শরীয়তপুরে পারিবারিক কলহের জেরে তিন সন্তানকে নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন এক মা। এ ঘটনায় ছোট ছেলে ও মেয়েকে উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ রয়েছেন মা ও বড় ছেলে।
৫ নভেম্বর রোববার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়নের চরভোজেশ্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজরা হলেন উপজেলার জপসা ইউনিয়নের মাইজপাড়া বয়াতিকান্দির বাসিন্দা আজবাহার মাদবরের স্ত্রী সালমা আক্তার (৩০) ও তার বড় ছেলে সাহাবী হোসেন জাফর (৭)
স্থানীয়রা জানান, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ভোজেশ্বর-মহিষখোলা কীর্তিনাশা সেতুর পাশ থেকে তিন শিশুকে নিয়ে কীর্তিনাশা নদীতে ঝাঁপ দেন সালমা আক্তার। আহত অবস্থায় আড়াই বছরের মেয়ে আনিকা ইসলাম ও দশ মাসের ছেলে সোলাইমানকে উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। পরে তাদেরকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সুস্থ হয় তারা। অন্যদিকে বড় ছেলে ও সালমা আক্তারকে খুঁজে না পাওয়া গেলে নড়িয়া ফায়ার সার্ভিস ও মাদারীপুর থেকে আসা দুজন ডুবুরি দিয়ে তাদের খোঁজা হচ্ছে।
জানা যায়, ২০১৬ সালে ভোজেশ্বর বাজারের পাট ব্যবসায়ী আজবাহার মাদবরের (৪০) সঙ্গে সালমা আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক মেয়ে ও দুই ছেলেসন্তান আছে। আজবাহার আর সালমার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল। তবে সালমার সঙ্গে শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদদের সঙ্গে ঝগড়া লেগেই থাকত।
সালমার স্বজনদের দাবি, শ্বশুর-শাশুড়ি ও দুই ননদ তাকে প্রায়ই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। যৌথ পরিবারে ঠিকমতো খাওয়াদাওয়াও দিতেন না সালমা আক্তার ও তার সন্তানদের। এ নিয়ে সব সময় কলহ লেগেই থাকত তাদের পরিবারে।
পারিবারিক কলহ আর নির্যাতন সইতে না পেরে সালমা তার তিন সন্তানকে নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেন বলে অভিযোগ করছেন সালমার স্বজনেরা।
সালমা আক্তারের মা বলেন, আমার মেয়েকে তারা অনেক অত্যাচার করত। আমরা গরিব বলে আমাদেরকে অনেক অপমান, অপদস্থ করত। আমার মেয়ে ও আমার নাতিদের ঠিকমতো খেতে দিত না। সব সময় অপমানজনক কথা বলত আমার মেয়েকে। দীর্ঘদিনের সংসারে অপমান, অপদস্থ সহ্য করতে না পেরে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছে। আমি এদের বিচার চাই।
নড়িয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার লিডার রওশন বলেন, আমরা বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে আসি এবং উদ্ধারকাজ শুরু করি। আমাদের ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল না থাকায় আমরা পার্শ্ববর্তী জেলা মাদারীপুর থেকে দুজন ডুবুরি এনে নিখোঁজ মা ও ছেলেকে উদ্ধারের চেষ্টা করছি। তাদের খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধারকাজ অব্যাহত থাকবে।
ঠিকানা/এনআই