Thikana News
১৫ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

৮ লাখ কোটি টাকা ঋণের বোঝা বাংলাদেশের ওপর

৮ লাখ কোটি টাকা ঋণের বোঝা বাংলাদেশের ওপর
বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশের কাছে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ পৌনে আট লক্ষ কোটি টাকা (৭ হাজার ৩০০ কোটি ডলার)। মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। বাংলাদেশ সর্বাধিক পরিমাণ ঋণ নিয়েছে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে। এই ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৮৩৫ কোটি ডলার। এর পরই এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির কাছ থেকে বাংলাদেশের নেওয়া ঋণের পরিমাণ 
দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬৬ কোটি ডলার। চীন, রাশিয়া, জাপান, ভারতের কাছ থেকেও বাংলাদেশ ঋণ নিয়েছে। জাপানের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ প্রায় হাজার কোটি ডলার। রাশিয়ার কাছে ঋণ ৫১৯ কোটি ডলার ও চীন পাওনা হয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার। আইএমএফের কাছে ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৪৭০ কোটি ডলার।
জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশ বিদেশ থেকে যতটা সম্ভব ঋণ নেওয়া কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও বিদ্যমান বাস্তবতায় উন্নয়নকাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণের পরিমাণ কমানোর সুযোগ খুবই সীমিত। বরং বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। জরুরি প্রয়োজন দেখা দিয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বাড়ানো, অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণ বাড়ানো। সে ক্ষেত্রেও বাংলাদেশকে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
সরকার আগামী অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েই যথাযথ কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বিদ্যমান আর্থিক সুবিধাসমূহ পাবে। ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশ এই সুবিধা আর পাবে না। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পর বৈদেশিক সাহায্য ও ঋণসুবিধা সংকুচিত হয়ে আসবে। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ সম্ভাব্য সমস্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশকে প্রস্তুতি গ্রহণের তাগিদ দিয়ে আসছে। নিজস্ব অর্থে বিশাল ব্যয়সাপেক্ষ মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ আর্থিক সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। বৈদেশিক ঋণপ্রাপ্তির বেলায় তা অনেকাংশে সমস্যা সৃষ্টি করছে।
আইএমএফ শর্ত দিয়েছে, আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশকে রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে। ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে মধ্যমেয়াদি রাজস্ব কৌশল প্রণয়ন করতে হবে। করনীতি প্রতিপালন ও এ জন্য কার্যকর নীতিমালা গ্রহণ এবং কর জিডিপির অনুপাত দশমিক ৫ শতাংশ বাড়াতে হবে। কর অব্যাহতির হার কমিয়ে আনা, মধ্যমেয়াদি রাজস্ব কৌশল বাস্তবায়ন, কর-সংক্রান্ত বিধিবিধান যথাযথভাবে কার্যকর করা, খেলাপি ঋণ আদায় ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমানো মূলধন ঘাটতি লাঘব করার শর্ত দিয়েছে। ২০২৬ সালের পর কর অব্যাহতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো এবং কর জিডিপির অনুপাত আরও দশমিক ৭ শতাংশ বাড়াতে বলেছে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীরা।
উল্লেখযোগ্য সংস্কারসমূহ সম্পাদিত হলে রাজস্ব আদায় বাড়বে এবং বাজেট ঘাটতি কমে আসবে বলে উন্নয়ন সহযোগীরা মনে করেন। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৪৬ কোটি টাকা সংগ্রহের মাধ্যমে এই ঘাটতি মেটানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু তা সফল হয়নি। বাজেট ঘাটতি কমাতে সরকার বিদেশিদের শর্তানুযায়ী বিদ্যুৎ, জ্বালানির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে। দুর্দশাগ্রস্ত দেশবাসীর ওপর বোঝা বাড়িয়ে সরকার বাজেট ঘাটতি কমিয়ে আনার নীতি নিয়েছে। দেশের মানুষের স্বার্থ বিবেচনায় সরকারের এ নীতিকে আত্মঘাতী বলে মনে করা হচ্ছে।

 

কমেন্ট বক্স