‘মুক্তিপণ’ না দেওয়ায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িংয়ের অভ্যন্তরীণ নথি ইন্টারনেটে ফাঁস করার দাবি করেছে হ্যাকারদের একটি দল লকবিট।
হ্যাকার দলটির ওয়েবসাইটে দেওয়া এক পোস্ট অনুসারে, তারা বোয়িংয়ের ডেটা ফাঁস করেছে শুক্রবার সকালে। রয়টার্স বলেছে, তারা ফাইলগুলো স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে না পারলেও এগুলোতে অক্টোবরের শেষ দিকের তারিখ উল্লেখ রয়েছে।
বোয়িং এক বিবৃতিতে বলেছে, কোম্পানির ‘বিতরণ ব্যবসা’সহ বেশ কিছু অংশ সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছে।
“এই ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি, যেখানে মুক্তিপণ চাওয়া অপরাধীরা আমাদের সিস্টেম থেকে তথ্য ফাঁস করার দাবি তুলেছে।”
এ ঘটনা তদন্তের পাশাপাশি বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ও সম্ভাব্য ভুক্তভোগীদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রাখার কথা বলেছে উড়োজাহাজ নির্মাতা মার্কিন কোম্পানিটি।
এর আগে অক্টোবরে হ্যাকারদলটি জানিয়েছিল, ২ নভেম্বরের মধ্যে মুক্তিপণ না পেলে তারা বোয়িংয়ের ‘বিশাল পরিমাণ’ স্পর্শকাতর ডেটা অনলাইনে ছড়িয়ে দেবে।
তথ্য ফাঁসের দাবির পর বোয়িং বলেছে, এ সাইবার আক্রমণের ঘটনা যেন এয়ারক্রাফট বা ফ্লাইটের নিরাপত্তায় ঝুঁকি সৃষ্টি না করে, সে বিষয়ে তারা ‘আত্মবিশ্বাসী’। তবে লকবিট প্রতিরক্ষা বিভাগ বা অন্য কোনো স্পর্শকাতর ডেটা হাতিয়ে নিয়েছে কি না, সে সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি বোয়িং।
গত বছর জাপানভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ‘ট্রেন্ড মাইক্রো’ বলেছে, লকবিট র্যানসমওয়্যারের প্রথম ঝলক মিলেছিল ২০২০ সালে; রুশ ভাষাভিত্তিক বিভিন্ন সাইবার অপরাধ ফোরামে। পরে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এটি, যেখানে সবচেয়ে বেশি সাইবার আক্রমণের শিকার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও ব্রাজিলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
লকবিটকে ‘আত্মগোপনে থাকা বিশ্বের অন্যতম পেশাদার সাইবার অপরাধী দল’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ট্রেন্ড মাইক্রো।
মার্কিন সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা ‘সিসা’ এর তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় এক হাজার সাতশ প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ চালিয়েছে হ্যাকারদলটি।
গত বৃহস্পতিবার চীনের শিল্প ও বাণিজ্য ব্যাংক (আইসিবিসি) এর মার্কিন অংশ র্যানসমওয়্যার হামলার শিকার হলে মার্কিন ট্রেজারি বাজারে তাদের লেনদেন বাধার মুখে পড়ে।
বিভিন্ন র্যানসমওয়্যার বিশেষজ্ঞের মতে, এ হামলার পেছনে লকবিটের হাত থাকতে পারে। দলটি সাধারণত নিজস্ব ডার্ক ওয়েব পেইজে ভুক্তভোগীদের নাম প্রকাশ করলেও আইসিবিসি সম্পর্কে কোনো কিছু উল্লেখ করেনি।
ঠিকানা/এসআর