Thikana News
০৭ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫

নিউইয়র্কে ফিলিস্তিনিদের  বিক্ষোভ, সতর্ক পুলিশ 

নিউইয়র্কে ফিলিস্তিনিদের  বিক্ষোভ, সতর্ক পুলিশ 



 
গাজা তথা ফিলিস্তিনে ইসরাইলের হামলা ও মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিবাদে নজিরবিহীন বিক্ষোভ হয়েছে বিশ্বের রাজধানী খ্যাত নিউইয়র্কের প্রাণকেন্দ্র টাইম স্কয়ারে। ১৩ অক্টোবর শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা  পর্যন্ত চলা এই বিক্ষোভে ধর্ম, বর্ণ ও জাতি নির্বিশেষে সর্বস্তরের হাজার হাজার নারী-পুরুষ জড়ো হয়ে অবিলম্বে ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানান। 
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন অনেক ইহুদি। এসময় ফিলিস্তিনের পক্ষে বিভিন্ন দেশের মুসলিম কমিউনিটির সাথে বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিসহ অনেক ইহুদিকেও শ্লোগান দিতে দেখা যায়। তাদের কণ্ঠে ছিলো যুদ্ধবিরোধী স্লোগান ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন, ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘উই ওয়ান্ট ফ্রিডম, ফ্রিডম’। বিক্ষোভকারীরা প্যালেস্টাইনের পতাকা হাতে নানা স্লোগান সম্বলিত ব্যানার, প্লাকার্ড ও পোস্টার বহন করে। বিক্ষোভে অংশ নিয়ে আমেরিকানরা ইসরাইলকে সহায়তা প্রদান বন্ধের জন্য জো বাইডেন প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ইসরাইলের নাগরিকরাও ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিয়ে শ্লোগান দেন। তাদের অভিযোগ, ইসরাইলের সাধারণ মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে নেতানিয়াহু সরকার। অবিলম্বে তারা এ যুদ্ধ বন্ধের দাবিজানান। পাশাপাশি অবিলম্বে ইসরাইলকে অর্থ ও সামরিক সহায়তা বন্ধের দাবিী তুলে আমেরিকান নাগরিকরা বলেন, আমেরিকার অর্থ দিয়ে ফিলিস্তিনের নিরীহ জনসাধারণকে হত্যা করতে এদেশের জনগণ বাইডেন সরকারকে লাইসেন্স দেয়নি। বিক্ষোভে অংশ নেয়া মুসলিম নেতৃবৃন্দ মুসলমানদের প্রাচীন ধর্মীয় উপাসনালয় আল-আকসাকে দখলদার ইসরাইলের হাত থেকে মুক্ত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন কামনা করেন তারা। এদিকে, একইসময় টাইম স্কয়ারের অপর প্রান্তে ইসরাইলের পক্ষেও কিছু লোককে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। এদিকে ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় নিউইয়র্ক সিটি ও স্টেটের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ১৩ অক্টোবর শুক্রবার নিউইয়র্কে ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের সমর্থনে হাজার হাজার বাসিন্দা বিক্ষোভে জড়ো হয়েছে। গভর্নর ক্যাথি হোকুল ও সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস নিউইয়র্ক স্টেট ও সিটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে। পুলিশ বিভাগকে সবসময় সতর্ক অবস্থায় থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি স্কুল ও প্রার্থনা কেন্দ্রগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশ। এছাড়াও বিশেষ কিছু আবাসিক এলাকায়ও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। স্টেট সূত্র জানায়, স্টেট পুলিশের সাথে এনওয়াইপিডি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় একত্রে কাজ করবে। প্রয়োজনে ন্যাশনাল গার্ড, জয়েন্ট টাস্ক ফোর্স এমপায়ার শিল্ড থেকেও বাহিনী পাঠানো হবে। নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাসরত সকল ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিদের নিয়ে ১৮ অক্টোবর বুধবার রাতে এক সম্প্রীতি সমাবেশের আয়োজন করেন মেয়র এরিক এডামস। ম্যানহাটনে মেয়রের বাসভবন গ্রেসি ম্যানশনে আয়োজিত এ সমাবেশে ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে নিউইয়র্কে ঘৃণা ও বিদ্ধেষ না ছড়ানোর আহবান জানিয়েছেন মেয়র এরিক এডাম। এসময় তিনি বলেন, সাম্প্রতিককালে ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে মারমুখি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন দুই দেশের সমর্থকরা। এসব সমাবেশ থেকে ঘুনা ও বিদ্ধেষ ছড়ানোর মত বক্তব্য ও কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা যাচ্ছে। এতে নিউইয়র্কের শান্তি, নিরাপত্তা ও সম্প্রীতি নষ্ঠ হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। মেয়র বলেন, নানা ধর্ম ও বিশ্বাসের বৈচিত্রময় শহর নিউইয়র্ক। সবার ধর্মীয় ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান জানায় নিউইয়র্ক সিটি। ফলে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনে কোন বাধা নেই। কিন্তু এসব কর্মসূচির মাধ্যমে যাতে শহরের আইন শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতি নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রুপের নেতারা ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের ইস্যুতে অনুষ্ঠিতব্য যেকোন কর্মসূচিতে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার অঙ্গিকার প্রকাশ করেন।
কাউন্সিল মেম্বার ইনা ভারনিকভ গ্রেফতার : ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ চলাকালে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র প্রদর্শন করে গ্রেপ্তার হয়েছেন নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলিন থেকে নির্বাচিত সিটি কাউন্সিল সদস্য ইনা ভারনিকভ। পুলিশ জানায়, শুক্রবার ব্রুকলিন কলেজ ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করছিলো একদল ছাত্র। এসময় ইনা ভারনিকভ সেখানে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে চিৎকার চেচামেচি শুরু করেন। তিনি ইসরাইলকে সমর্থন করে বক্তব্য দেয়া শুরু করেন। এসময় ইনা ভারনিকভ-এর কোমরে ঝুলছিলো তার লাইসেন্সকৃত পিস্তল। তিনি সেটি কয়েকবার হাতে নেন। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী কোন পাবলিক মিটিং প্লেসে অস্ত্র নিয়ে যাওয়া বেআইনী। যে কারণে তাকে তৎক্ষণাৎ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ।

 

কমেন্ট বক্স