সরকার বা নির্বাচন কমিশন থেকে নয়, বরং নির্বাচন বর্জন করা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে ভোটারদের প্রতি চাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে বিদেশি কূটনীতিকদের জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দূতাবাস, হাইকমিশন ও মিশনপ্রধানদের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকদের এমনটাই জানান সিইসি।
সিইসি বলেন, ‘তারা জিজ্ঞেস করেছেন যে আমাদের থেকে বা সরকার থেকে বা ইলেকশন কমিশন থেকে ভোটারদের চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে কি না। তাদের বুঝিয়েছি, আমাদের থেকে চাপ সৃষ্টির কোনো কারণই নাই। তবে এটা আমাদের দায়িত্বের অংশ যে আমরা যখনই নির্বাচন করি, আমরা ভোটার সাধারণের কাছে একটা আবেদন রাখি—সেটা হলো আপনারা ভোটকেন্দ্রে এসে আপনাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। সেটা চাপ নয়, এটা হচ্ছে অ্যাওয়ারনেস। বরং চাপের কথা যদি আপনারা বলেন, একটা চাপ অন্য দিক থেকে হতে পারে। একটি দল নির্বাচন বর্জন করছে, তারা ভোটারদের প্রতি একধরনের চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এটা আমরা তাদের ব্যাখ্যা করেছি।’
বিদেশি দূতদের আমন্ত্রণের বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। কারণটা হচ্ছে, তারা (বিদেশি দূতরা) সব সময় আমাদের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী। তারা বিভিন্ন সময়ে আমাদের কার্যালয়ে এসেছেন, মতবিনিময় করেছেন। তাদের সবার প্রত্যাশা হলো, আগামী নির্বাচনটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ হয়। এ জিনিসটার ওপর তারা খুব জোর দিতে চান।’
সিইসি বলেন, ‘আমরা লাস্ট অবস্থাটা তাদের ব্রিফ করেছি এবং আমি একটা স্টেটমেন্ট রিড আউট করেছি। এখন পর্যন্ত আমরা কোন অবস্থানে আছি। বিদেশি দূতরা শুনেছেন। তারা দু-চারটা প্রশ্ন করেছেন। তেমন কিছু নয়। যে প্রশ্নগুলো এসেছে—তার মধ্যে একটি হলো, অভিযোগ কী পরিমাণ পাচ্ছি? অভিযোগ কত। আমরা তাদের জানিয়েছি যে অভিযোগ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।’
সিইসি বলেন, ‘ছোটখাটো অভিযোগ হতে পারে। কেউ কারও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলল। আমরা প্রায় ছয় শর মতো অভিযোগ পেয়েছি। এর মধ্যে প্রায় চার শর মতো অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছি।’
অভিযোগ ছাড়াও রাষ্ট্রদূতরা ভোটের ফলাফল প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছেন উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘আমরা তাদের জানিয়েছি, রেজাল্টের ব্যাপারে আমরা একটা অ্যাপ করেছি। স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ। আমরা তাদের অবহিত করেছি, প্রতিটি কেন্দ্রে পোলিং চলাকালে দুই ঘণ্টা পরপর যে তথ্য আমাদের প্রতিটি ইলেকশন সেন্টার পাওয়া যাবে, তা আপলোড করা হবে। আপলোড করা হলে যেকোনো নাগরিক পৃথিবীর যেকোনো স্থান বা বিদেশ থেকে এক্সেস নিয়ে জানতে পারবে ভোটের পরিমাণটা কীভাবে হচ্ছে।’
সিইসি বলেন, ‘অ্যাপটা পরিচিত করার উদ্দেশ্য হলো, আমরা টোটাল যে ক্রেডিবিলিটি বা স্বচ্ছতা যে অবস্থানটা, সেটা আরও বেশি গ্রহণযোগ্য করা। যেন তারা আশ্বস্ত হতে পারেন। যাতে কোটেশান দেখে সেন্টারে কোনো রকম অনিয়ম, কারচুপি বা অতিদ্রুত জাম্প হয়ে গেল কি না বা অবিশ্বাস্য কোনো কিছু ঘটেছে কি না, সেটা তারা জানতে পারেন।’
সহিংসতা নিয়ে কিছু জানতে চেয়েছে কি না, একই সঙ্গে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়ে তারা কিছু জানতে চেয়েছেন—এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘না, এ বিষয়ে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করেনি।’
৭ তারিখে কোনো সহিংসতার আশঙ্কা করছেন কি না—জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘না, ওটা আমি বলতে পারব না।’
ঠিকানা/এনআই