তাইজুলের জন্য বিষয়টি অভিনবই। পুরস্কার বিতরণীর পর তাঁর সঙ্গে হাত মেলানো ও সেলফি তোলার হুড়োহুড়ি পড়ে গেল। দেশের এক প্রভাবশালী পত্রিকার নামি ফটোসাংবাদিক তো তাঁকে দৌড়ে ধরলেন। এই সেলফি শিকারিদের জন্য নির্বাচক হাবিবুল বাশার পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে কথা বলতে এসে অনেকক্ষণ অপেক্ষায় থাকেন। প্রায় ৯ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এই প্রথম সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে তাইজুল ইসলাম।
অথচ ২০১৪ সালে অভিষেকের পর থেকে এখন পর্যন্ত টেস্টে তাঁর চেয়ে বেশি উইকেট বাংলাদেশের কেউ নিতে পারেননি। এমন পারফরমারের ওপরই তো সব সময় আলোটা থাকার কথা। কিন্তু যত ভালোই খেলুন না কেন, আড়ালে পড়ে থাকাটাই যেন মৃদুভাষী-নির্বিবাদী তাইজুলের নিয়তি। তবে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। সাংবাদিক-সংগঠক তো বটেই, বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় দুই তারকা সাকিব-তামিমও ইদানীং তাঁকে বিশেষ খাতির করছেন। তাইজুলের ঘূর্ণিতে চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পরই তাঁকে ফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাকিব ও তামিম। 
গতকাল পুরস্কার বিতরণীর পর তাইজুল নিজেই জানান সে তথ্য, ‘সাকিব ভাইয়ের সঙ্গে কাল (শুক্রবার) ফোনে কথা হয়েছে। সাকিব ভাই নিজেই ফোন দিয়েছিলেন। তামিম ভাইয়ের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে আমার নিয়মিতই কথা হয়। তাঁকে আমি ব্যক্তিগতভাবে বড় ভাইয়ের মতো মনে করি।’ 
টেস্টে নিয়মিত হলেও শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে নিউজিল্যান্ড সফরের ওয়ানডে দলে সুযোগ না পাওয়ায় কিছুটা হতাশাও শোনা গিয়েছিল তাইজুলের কণ্ঠে। গতকাল জয়ের পর অবশ্য সেই হতাশা ছিল না তাঁর কণ্ঠে, ‘কোনো খেলোয়াড়ই সারা জীবন খেলবে না। আমার একটাই আশা, আমার জায়গায় যে আসবে, সে পারফর্ম করবে। যেই-ই আসুক, যেন বাংলাদেশকে ভালো কিছু দিতে পারে।’
ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ১০ উইকেট পেলেন বাঁহাতি এ স্পিনার। এর মধ্যে ম্যাচসেরা হয়েছেন ৯ বছর পর। ক্যারিয়ারের শুরুতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুরে দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন। গতকাল ম্যাচসেরা হয়ে নিজের চেয়ে দলের কথাই বেশি শোনালেন তাইজুল, ‘যখন আপনি অনেক বড় কিছু পাবেন, তখন উদযাপন সব সময়ই হয়। আমরা যে আজকে উদযাপন করিনি, তা নয়। অবশ্যই আমরা উদযাপন করেছি, মাঠের মধ্যে বা ড্রেসিংরুমে সব জায়গাতেই। কিন্তু আমরা অপেক্ষা করছি, যেন আরও ভালো কিছু পাই।’ 
পুরস্কার বিতরণী মঞ্চেও দলের কথাই বললেন, ‘দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আনন্দিত। ১০ উইকেট পাওয়ায় প্রেরণা আরও বাড়ল। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জয় তুলে নিতে পারায় দলের মানসিকতা ঠিক থাকে। সতীর্থদেরও সমর্থন পেয়েছি।’
তাইজুলের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও, ‘আমার মনে হয়, টেস্ট সংস্করণে গত কয়েক বছর ধরে তাইজুল ভাই অন্যতম সেরা বোলার। তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা, লম্বা সময় ধরে একই জায়গায় বল করতে পারেন। ওই বিশ্বাসটা আমার ছিল, আমি সেটাই কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। যদি খেয়াল করে দেখেন, অনেক লম্বা সময় ধরে তিনি এক পাশ থেকে বল করে গেছেন। তাঁকে আমি আলাদা কোনো প্ল্যান দিইনি। লম্বা সময় এক জায়গায় বল করাই তাঁর প্ল্যান ছিল।’ সিলেটের মতো মিরপুরেও তাইজুলই বাংলাদেশের ভরসা।
ঠিকানা/এসআর
                           
                           
                            
                       
     
  
 


 ঠিকানা অনলাইন
 ঠিকানা অনলাইন  
                                
 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                
