প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, আমি চাইবো বিচার বিভাগ ও বিচারালয়কে যেন কোনভাবে রাজনীতিকরণ করা না হয়। এখানে বিচারক ও আইনজীবীদের সম্মিলিত ও মেধাপুষ্ট দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই কেবল সুবিচারের লক্ষ্য অর্জিত হতে পারে এবং তবেই বিচার বিভাগের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকবে। আজ ৮ অক্টোবর (রবিবার) আপিল বিভাগের এক নস্বর এজলাসে দেওয়া সংবর্ধনার জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি কথা একটু অপ্রিয় হলেও বলতে চাই, কোন বিষয়ে ভালোভাবে না জেনে বা যথেচ্ছভাবে বিচারক ও আদালত সম্পর্কে কটু মন্তব্য মোটেই সভ্যতার ইঙ্গিত বহন করে না।সাবেক প্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমানের ভাষায় আমিও উচ্চারণ করতে চাই, কোনো বিচারকই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নন। সভ্য জগতে ভব্য সমালোচনার একটা অবকাশ রয়েছে। বিচারকের রায়ের সমালোচনা করার অধিকার বাকস্বাধীনতার এক অংশ বলে আমি মনে করি। আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ সাপেক্ষে সংবিধানে এই বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান করা হয়েছে। তিনি আরও বলেছিলেন, দেশে যে মুক্ত সাংবাদিকতা বিরাজ করছে তার ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার জন্যে যথেচ্ছা সমালোচনার পরিবর্তে জেনে শুনে ওয়েল ইনফরমড হয়ে সমালোচনার প্রয়োজন। তবে কেউ যদি স্বাধীনতার অপব্যবহার করে- তা সংবাদমাধ্যমই হোক, আইনজীবীই হোক বা যে কেউ হোক তাকে শায়েস্তা করার জন্য আদালতের হাত যথেষ্টই লম্বা।
ওবায়দুল হাসান আরও বলেন, মানবসমাজ ও বিচারপ্রার্থীর কল্যাণে এবং দ্রুত ও দুর্নীতিমুক্ত সুবিচার নিশ্চিতকরণে নিবেদিত হওয়ার মাধ্যমে মানুষের প্রতি, সমাজের প্রতি একজন বিচারক বা আইনজীবীর ভালবাসা মূর্ত হতে পারে। আর এর মাঝেই আমরা পেতে পারি আমাদের কর্মজীবনের সার্থকতা। সংবিধানের প্রতি লক্ষ্য রেখে বিচার প্রশাসনকে রাখতে হবে স্বচ্ছদুর্নীতিমুক্ত, স্বাধীন এবং সোশ্যাল জাস্টিস তত্ত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। একটি দুর্নীতিমুক্ত বিচারব্যবস্থা দেশ ও জাতির জন্য গর্বের। আমার দায়িত্ব পালনকালে আমার সতীর্থ বিচারকবৃন্দ এবং আপনারা আইনজীবীবৃন্দের সুচিন্তিত পথ ধরে একটি দুর্নীতিমুক্ত বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব। আমি আমাদের বিচারব্যবস্থাকে আধুনিক করে গড়ে তুলতে এবং সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য করতে একটি দীর্ঘমেয়াদী জুডিসিয়াল প্ল্যান তৈরি করতে চাই। আমার উত্তরসূরীগণ যেন এই প্ল্যান বা পরিকল্পনা ধরে আগামীতে এগিয়ে যেতে পারেন। অনাগত ভবিষ্যত প্রজন্মের কল্যাণে এরূপ একটি প্ল্যান তৈরির জন্য সহযোগীতা লাগবে আইনজীবীগণের ও আমার সহকর্মীদের, সর্বোপরি রাষ্ট্র পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলের।
দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সংবর্ধনা দেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির। অনুষ্ঠানে আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা যোগ দেন। ছিলেন অসংখ্য আইনজীবী।
ঠিকানা/এসআর
                           
                           
                            
                       
     
  
 


 ঠিকানা অনলাইন
 ঠিকানা অনলাইন  
                                
 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                
