নতুন মজুরি কাঠামো কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা বাস্তবায়নে সদস্য কারখানাগুলোর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ। বুধবার এক চিঠিতে সংগঠনের সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়েছে। চলতি মাস শেষ হওয়ার আগেই চূড়ান্ত গেজেট হাতে আসবে, এখন এটি বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি দায়িত্ব। অনেকের পক্ষেই বাস্তবায়ন কঠিন হবে, তবুও কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অবশ্যই বাস্তবায়নের জন্য নিজেদের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, মজুরি এবং সামগ্রিক ব্যয় বৃদ্ধি ব্যবসার একটি অংশ, তবে ভারসাম্য বজায় না রেখে শুধু একদিকে যাওয়া ঠিক হবে না। বরং বাড়তি ব্যয় পুষিয়ে নিতে গতানুগতিক ধারার বাইরেও চিন্তা করতে হবে। প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা টেকসই করতে কৌশলগত বিনিয়োগ করতে হবে। আরও উদ্ভাবনী এবং বৈচিত্র্যময় হতে হবে। একই সঙ্গে সরবরাহ চেইনে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ এবং ফরওয়ার্ড লিংকেজ আরও সুসংহত করার পরামর্শ দেন তিনি।
নতুন মজুরি কাঠামোর কারণে পোশাকের বাড়তি দর দিতে ব্র্যান্ড ক্রেতাদের সম্মতির কথা জানিয়ে ফারুক হাসান বলেন, এটা খুবই আনন্দের বিষয় যে সব ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিরা মজুরি বৃদ্ধির গুরুত্ব স্বীকার করেছেন এবং যুক্তিসঙ্গতভাবে দাম সমন্বয় করার আশ্বাস দিয়েছেন। অপ্রত্যাশিত শ্রম অসন্তোষের কারণে পোশাকের শিপমেন্ট অথবা অন্য কোন ব্যবসায়িক প্রক্রিয়ায় বিলম্বের জন্য কারখানাগুলোকে জরিমানা না করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা এবং দর কষাকষি করতে কারখানা মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
গত সপ্তাহে ব্র্যান্ড এবং ক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠকে আগামী ১লা ডিসেম্বর থেকে নতুন ন্যূনতম মজুরি কার্যকর হওয়া নুতন মজুরি কাঠামো এ নিয়ে শ্রম অসন্তোষ এবং বাড়তি ব্যয়ের বিস্তারিত তুলে ধরে পোশাকের দর বাড়ানো এবং শ্রম অসন্তোষের কারণে বিলম্বিত শিপমেন্টের জন্য জরিমানা না করতে ক্রেতাদের প্রতি বিজিএমইএর পক্ষ থেকে অনুরোধ জানোর বিষয়টি তুলে ধরা হয় চিঠিতে।
চিঠিতে শিল্পের সার্বিক পরিস্থিতি এবং মজুরি নিয়ে আন্দোলন, পোশাক খাতের ব্র্যান্ড ইমেজ ক্ষুন্ন হওয়া ও ব্র্যান্ড ক্রেতাদের উদ্বেগের কথা উল্লেখ বিজিএমইএ সভাপতি।
মজুরি নিয়ে শ্রমিকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, তিন সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন কারখানায় নৈরাজ্য ও সহিংস প্রতিবাদ শিল্পের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এ কারণে শিল্পের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে মূল্যবান প্রাণহানি ঘটেছে শিল্পের স্থিতিশীলতা এবং খ্যাতিকে আবারও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। শ্রমিকদের প্রতি সম্মান চিঠিতে ফারুক হাসান বলেন এটি অবশ্যই বলার অপেক্ষা রাখে না যে আমাদের শিল্পের স্বার্থে মজুরি বৃদ্ধির গুরুত্বকে অস্বীকার করার উপায় নেই, কারণ শ্রমিকরা, এই শিল্পের লাইফলাইন, এবং আমরা তাদের কল্যাণকে উপেক্ষা করতে পারি না; আমরা তা কখনোই করিনি। প্রকৃতপক্ষে, শোভন কাজ এবং শোভন মজুরি বৈশ্বিক এজেন্ডাগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। বিশ্বের প্রায় সব ব্র্যান্ডের কর্পোরেট দর্শন এই চেতনাকে লালন করে।
ঠিকানা/এসআর