্রবাসীরা। মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টে প্রবাসীরা পাচ্ছেন না ভিসা, হচ্ছেন অবৈধও। কারও কারও ক্ষেত্রে মালিকপক্ষ স্বেচ্ছায় ভিসা দিতে চাইলেও প্রবাসীরা পাসপোর্ট সংকটে সেই ভিসাও নিতে পারছেন না। পরবর্তী সময়ে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ভিসা নিতে হচ্ছে। ভিসাপ্রাপ্তিতে কখনো কখনো দালালের খপ্পরেও পড়ছেন প্রবাসীরা। এতে অধিকাংশ সময়ই ভিসা ও টাকা দুটোই খোয়াতে হচ্ছে প্রবাসীদের। এ পরিস্থিতিতে অবৈধভাবে অবস্থান করায় বিভিন্ন দেশ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে দেশে ফেরত আসতে হচ্ছে অনেককেই। এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি চান প্রবাসীরা।
বাহরাইন, কুয়েত, সৌদি আরব ও দুবাইয়ের একাধিক প্রবাসী জানান, আগে আবেদন করার পর পাসপোর্ট পেতে সময় লাগত সর্বোচ্চ এক মাস। পরে সে সময় বেড়ে দাঁড়ায় ১ মাস ১০ দিন। আর এখন দুই থেকে আড়াই, এমনকি তিন মাসেও পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না। এতে প্রবাসে অবস্থানরত প্রবাসীদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে। এ জটিলতায় অনেকেই দেশে ফিরতেও বাধ্য হচ্ছেন। এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য তারা পাসপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে সময় কমিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন। তারা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের উদাহরণ টেনে বলছেন, ওই দেশের প্রবাসীরা নবায়নের আবেদন করার ১০ দিনের মধ্যেই স্বাভাবিকভাবে পাসপোর্ট পেয়ে যাচ্ছেন। ইমার্জেন্সি আবেদনের ক্ষেত্রে চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই পাচ্ছেন পাসপোর্ট। অথচ আমাদের ক্ষেত্রে তা আড়াই থেকে তিন মাস লাগছে। পাসপোর্ট নবায়নের ক্ষেত্রে সময় ২০ দিনের মধ্যে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন প্রবাসীরা। আবার অনেকেই বলছেন, পাসপোর্ট অনলাইন করা নিয়েও ভোগান্তি হচ্ছে প্রবাসীদের। পাসপোর্ট অনলাইন করতে বাড়তি খরচও করতে হচ্ছে তাদের।
যদিও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ প্রবাসী নিজেদের দেওয়া তথ্যগত ভুলের কারণে সময়মতো পাসপোর্ট পাচ্ছেন না। এ ক্ষেত্রে কালক্ষেপণের জন্য পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কিছুই করার নেই। তাদের ভাবখানা এমন, যেন পাসপোর্ট প্রাপ্তিতে কালক্ষেপণের জন্য প্রবাসীদের অজ্ঞতাই দায়ী।
প্রবাসীদের এসব সমস্যার বিষয়ে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের পরিচালক (পাসপোর্ট, ভিসা ও পরিদর্শন) সাঈদুল ইসলাম বলেন, প্রবাসীদের পাসপোর্টের বিষয়ে এমনটি হওয়ার সুযোগ নেই। তবে প্রবাসীদের তথ্যগত ভুলের কারণে অনেক সময় সমস্যা হতে পারে। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ প্রবাসী এ ধরনের সমস্যা তৈরি করছেন। এ ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কিছু করার নেই। আর এ ধরনের সমস্যায় পড়লে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে যোগাযোগের কথাও বলেন তিনি। যদিও দূতাবাসগুলো এসব সমস্যার দায় নিতে চায় না বলে জানান প্রবাসীরা।