মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোন বৈঠক না করার নীতিতে রয়েছে আওয়ামী লীগ। মার্কিন রাষ্ট্রদূত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের সঙ্গে দেখা করে গতকাল দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু'র চিঠি হস্তান্তর করলেও এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কোনো নেতার কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে চিঠি হস্তান্তর করতে পারেননি ৷ তবে একটি সূত্র জানিয়েছে যে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের কাছে ই-মেইলে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে ৷ কিন্তু এর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসকে অনেকটাই এড়িয়ে চলছে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। 
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে দলটি সরাসরি এখন ওয়াশিংটনের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। বিশেষ করে ওয়াশিংটনে উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী উজরা জেয়া এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নিয়মিত যোগাযোগ চলছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। অবশ্য সংলাপের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র গুলো বলছে যে, সংলাপ হতে পারে তখনই যখন বিরোধী দল তাদের আন্দোলনের কর্মসূচি স্থগিত করবে। আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত রেখে কিভাবে সংলাপ হতে পারে, সেই প্রশ্ন করেছে আওয়ামী লীগ। 
তবে মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ না করলেও অনানুষ্ঠানিক ভাবে বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে বলেও জানা গেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের কোনো নেতাই এই যোগাযোগের খবরের সত্যতা স্বীকার করেননি। বরং তারা মনে করছেন যে বাংলাদেশের নির্বাচন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব যাচাই করার কোনো প্রয়োজন নেই। 
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের প্রকাশ্য অবস্থানের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা দূতাবাসকে এড়িয়ে চলার নীতি গ্রহণ করেছে। 
আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলছেন, বারিধারায় মার্কিন দূতাবাস যে মনোভাব পোষণ করছে সেই মনোভাব ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্র দপ্তরের নয়। তবে এর সত্যতা কতটুকু সে সম্পর্কে আওয়ামী লীগের ওই নেতা কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। 
তবে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি তদারকি করছেন এবং তদারকি করতে যেয়ে মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী উজরা জেয়ার সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগের খবরও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, মার্কিন নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গেও সরকারের যোগাযোগ আছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস এখন অত্যন্ত তৎপর। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের প্রতিটি বিষয় সম্বন্ধে পররাষ্ট্র দপ্তরকে এবং হোয়াইট হাউসকে অবহিত করেছে ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। বিশেষ করে ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় বিএনপির জ্বালাও পোড়াও সহিংসতা এবং তার পরবর্তী পর্যায়ে চার দফার অবরোধের সময় যে সমস্ত গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ বিবরণী ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এবং হোয়াইট হাউসে পাঠানো হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। 
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। ঢাকায় নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে ধরনের অবস্থানের কথা মনে করা হচ্ছে, সে ধরনের বাস্তবতা নয়। বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন অনেকটাই সহনীয় এবং আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের অবস্থান শুধুমাত্র এটুকুই যে তারা একটি বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। আর এ ব্যাপারে সরকারও জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মনে করছে।
ঠিকানা/এসআর
                           
                           
                            
                       
     
  
 


 ঠিকানা অনলাইন
 ঠিকানা অনলাইন  
                                
 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                
