শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার বাসভবন থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৩ বস্তা চাল ও ১ হাজার ১০০ খালি বস্তা শনিবার জব্দ করেছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত। বাসভবনের একটি কক্ষে তা সিলগালা করে রাখা হয়েছিল।
এক দিন পর আজ রোববার রাতে সেই সিলগালা বাসার জানালার গ্রিল কেটে জব্দ করা চাল ও চালের বস্তা সরিয়ে নেওয়ার সময় আটক হন (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদ।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, শনিবার দুপুরে ভেদরগঞ্জ উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল মাহমুদের বাসভবনে অভিযান চালিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩০ কেজির ৩ বস্তা ও ৫০ কেজির ১০ বস্তাসহ মোট ১৩ বস্তা চাল এবং ১ হাজার ১০০টি খালি চালের বস্তা জব্দ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে ওই বাসভবনটি সিলগালা করে দেন ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এ বিষয়ে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর আজ রোববার খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদ ভেদরগঞ্জ বাজারের ভাই ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ থেকে কর্মচারী সজিব ছৈয়ালকে ভাড়া করে এনে বাসভবনের উত্তর দিকের জানালার চারটি রড বৈদ্যুতিক কাটার মেশিন দিয়ে কেটে খাদ্যগুদামের নৈশ প্রহরী আবু হানিফকে ভেতরে পাঠিয়ে জব্দ করা চাল ও চালের বস্তা সরিয়ে নিচ্ছিলেন।
রোববার সন্ধ্যার পরে অপরিচিত নম্বর থেকে ফোনকলের মাধ্যমে ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মামুন জানতে পারেন, সিলগালা করা ভবনের গ্রিল কেটে জব্দকৃত আলামত গায়েব করা হচ্ছে। খবর পেয়ে ইউএনও, উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) সঙ্গে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। তারা দেখতে পান, ভবনের জানালার গ্রিল কেটে আলামত সরানো হচ্ছে। এ সময় খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদ ও গ্রিল কাটায় নিযুক্ত ব্যক্তিকে হাতেনাতে ধরেন তারা। এর ফাঁকে নিরাপত্তা প্রহরী আবু হানিফ পালিয়ে যান। পরে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মোশারফ হোসেনকে ডেকে এনে তার হাতে তুলে দেওয়া হয়।
শরীয়তপুর জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, জানালার গ্রিল কাটার বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জাজনক। বিষয়টি নিয়ে আমরা লজ্জিত। গতকালের ঘটনার পর তার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছিল।
ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আজ সন্ধ্যায় আমার কাছে একটি ফোন আসে যে সিলগালাকৃত বাসার গ্রিল কেটে জব্দকৃত চালের বস্তা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং উপজেলা প্রশাসনের কার্যক্রমকে মিথ্যা প্রমাণিত করার চেষ্টা চলছে। এই সংবাদ পাওয়ার পরই আমি সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নিয়ে এসে উপজেলা খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদকে হাতেনাতে ধরি। তিনি যে কাজটি করেছেন, সেটি একটি ফৌজদারি অপরাধ। আমরা বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দুদককে জানাব। দুদক তার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ঠিকানা/এনআই