চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারে এমরান হোসেন (৪০) নামে এক সৌদি প্রবাসীকে গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ৮ অক্টোবর রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হাজীগঞ্জ বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (হাজীগঞ্জ–ফরিদগঞ্জ সার্কেল) অফিসের সামনে একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত এমরান হোসেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৩ নং সুবিদপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের দালালবাড়ির আবুল বাসারের ছেলে। তারা ৩ ভাই ও ৪ বোন।
এ ঘটনায় পুলিশ এমরানের স্ত্রী ফারজানা আকতারকে আটক করেছে। ফারজানা ফরিদগঞ্জ উপজেলার ঝাঁকনী গ্রামের খানবাড়ির মেয়ে। এমরান হোসেনের ৮ বছর বয়সী একটি পুত্রসন্তান রয়েছে।
নিহত এমরান হোসেনের স্বজনরা জানান, এমরান সৌদি প্রবাসী ছিলেন। বিয়ের পর থেকে ১০ বছর ধরে হাজীগঞ্জে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চিৎকার শুনে ওই বিল্ডিংয়ে ছুটে আসা শাহরাস্তি উপজেলার বলশিদ গ্রামের নাহার বলেন, ‘চিৎকার শুনে ওই বিল্ডিংয়ে গিয়ে দেখি ফ্ল্যাটের দরজা খোলা। এমরানের মাথা কোলে নিয়ে স্ত্রী চিৎকার করছে। এমরানের গলা সাদা কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল।’
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী জিসান আহমেদ বলেন, ‘চিৎকার শুনে দৌড়ে এসে দেখি পুরো ফ্ল্যাট রক্তে ভেসে গেছে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় এমরানকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।’
এমরান হোসেনের বাবা আবুল বাসার হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এমরানের স্ত্রী ফারজানার বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগে হাজীগঞ্জ থানায় সম্প্রতি সালিস হয়েছিল। আমার ছেলে গোপনে দেশে এসে হাতেনাতে স্ত্রীর পরকীয়া ধরেছে। এ ঘটনায় ফারজানা আমার সন্তানকে তালাক দেয়। পরে শিশুসন্তানের কথা চিন্তা করে পুনরায় সংসার শুরু করে।’
তিনি বলেন, ‘পরকীয়ার জেরে আমার সন্তানকে স্ত্রীর হাতে জীবন দিতে হলো।’
এমরানের মা হাসপাতালে বারবারই মূর্ছা যাচ্ছিলেন। জ্ঞান ফিরতেই তিনি ফারজানা ও তার প্রেমিকের ফাঁসি দাবি করেন।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রশিদ জানান, এমরানের স্ত্রী ফারজানাকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ঠিকানা/এনআই