শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় নোবেল বিজয়ী ও গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস দোষী সাব্যস্ত হবেন কি না তা জানা যাবে আগামী ১ জানুয়ারি।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) এ মামলার সর্বশেষ ধাপ যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা। বেলা ১১টার কিছু পরে শুনানি শুরু হয়। দুবার বিরতি দিয়ে রাত প্রায় সোয়া আটটা পর্যন্ত শুনানি চলে। শুনানিকালে ড. ইউনূস আদালতে হাজির ছিলেন। এজলাসে রক্ষিত বেঞ্চে বসে ছিলেন তিনি। তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে অভিযোগ থেকে খালাসের আরজি জানান তার আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মামলার বাদী কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. হায়দার আলী ও মো. খুরশীদ আলম খান। অ্যাডভোকেট খুরশীদ শুনানিতে শ্রম আইনের লঙ্ঘনের অভিযোগে ড. ইউনূসের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
মামলার নথি অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করার অভিযোগে ড. ইউনূস, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার শ্রম আদালতে মামলা হয়। মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হলে ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর মামলার কার্যক্রম স্থগিতের পাশাপাশি তা বাতিল প্রশ্নে রুল দেন হাইকোর্ট। গত বছরের ১৭ আগস্ট রুল খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট। এ রায় স্থগিত চেয়ে ড. ইউনূসের করা লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতির আবেদন) আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে গত ৮ মে তা খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর পরই এ মামলা বিচারের পর্যায়ে আসে।
গত ২২ আগস্ট এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। এরপর ৬ নভেম্বর চতুর্থ সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১১ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত। ওই দিন ড. ইউনূস হাজির হয়ে আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত লাভের জন্য তিনি কিছু করেননি। আদালতের কাছে ন্যায়বিচারের আরজি জানান তিনি। এরপর সাক্ষীদের বক্তব্যের ওপর যুক্তিতর্কের শুনানি শুরু হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, এই মামলায় অভিযোগে সংশ্লিষ্ট আইনে ছয় মাস কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা তথ্য, প্রমাণ ও যুক্তিতর্কের মাধ্যমে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি, তার দৃষ্টান্তমূলক সাজা হবে।’
ড. ইউনূসের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এই মামলায় অভিযোগ প্রমাণ করার মতো কিছুই নেই। আমরা আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব। তিনি এ মামলার অভিযোগ থেকে খালাস পাবেন।’
ঠিকানা/এনআই



ঠিকানা অনলাইন


