গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠিত হবে। গত ৫ এপ্রিল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচনে অংশ নিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ ১৭ জন মনোনয়ন চাইলেও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন টঙ্গী পৌরসভার তিনবারের মেয়র অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান। দলের মনোনয়ন না পাওয়ায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার কথা ভাবছেন।
দলীয় প্রার্থী ঘোষণার পর ১৫ এপ্রিল (শনিবার) বিকেলে মুঠোফোনে কথা হয় জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমার নাগরিকরা যা চিন্তা করে আমি সেটাই করতে চাই, আমার ভোটাররা যা চায় আমি তাই করবো।
আপনি কি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার ভোটাররা যা চাইবে আমি তাই করব। তারা আমার মৃত্যু চাইলে আমি তাতেও রাজি আছি। কারণ আমি এখানে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ছিলাম, এখানে মেয়র ছিলাম। তারাই তো আমাকে বানিয়েছে। তাদের জন্যই কাজ করছি। এ কারণে নাগরিকদের মতামত প্রধান্য দিয়ে তারা যা বলেন আমি তাই করব।
২০১৩ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনের সময় মনোনয়ন নিয়ে আজমত উল্লাহ খান ও জাহাঙ্গীর আলমের মধ্যে দ্বৈরথ শুরু হয়। ওই নির্বাচনে নির্বাচনে টঙ্গী পৌরসভার তিনবারের মেয়র আজমত উল্লাহ খান বিএনপির আব্দুল মান্নানের কাছে পরাজিত হন। সেবার মনোনয়ন চেয়েও না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তবে ভোটের আগে হঠাৎ তিনি অদৃশ্য হয়ে যান। আজমত উল্লাহ পরাজয়ের কারণ হিসেবে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে বিরোধকেই দেখেছিলেন।
২০১৫ সালে আজমত উল্লাহ খান মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জাহাঙ্গীর আলম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এতে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে পড়েন। আলাদা ও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মহানগরের রাজনীতি।
২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ জাহাঙ্গীরকেই নৌকার কাণ্ডারি হিসেবে বেছে নেয়। তিনি বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকারকে হারিয়ে মেয়র পদে বসেন। ২০২১ সালে জাহাঙ্গীর আলমের একটি বিতর্কিত অডিও ক্লিপ নিয়ে সরব হন আজমত উল্লাহর সমর্থকরা। জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে সরাসরি আন্দোলনে নেমে নানা কর্মসূচি পালন করেন এ ঘটনা আলোচনায় আনেন। পরে জাহাঙ্গীর আলমকে দল ও মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরে ক্ষমা চাওয়ায় জাহাঙ্গীর আলমকে চলতি বছরেই দলে ফিরিয়ে নেয়া হয়।
এদিকে গত বছরের ১৯ নভেম্বর মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আজমত উল্লাহ পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হন। সেই কমিটির কোথাও জাহাঙ্গীর সমর্থকদের জায়গা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এভাবেই দুই ভাগে বিভক্ত গাজীপুর মহানগরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি।
দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, এবার সিটি নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।
দলীয় কোন্দলের বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো দেখবে আমাদের দল। এসব কোনো সমস্যা নয়।
ঠিকানা/এসআর