এ মাসেই ভারত যাচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার আমন্ত্রণে দিল্লি সফরে যাচ্ছেন তিনি। এই সফরে দুই দেশের সম্পর্কের সামগ্রিক বিষয়ে আলোচনা হবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কূটনৈতিক সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ পরামর্শক সভা (এফওসি) বৈঠকে বসার জন্য মাসুদ বিন মোমেনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বিনয় কোয়াত্রা। সাধারণত এফওসিতে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। এদিকে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে পররাষ্ট্র সচিবের নয়াদিল্লি সফর নির্বাচন ইস্যুতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সূত্রপাত করবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান জানিপপের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চলছে এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের চাপ অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে ভারত বাংলাদেশ ইস্যুতে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। ফলে এই সফর ঘিরে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।’
এর আগে দিল্লিতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে আলোচনায় ছিল বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। ওই বৈঠকে দিল্লির পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনকে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কীভাবে হবে, তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে বাংলাদেশ নিয়ে দিল্লির অবস্থানের বিষয়ে এখনো খোলামেলা কোনো মন্তব্য করেনি ওয়াশিংটন।
অন্য আরেকটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, চলতি বছরের ফেরুয়ারিতে ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারতের এফওসি হয়েছে। আট মাসের ব্যবধানে দেশটির সঙ্গে এফওসি করতে যাচ্ছে ঢাকা। এর আগে ভারত ছাড়া অন্য কোনো দেশের সঙ্গে এত কম সময়ের ব্যবধানে এফওসির নজির বাংলাদেশের ক্ষেত্রে না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। তবে দুটি দেশ প্রয়োজন মনে করলে যেকোনো সময় এফওসি করতেই পারে।
নির্বাচন নিয়ে ভারতের অবস্থান প্রসঙ্গে গত মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ভারতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিমত নেই। একই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেন, ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের টু প্লাস টু পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে, তা ওই দুই দেশের নিজস্ব ব্যাপার।
বাংলাদেশকে নিয়ে দিল্লি ও ওয়াশিংটনের একমত না হওয়ার আলোচনা রয়েছে। কেননা, টু প্লাস টু বৈঠকের পর সম্প্রতি বাংলাদেশের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগ নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন ঢাকায় দেশটির দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফেন ইবেলি। সেখানে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণ উপায়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। পাশাপাশি সহিংসতা পরিহার করে সব পক্ষকে সংযমী হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, কোনো ধরনের শর্ত ছাড়াই সংলাপ চায় যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়েছে, সেটিও তুলে ধরা হয়। কূটনৈতিক সূত্রের দাবি, সবকিছু মিলিয়ে মাসুদ বিন মোমেনের দিল্লি সফর অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
ঠিকানা/এম
                           
                           
                            
                       
     
  
 

 ঠিকানা অনলাইন
 ঠিকানা অনলাইন  
                                
 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                
