হরতাল সহিংসতা ও সাইবার ক্রাইম অ্যাক্টসহ বিভিন্ন মামলায় প্রবাসে বহু বিএনপি নেতা-কর্মীর নাম ঢোকানো হচ্ছে এবং এসব মামলায় গ্রেপ্তারের ভয়ে অনেকেই দেশে যেতে আতঙ্কে দেশে যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রবাসী নেতা-কর্মীদের টার্গেট করে বাংলাদেশের বিভিন্ন থানা ও আদালতে গোপনে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এসব মামলায় কোথাও অজ্ঞাতনামা, আবার কোথাও নাম রয়েছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের। নির্বাচনের সময় তাদের হয়রানি করা হতে পারে আশঙ্কা করছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা ঠিকানাকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটে হাজার হাজার নেতা-কর্মী রয়েছেন। তারা বিভিন্ন সময় সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচিতে সক্রিয়। দেশে নেতা-কর্মীদের পুলিশ হয়রানি করলেও প্রবাসের নেতা-কর্মীদের হাতের নাগালে পাচ্ছে না। এ কারণে তাদের তাৎক্ষণিক হয়রানির সুযোগ না পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গোপনে মামলা করা হচ্ছে। নির্বাচনের সময় কেউ দেশে ফেরার চেষ্টা করলে এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
এদিকে নিউইয়র্কে অবস্থানরত তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল আউয়াল ঠিকানাকে জানান, গত ৮ অক্টোবর রোববার তার বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি মামলার রায় দেওয়া হয়েছে। মামলাটিকে হয়রানিমূলক দাবি করে তিনি বলেন, মামলার রায়ে তাকে দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
সাবেক ছাত্রদল নেতা আব্দুল আউয়াল জানান, তিনি ঢাকার গুলশানে সপরিবারে বসবাস করেন। তিনি গ্রিনকার্ডধারী হওয়ায় ছয় মাসে অন্তত একবার যুক্তরাষ্ট্রে আসতে হয়। সে অনুযায়ী তিনি গত মাসের শেষে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার তার দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই মামলার রায় এলো।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে দেশে ফিরলে বিমানবন্দরেই তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। রাজনীতি করতে গিয়ে তিনি এ পর্যন্ত ৭ বার গ্রেপ্তার হয়েছেন। জেল খেটেছেন প্রায় দুই বছর। গ্রেপ্তার ও জেল-জরিমানাকে ভয় পান না উল্লেখ করে আব্দুল আউয়াল বলেন, ভয় পাই গুমের। গ্রেপ্তারের পর যদি তাকে গুম করে দেওয়া হয় তাহলে আর পরিবারের কারো মুখ দেখতে পারবেন না। তিনি বলেন, হরতালের সময় জ্বালাও পোড়াও মামলা দেওয়া হয়েছিল তার নামে। কিন্তু ওই মামলাটি মিথ্যা ছিল বলে জানান তিনি।
সাবেক এই ছাত্রদল নেতা বলেন, দেশে দুঃসহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ অবস্থার দ্রুত অবসান হওয়া দরকার। উল্লেখ্য, ২০১২ সালে বনানী থানার একটি মামলায় তিন নম্বর আসামী করা হয়েছে আব্দুল আউয়ালকে। এই মামলার সব আসামী বিএনপির নেতা-কর্মী।