Thikana News
৩১ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫


৫০ হাজার ডলার হ্যাকের পর ফেরত আনলো ব্যাংক কর্তৃপক্ষ

৫০ হাজার ডলার হ্যাকের পর ফেরত আনলো ব্যাংক কর্তৃপক্ষ



 
ব্যাংক হিসাব থেকে স্ক্যামারদের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা নতুন নয়। এটি ক্রমাগত বাড়ছেই। একটি বিশেষ কোম্পানির মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকেরা। স্ক্যামারদের উৎপাতে বিগত দু-তিন বছর ধরেই মানুষের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এ থেকে যেন মুক্তির উপায় মিলছে না। সম্প্রতি শিশুদের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে থাকা একজন কর্মকর্তার অর্থ ব্যাংক থেকে হাতিয়ে নেয় হ্যাকাররা। পরে দ্রুতগতিতে ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে ওই অর্থ ব্যাংক হিসাবে     ফেরত আসে। তবে তিনি ব্যাংকে অর্থ ফেরত পাওয়ার পর তার ক্রেডিট কার্ড ও অন্যান্য কার্ড বন্ধ করে দেন। সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী জ্যামাইকার একজন বাসিন্দা। যিনি সিটিতে জব করেন। চাকরি করার সুবাদে তার ব্যাংক হিসাবে বেশ বড় অ্যামাউন্টের অর্থ সঞ্চয় করেন। এই অর্থ দিয়ে ভবিষ্যতে বাসাবাড়ি কিনবেন, এমনই পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু হ্যাকাররা তার সেই স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে একটি খ্যাতনামা ও সবচেয়ে সিকিউরড ব্যাংক হিসেবে পরিচিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়। ঘটনাটি ঘটে রাতে। যখন এই ঘটনা ঘটে, তখন তারা সঙ্গে সঙ্গে বুঝতেও পারেননি। ওই ব্যক্তির মোবাইল ফোন হঠাৎই অফ হয়ে যায়। তিনি ফোনটি বারবার চালু করার চেষ্টা করেন কিন্তু পারেননি। এরপর তিনি তার এক সন্তানকে ফোনটি দেন। সন্তান তার বাবার ফোনটি বন্ধ করে আবার চালু করার চেষ্টা করলে এটি চালু হয়। তিনি নেটওয়ার্ক খোঁজার চেষ্টা করেন কিন্তু কোনোভাবেই তা আনতে পারছিলেন না। এরপর তিনি তার আরেক সন্তানের কাছে যান। ওই সন্তান আইটি বিষয়ে পারদর্শী। তিনি বুঝে যান কী হতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তার বাবার ব্যাংক হিসাব চেক করেন। দেখেন, তার বাবার ব্যাংক হিসাবে অর্থ নেই। সেখান থেকে ৫০ হাজার ডলারের মতো অর্থ হাতিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে হ্যাকাররা। এটা দেখার সঙ্গে সঙ্গে তার বাবাকে দিয়ে ব্যাংকে ফোন করিয়ে পুরো ঘটনাটি বলান। ব্যাংক সঙ্গে সঙ্গে তার ব্যাংক হিসাবে অ্যালার্ট সেটআপ করে এবং অ্যাকাউন্টের সব লেনদেন বন্ধ করে দেয়। এতে করে কেউ তার ব্যাংক হিসাবে আর প্রবেশ করতে পারেনি। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে অপেক্ষা করতে বলে।
সূত্র জানায়, ব্যাংক কর্মকর্তার আশ্বাস পেয়ে ভুক্তভোগী কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। তিনি অপেক্ষা করতে থাকেন অর্থ ফেরত পাওয়ার। যতক্ষণ পর্যন্ত অর্থ ফেরত আসেনি, তখনক্ষণ তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় পার করতে থাকেন। এই অবস্থায় অনেক চেষ্টা করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অর্থ ফেরত আনতে সক্ষম হয়।
এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়েন ভুক্তভোগী। তবে তিনি এ ধরনের ঘটনার শিকার যাতে অন্য কেউ না হন, সে জন্য সবাইকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ব্যাংক হিসাবের তথ্য কীভাবে হ্যাকাররা পেল, তা জানি না। মোবাইল ফোন হ্যাক করে নিয়ে গেল, এটা ভীষণ দুশ্চিন্তার ব্যাপার। আমরা সব কাজে মোবাইল ফোন ব্যবহার করি। সেই মোবাইল ফোন কোম্পানি যদি আমাদের তথ্যের নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে তো তাদের এই মার্কেটে ব্যবসা করতেই পারা উচিত নয়। আমি আরও শুনেছি অনেকেরই নাকি ওই মোবাইল কোম্পানির নম্বর হ্যাক করে ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অর্থ চুরি করে নেওয়া হয়েছে। অনেকে সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে বা জানতে না পারায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। মানুষ অর্থ দিয়ে সিম কিনে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে, আবার সেই ফোনের জন্য মাসে মাসে বিল পেমেন্ট করা হচ্ছে। তারা আমেরিকায় ব্যবসা করছে। আর জনমানুষের তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারছে না। তথ্য হ্যাক করে ব্যাংক থেকে সব অর্থ নিয়ে যাচ্ছে। মানুষ হ্যাকারদের কাছে অসহায় হয়ে যাচ্ছে। এগুলো বন্ধ হওয়া জরুরি।
সূত্র জানায়, ওই ব্যক্তির অর্থ খোয়া যাওয়ার পর তিনি বিষয়টি পুলিশের কাছে জানান। পুলিশ একটি ফরম পূরণ করে সেটি ব্যাংকের তথ্য দিয়ে সাইন করে নোটারি করে জমা দেওয়ার জন্য তাকে অনুরোধ করে। তিনি সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন্ন করার জন্য ব্যাংকে যান। ব্যাংক তাকে সময় দেওয়ার অনুরোধ করে। তিনি সময় দেন। এরপর অর্থ ফেরত পান। তিনি চান অপরাধীরা চিহ্নিত হোক এবং তাদের শাস্তি দেওয়া হোক।
আরেকজন ভুক্তভোগী জানান, তার ফোনও হ্যাক করে হ্যাকাররা অর্থ নিয়ে যায়। এটি খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা। তিনি ব্যাংকের অর্থ ফেরত পেলেও যে কোম্পানির মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন, সেটি ফেরত পাননি। তারা স্বীকারও করছে না হ্যাকাররা অর্থ নিয়ে গেছে। কয়েক মাস ধরে কেবল তদন্ত করছে বলে তথ্য দিচ্ছে কিন্তু আপডেট নেই। তার মতে, যারাই এ ধরনের ঘটনার শিকার হচ্ছে, সবার উচিত হলো ওই মোবাইল কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া এবং ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া, যাতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তারা সময়ক্ষেপণ না করে এবং দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা না করে। মোবাইল ফোন কোম্পানি কোনো দায় তো নিচ্ছেই না, উল্টো তারা স্বীকারও করে না তাদের কোম্পানির মোবাইল হ্যাক করেই সব নেওয়া হচ্ছে। আসলে সবাই মিলে ওই মোবাইল কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে ও খোয়া যাওয়া অর্থ তাদের কাছ থেকে আদায় করার বিধান করলে এ সমস্যা কমতে পারে। যেসব কোম্পানির মাধ্যমে ইনভেস্টমেন্ট করা হয়, সেখান থেকে অর্থ ফেরত দেওয়ার নিয়ম করলেও অন্তত কিছুটা স্বস্তি মিলবে। আর কোনো অর্থ হ্যাক হলে যাতে সরাসরি মামলা করা সম্ভব হয় ও প্রতিকার পাওয়া যায়, সেটিও নিশ্চিত করা দরকার।

কমেন্ট বক্স