Thikana News
২২ নভেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

৭ বছর পর রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে

৭ বছর পর রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে
ব্যাংকগুলোর চাহিদা মেটাতে নিয়মিত ডলার বিক্রির মধ্যে আমদানি দায় মেটাতে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) সবশেষ অর্থ পরিশোধের পর দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

সাত বছর পর বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামল। আকুতে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাসের আমদানি ব্যয়ের জন্য ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার পাঠানো হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক গণমাধ্যমকে জানান, আকুর অর্থ পরিশোধের পর রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

বড় ধরনের এ আমদানি ব্যয় মেটানোর আগে গত ২ মে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩০ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।

এর আগে সবশেষ ২০১৬ সালের ২২ জুন রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। আট দিনের মাথায় ৩০ জুন তা বেড়ে ৩০ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। এরপর তা ক্রমান্বয়ে বেড়ে ২০২১ সালের অগাস্টে রেকর্ড ৪৮ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমে আসতে থাকলে মহামারীর মন্দা কাটিয়ে অর্থনীতিতে পুনরুদ্ধার গতি পেলে আমদানি ব্যয় বাড়তে থাকে। এরপর রিজার্ভ থেকে সেই অর্থ পরিশোধ বাড়লে বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকে। ইউক্রেইন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও চাপ তৈরি করে। এতে রিজার্ভ কমে সাত বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে এল।

রবিবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা লেনদেন বন্ধ থাকায় সোমবার আকুর অর্থ পরিশোধের নিশ্চয়তাপত্র (কনফারমেশন ভাউচার) পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের আমদানির বর্তমান যে ধারা তাতে এখনকার রিজার্ভের সমপরিমাণ অর্থ দিয়ে সাড়ে তিন মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকলে তাকে স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি হিসেবে ধরে থাকেন অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৪ সালের জুনে রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। এরপর থেকে রপ্তানি ও রেমিটেন্সে ভর করে ধারাবাহিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। তা পর্যায়ক্রমে বেড়ে ২০২১ সালের অগাস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।

এরপর থেকে বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ কারণে দেশের আমদানি ব্যয় বাড়লেও বিপরীতে রেমিটেন্স ও রপ্তানি সেভাবে তাল মেলাতে পারেনি। ফলে চাপে পড়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।

গত জুলাই থেকে আমদানি নিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ি আরোপের পরও ডলারের সংকট না কাটলে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিত ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি শুরু করে। এতে রিজার্ভ কমতে কমতে ডিসেম্বরে ৩৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারে নামে। চার মাসের মধ্যে এপ্রিল শেষে তা ৩১ দশমিক ০৬ বিলিয়নে নামে।

যদিও রিজার্ভের এ হিসাব নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গণনায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিপিএম ৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) পদ্ধতি অনুসরণ করার কথা বলে আসছিল।

এবার অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে সংস্থাটির কাছ থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়ার সময় বিপিএম ৬ অনুসরণে সম্মত হয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

আগামী মুদ্রানীতিতেই রিজার্ভ হিসাব করতে এ পদ্ধতি ব্যবহার করার ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বিপিএম ৬ এর পাশাপাশি রিজার্ভের বর্তমান সমন্বিত তথ্যও প্রকাশ করা হবে।

এ পদ্ধতিতে হিসাব করলে বৈদেশিক সম্পদ গণনায় সব বৈদেশিক দায় ও ঋণ এবং রিজার্ভের অর্থ অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করলে তা মূল রিজার্ভ থেকে বাদ যাবে।

বর্তমানে রিজার্ভের অর্থে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) ছাড়াও একাধিক তহবিল পরিচালনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ বিমান ও শ্রীলঙ্কাকে কিছু অর্থ ঋণ দিয়েছে। সব মিলিয়ে সমন্বিত হিসাব থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি থাকা দায় বাদ যাবে। এ হিসাবে রিজার্ভের পরিমাণ আরও কমে যাবে।

আইএমএফ বিপিএম ৬ হিসেবে আগামী জুনে তিন মাসের আমদানি দায় পরিশোধের সমপরিমাণ ২৪ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে এসময়ে বিশ্বব্যাংক, জাইকাসহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণের অর্থ ছাড় হল রিজার্ভের উপর থাকা চাপ সামলানো যাবে।

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স