Thikana News
২৭ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

‘নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে কোনো একটি বিশেষ দলের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক নয়’

‘নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে কোনো একটি বিশেষ দলের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক নয়’ ছবি : সংগৃহীত



 
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতি ইঙ্গিত করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে কোনো একটি বিশেষ দলের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক নয়। আজ ২১ নভেম্বর (মঙ্গলবার) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রাক-নির্বাচনী কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। এ ছাড়া গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা কল্পনা আক্তারের ইস্যুতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে বলে তিনি জানান। আর বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার ও তাদের মান উন্নয়ন নিয়ে দেশটির নতুন উদ্যোগে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শাহরিয়ার আলম বলেন, সবার অংশগ্রহণ নির্বাচনের সৌন্দর্য বাড়ায়। একটি সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ও সংবিধানে বিশ্বাস করে না- লোক দেখানো বা শোভাবর্ধনের এমন কাউকে প্রয়োজন নেই। নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে কোনো একটি বিশেষ দলের অংশগ্রহণ ম্যান্ডেটরি নয়।

সম্প্রতি একটি সেমিনারে নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন প্রতিমন্ত্রী। কীসের ভিত্তিতে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন সাংবাদিকরা তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এর ভিত্তি হলো ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করাতে বিদেশিদের কাছে তাদের অনুনয়-বিনয় বা গ্রহণযোগ্যতা একেবারে শূন্যের কোঠায় চলে গিয়েছিল। এসব তো আপনারাও দেখেছেন, আমরাও দেখেছি। রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকতে হলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে।’

তিনি বলেন, আগামী ৩০ নভেম্বর মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার শেষ দিন। সেদিন পর্যন্ত যে কারও নির্বাচনে আসা বা সরে যাওয়া উন্মুক্ত। লিনফোর্ড অ্যান্ড্রুজ নেতৃত্বাধীন কমনওয়েলথের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য মিশনের মতো এটি একটি অগ্রগামী মিশন। তারা তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে ফিরে গিয়ে দ্রুত একটি রিপোর্ট দেবেন। কমনওয়েলথের যারা কর্তাব্যক্তি আছেন তাদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে তারা আসবে কি না।’

তবে কমনওয়েলথের প্রতিনিধি দল আসবে প্রত্যাশা করে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করেছি যে, তাদের যে লজিস্টিক সাপোর্ট দরকার সেটি আমরা দেব। তাদের সঙ্গে নির্বাচন ছাড়াও অভিবাসন, নারীর ক্ষমতায়ন বা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলোতে অব্যাহতভাবে সহযোগিতা করার বিষয়ে আলোচনা হয়।

বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার ও তাদের মান উন্নয়ন নিয়ে সম্প্রতি একটি নতুন স্মারকপত্র স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। স্মারকপত্র প্রকাশের পর দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তার বক্তব্যে কল্পনা আক্তার নামে বাংলাদেশের এক গার্মেন্ট শ্রমিক ও নেত্রীর কথা উল্লেখ করেছেন। এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাওয়া হয় প্রতিমন্ত্রীর কাছে।

জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এটা পরবর্তী আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জানতে চাওয়া হবে। যদি আমার স্মৃতি ভুল না করে থাকে, তাহলে কল্পনা আক্তার বাংলাদেশে একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, ২০১০ সালে। তবে তিনি একা না, একাধিক শ্রমিক নেতা চাকরিরত অবস্থায় আন্দোলন করায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।’

পরবর্তীতে তাদের মামলা তুলে নেয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু রানা প্লাজা ধসের পরে পশ্চিমা দেশের কিছু ক্রেতা যখন কারখানাগুলোকে অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করে, তখন কল্পনা আক্তারসহ আরো দু-একজন মিলে প্রতিবাদ করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রেই গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ‘কল্পনা আক্তার যেটা বলেছেন যে, তিনি আমাদের কারণে বা অন্য কারও দ্বারা হুমকি পেয়েছিলেন, এই ক্ল্যারিফিকেশনটা (ব্যাখ্যা) আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে চাইব। আমরা এটা অবশ্যই পরবর্তী আলোচনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জিজ্ঞেস করব।’

শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘কল্পনা আক্তার খুব সফলতার সঙ্গে বাংলাদেশের শ্রম অধিকার নিশ্চিত করার জন্য একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করে তার নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ পুলিশের রেকর্ডে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রেকর্ডে আমরা যতদূর খোঁজ নিয়ে দেখেছি, জেনেছি বা আপনাদের ওপেন সোর্সেও, আপনারা এত সাংবাদিক আছেন, আপনারা তাকে গিয়ে যদি জিজ্ঞেস করেন যে, উনি এ কথাটি আদৌ বলেছেন কি না, বলে থাকলে কীসের ভিত্তিতে বলেছেন?’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু তিনি যে হুমকি বোধ করেছেন, এটা অতীতে কখনোই বাংলাদেশের কাউকে জানাননি। অবশ্যই এটার সত্যতা কতটুকু, আমরা সেটা জানতে চাইব।’

কল্পনা আক্তারের নাম উল্লেখ করা হলেও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য বাংলাদেশকেন্দ্রিক ছিল না জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, এই বক্তব্যটি মোটেই বাংলাদেশকেন্দ্রিক নয়, তিনি (ব্লিঙ্কেন) বাংলাদেশ উল্লেখ করে কোনো বক্তব্য দেননি। বাংলাদেশের কোনো ইস্যু সেখানে ম্যানশন করেননি, এটা মোটেই গার্মেন্ট শিল্প বা টেক্সটাইল শিল্প নির্দিষ্ট ছিল না।’

বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এ উদ্যোগ বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্পের জন্য উদ্বেগের নয় বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। শাহরিয়ার আলম জানান, কিন্তু ইতোমধ্যে দ্বিপক্ষীয়ভাবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক অনেকদূর এগিয়েছে। আমরা প্রায় বছরখানেক হয়ে গেল, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একজন লেবার অ্যাটাশে নিয়োগ দিয়েছে, সেই নিয়োগটা দেয়ার অনুমতি আমরা দিয়েছি এবং ফ্যাসিলিটেড করেছি; এ কারণে বাংলাদেশকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে।



ঠিকানা/এম

কমেন্ট বক্স