জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি নিয়ে ‘আরও বেশি কাজ করতে’ নিজেদের নৈতিক এআই বিভাগ রেস্পন্সিবল এআই (আরএআই) ভেঙে দিয়েছে মেটা। ১৮ নভেম্বর কোম্পানির এক অভ্যন্তরীণ পোস্টের উদ্ধৃতি দিয়ে এ দল ভাঙার বিষয়টি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে মার্কিন সংবাদ সাইট ইনফর্মেশন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, আরএআই’র সিংহভাগ কর্মীকে কোম্পানির জেনারেটিভ এআই পণ্যবিষয়ক দলে পাঠানো হবে। এ ছাড়া, বাকিরা কাজ করবেন মেটার এআই অবকাঠামো নিয়ে। এর আগে মেটা নিয়মিতই বলে আসছে, তারা দায়িত্বশীলভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করতে চায়। আর এ প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য তাদের আলাদা একটি পেইজও রয়েছে, যেখানে কোম্পানিটি ‘নৈতিক এআই ব্যবহারের বিভিন্ন স্তম্ভের’ একটি তালিকা তৈরি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, প্রাইভেসি ও অন্যান্য বিষয়াদি।
এদিকে, মেটার প্রতিনিধি জন কার্ভিলের উদ্ধৃতি প্রকাশ পেয়েছে ইনফর্মেশনের প্রতিবেদনে। এতে তিনি বলছেন, নিরাপদ ও দায়িত্বশীল উপায়ে এআই প্রযুক্তির বিকাশ ঘটানো এখনও কোম্পানির অগ্রাধিকার।
তিনি আরও বলেন, কোম্পানি দলটি ভেঙে ফেললেও এর কর্মীরা ‘দায়িত্বশীল উপায়ে এআই প্রযুক্তির বিকাশ ও ব্যবহার’ নিয়ে কাজ চালিয়ে যাবেন।
এ প্রসঙ্গে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ মেটার মন্তব্য জানতে চাইলে তাদের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এরইমধ্যে বছরের শুরুতে দলটি থেকে কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো ঘটনা দেখা গেছে। এ প্রসঙ্গে বিজনেস ইনসাইডার প্রতিবেদনে লিখেছে, কর্মী ছাঁটাইয়ের পর কেবল আরএআই দলের ‘খোলস বাকি ছিল’। ওই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সাল থেকে চালু করা দলটির তেমন ক্ষমতা ছিল না। আর দলটির নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগে তা দীর্ঘ এক আলোচনা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হতো।
ভার্জ বলছে, দলটি গঠন করা হয়েছিল এআই প্রশিক্ষণের সময় বিভিন্ন ত্রুটি শনাক্ত করার লক্ষ্যে। এর মধ্যে রয়েছে, কোম্পানির এআই মডেল প্রশিক্ষণে পর্যাপ্ত তথ্য রয়েছে কি না, সে বিষয়টিও। এর পাশাপাশি, নিজস্ব প্ল্যাটফর্মের মডারেশন বিষয়ক সমস্যাগুলো নিরসন করার বিষয়টিও দলটির দায়িত্ব ছিল।
মেটার সামাজিক মাধ্যমগুলোয় স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার কারণে এর আগে বেশ কিছু সমস্যা দেখা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে ফেইসবুকের ট্রান্সলেশন ফিচারের ত্রুটির কারণে গ্রেপ্তারের ঘটনাও। মেসেজিং সেবা হোয়াটসঅ্যাপের এআই স্টিকার তৈরির ফিচারেও কিছু নির্দিষ্ট প্রম্পটের ভিত্তিতে পক্ষপাতমূলক ছবি তৈরির ঘটনা দেখা গেছে। এ ছাড়া, ইনস্টাগ্রামের অ্যালগরিদমে লোকজনকে শিশু নিপীড়নের মতো অনৈতিক কনটেন্ট খুঁজে দেওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে এই স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা।
বছরের শুরুতে মেটার মতো একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে আরেক প্রযুক্তি জায়ান্ট কোম্পানি মাইক্রোসফট। আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশকে নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে নীতিমালা তৈরির প্রতিযোগিতায় নেমেছে বিভিন্ন দেশের সরকার।
উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, বিভিন্ন এআই কোম্পানির সঙ্গে মার্কিন সরকারের চুক্তির বিষয়টি, যেখানে পরবর্তীতে বিভিন্ন সরকারী সংস্থাকে এআই নিরাপত্তা বিষয়ক নীতিমালা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এআই নীতিমালা প্রকাশ করলেও সেটিকে আইনে পরিণত পরিণত করার বেলায় কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে সংস্থাটিকে।
ঠিকানা/এসআর