রাজধানীর গোপীবাগে আন্তনগর বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবীর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবার (৬ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমুর আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক আশরাফুল আলম যাত্রাবাড়ী থানায় করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় এই আসামির সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
মামলার আবেদনে বলা হয়, মামলার এজাহারনামীয় আসামি নবী উল্লাহ নবী গত ৫ নভেম্বর যাত্রাবাড়ী থানাধীন চৌরাস্তা থেকে ধোলাইপাড়গামী রাস্তার সড়কে বিজিবি মার্কেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর বেআইনিভাবে দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্র-শন্ত্র, ইট-পাটকেল, বাঁশের লাঠি ও ককটেলসহ অবস্থান নেন। তারা সরকারবিরোধী উসকানিমূলক ও অবমাননাকর স্লোগান দিতে থাকেন। সড়কে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে চরম জনভোগান্তি তৈরি হয়। নবীসহ অন্য আসামিরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে এবং সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ঘটনাস্থলে রাস্তার পাশে পার্কিং করা গ্রেট তুরাগ ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির দুটি বাসে অগ্নিসংযোগসহ ককটেল বিস্ফোরণ করে সড়কে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাধায়। অগ্নিসংযোগে দুটি বাসের ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।
রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, আসামি নবী উল্লাহ নবীর নির্দেশ ও হুকুমে পলাতক নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাতপরিচয় বিএনপির দুষ্কৃতকারীরা নাম না-জানা অনেকের প্ররোচনা, নির্দেশনা, যোগসাজশ এবং সহযোগিতায় বেআইনিভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে যান চলাচল বন্ধ করে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পুলিশের কাজে বাধাসহ পুলিশকে আক্রমণ এবং ককটেল বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অভিযানকালীন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামি নবী উল্লাহ নবী গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী, অর্থদাতা ও ইন্ধনদাতা।
অন্যদিকে নবীর পক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত তার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিএনপি ও সমমনাদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরুর আগের রাতে গত ৫ জানুয়ারি দিবাগত রাত নয়টার দিকে রাজধানীর গোপীবাগে যশোরের বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে চলন্ত অবস্থায় আগুন দেওয়া হয়। আগুনে দুই নারী, এক শিশুসহ অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের কারও কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
আগুনের ঘটনার পরপরই শুক্রবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নবী উল্লাহ নবীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
ঠিকানা/এনআই