Thikana News
১৮ অক্টোবর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪


 

ঈদ রাজনীতিতে উজ্জীবিত বিএনপি

ঈদ রাজনীতিতে উজ্জীবিত বিএনপি


নিজস্ব প্রতিনিধি : গত বছরের জুলাই থেকে আন্দোলনে সক্রিয় বিএনপি। ধারাবাহিকভাবে নয়টি বিভাগীয় সমাবেশে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় দলটির ১৭ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারান। এ পরিস্থিতিতেও দলটির নেতাকর্মীরা আতঙ্কিত নন। সবাই শুধু একটি ঘোষণার অপেক্ষায়-সরকার পতনে এক দফা কর্মসূচি।
এবার ঈদুল ফিতরে সারা দেশে নির্যাতিত, গুম, খুন হওয়া সহস্রাধিক নেতাকর্মীর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার ভুক্তভোগী পরিবারে পৌঁছে দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ঈদ রাজনীতিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন দারুণ উজ্জীবিত। মাঠপর্যায়ের অবস্থানও জরিপ করে ভালো ফলাফল পেয়েছে। তাই আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে কোরবানির ঈদের আগেই এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে রোড মার্চ বা সমাবেশের ঘোষণা আসতে পারে। সেপ্টেম্বর থেকে ক্রমান্বয়ে বাড়বে যুগপৎ আন্দোলনের গতি। এই সময়ের মধ্যে সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে কর্মসূচি এক দফা দাবিতে পরিণত হতে পারে।
বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রের ভাষ্য, সরকারের পদত্যাগে ১০ দফা ও ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে’ ২৭ দফার মাঝামাঝি অবস্থান থেকে নতুন আরেকটি দফা তৈরি হচ্ছে। যেটিকে বলা হচ্ছে যুগপৎ আন্দোলনের নতুন রূপ। চলতি মে মাসেই সরকারবিরোধীদের নিয়ে এই নতুন দফা ঘোষণা করা হবে। এক ব্যানারে বিএনপির শীর্ষ নেতারা নির্বাচন পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। জানা যায়, ঈদের পর শরিকদের নিয়ে বেশ কয়েকটি বৈঠকও করেছে বিএনপি। এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সূত্র জানায়, মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই সাতদলীয় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করে আন্দোলন কর্মসূচির বিষয় চূড়ান্ত করবেন। ১৫ মে থেকে রাজপথ উত্তপ্ত করার মতো কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে। গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, গণফোরাম (একাংশ), বাম গণতান্ত্রিক ঐক্যসহ ৫৪ দলকে নিয়ে নিয়মিত ঘরোয়া বৈঠক করে যাচ্ছে বিএনপি।
তবে বিএনপির মাঠপর্যায়ের নেতাদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, ৫৪ দলসহ এত জোট দিয়ে কী হবে? এই জোটের ফলাফল কোথায়? যাদের কোনো কর্মী নেই, অফিস নেই, রাজনৈতিক অস্তিত্ব নেই, তাদের নিয়ে সময় নষ্ট করা অতীতের মতো ভুল ছাড়া আর কিছুই নয়। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, ১৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছে বিএনপি কিন্তু বিরোধীদের কোনো দাবিই মেনে নেয়নি সরকার। বরং বিএনপিসহ বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। এভাবে আর বেশি দিন চলতে পারে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির নির্যাতিত একাধিক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ড. কামাল হোসেনের ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে যেভাবে গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট করেছে দল, একইভাবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৫৪ দলকে নিয়ে সময় নষ্ট করছে। তাদের মতে, বিএনপি যদি আবারও দলের কর্মী ও জনপ্রিয়তাকে উপেক্ষা করে ভুঁইফোড় দলের শক্তিতে মনোযোগী হয়, তাহলে দলের জন্য আবারও কালো অধ্যায় অপেক্ষা করছে। এ ছাড়া যদি আন্তর্জাতিক শক্তির ওপরও ভরসা করে থাকে, তাহলেও বড় ধরনের ক্ষতি হবে। কারণ বিদেশিরা কেউ চাইবে না দেশে আন্দোলন-সংগ্রাম হোক। বিএনপি যদি আগামীতে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন, অধিকার নিশ্চিত করতে চায়, তাহলে তৃণমূল কর্মসূচির মাধ্যমে যেভাবে চাঙা হাওয়া এসেছিল, তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। রাজনীতির মাঠে টিকে থাকতে হবে।
অন্যদিকে দলের হাইকমান্ডের ভাষ্য, নির্বাচনের আগে সরকার যেকোনো সময় হার্ডলাইনে চলে যেতে পারে, বিএনপির নেতাদের আটক করে মাঠ শূন্য করে ফেলতে পারে, সেই আশঙ্কা থেকে একটি জোট টিকিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে কঠিন সময়ে ধারাবাহিক কর্মসূচিগুলো চালিয়ে নেওয়া যায়। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোটের কর্মসূচির একটি প্রভাব রয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সময় আর বেশি দিন নেই। বিদেশি স্যাংশন নয়, দেশের মানুষই স্যাংশন দেবে। দেশের মানুষ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ভোট চুরির সঙ্গে কারা জড়িত ছিল, আগামী দিনে কারা কারা জড়িত হতে যাচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ নিবিড়ভাবে তা পর্যবেক্ষণ করছে। এই সরকারের এখন শেষ সময় চলছে। বিএনপি দেশের জনগণকে নিয়ে আন্দোলন করবে। অতীতে কোনো স্বৈর সরকার টিকতে পারেনি, এই হাসিনা সরকারও টিকতে পারবে না। যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকার বিদায় হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এই অবৈধ ও নিশিরাতের ভোটের সরকারকে অপসারণ করতে হবে, সরকারকে পদত্যাগ করতেই হবে। জনগণ আজ অতিষ্ঠ। এ সরকারকে মানুষ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। সরকার দেশের বাকস্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এদের যত তাড়াতাড়ি বিতাড়িত করা যাবে, ততই দেশের মঙ্গল।
 

কমেন্ট বক্স